কমনীয় চট্টোপাধ্যায়
কমনীয় চট্টোপাধ্যায় (জন্ম: ১৯৫০) হলেন একজন ভারতীয় উপকরণ প্রকৌশলী এবং বেঙ্গালুরুস্থিত ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থার একজন সম্মানসূচক অধ্যাপক।[১] তিনি আইআইএসসি-এর মেকানিক্যাল সায়েন্সেস ডিভিশনের চেয়ারম্যান[২] এবং মেটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন প্রধান।[৩]
কমনীয় চট্টোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | ৩ মার্চ ১৯৫০
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | |
পরিচিতির কারণ | ডেকাগোনাল ন্যানোকোয়ান্টাম কোয়াসিক্রিস্টাল আবিষ্কারের জন্য |
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | প্যাঁচা রামচন্দ্র রাও |
কমনীয় চট্টোপাধ্যায় ১৯৮৫ সালে এল. বেন্ডারস্কি ও এস. রঙ্গনাথনের সাথে ডেকাগোনাল ন্যানোকোয়ান্টাম কোয়াসিক্রিস্টাল আবিষ্কারের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।[৪][৫] তিনি কোয়াসিক্রিস্টাল ও ন্যানোকম্পোজিটের সংশ্লেষণ ও বৈশিষ্ট্যের উপর গবেষণার জন্যও কৃতিত্ব লাভ করেন, এবং তিনটি প্রধান ভারতীয় বিজ্ঞান গবেষণা সংঘ - ইন্ডিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সেস, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমী এবং ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস, ইন্ডিয়ার একজন নির্বাচিত সভ্য। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তার অসাধারণ অবদানের জন্য বৈজ্ঞানিক নীতি-নির্ধারন ও গবেষণার ক্ষেত্রে ভারত সরকারের শীর্ষ সংস্থা, বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, তাঁকে ১৯৯৫ সালে প্রকৌশল বিজ্ঞানে “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার” প্রদান করে যা ভারতে বিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণা ও অধ্যয়নে সর্বোচ্চ পুরস্কারগুলোর মধ্যে অন্যতম।[৬]
জীবনী
সম্পাদনাকমনীয় চট্টোপাধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ১৯৫০ সালের ৩রা মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৪ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্গাপুরস্থিত রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমান: রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, দুর্গাপুর) থেকে যন্ত্র প্রকৌশলে স্নাতক অধ্যয়ন সম্পন্ন করেন এবং ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (বর্তমান: ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান (বিএইচইউ) বারাণসী) চলে আসেন, এখান থেকে তিনি ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে, তিনি শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার বিজয়ী প্যাঁচা রামচন্দ্র রাওয়ের তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট অধ্যয়নের জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন এবং তার গবেষণা চলাকালীন, তিনি ১৯৭৫ সালে বিএইচইউ-তেই প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পিএইচডি সম্পন্ন করার পর ১৯৭৮ সালে তিনি তার পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন এবং কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ে হুবার্ট অ্যারনসনের গবেষণাগারে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। ১৯৮৩ সালে ভারতে ফিরে এসে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থায় "সহকারী অধ্যাপক" হিসাবে যোগদান করেন, যেখানে তিনি ২০১৫ সালে তার অবসরগ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাকমনীয় চট্টোপাধ্যায় ১৯৭৯ সালে তাঁর কর্মজীবনের প্রথম বড় পুরস্কার পেয়েছিলেন যখন তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি কর্তৃক তরুণ বিজ্ঞানী পদকের জন্য নির্বাচিত হন।[৭] তিনি ১৯৯০ সালে ভারতের পদার্থ গবেষণা সোসাইটির এমআরএসআই পদক পেয়েছিলেন[৮] এবং বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ ১৯৯৫ সালে তাঁকে শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারে ভূষিত করে, যা ভারতীয় বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ পুরস্কারগুলোর মধ্যে একটি।[৯] তিনি ১৯৯৮ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যাটিনাম জুবিলি পুরস্কারে ভূষিত হন[১০] এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের বিজ্ঞান/প্রকৌশলে অসাধারণ গবেষণা কর্ম সম্পাদনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালে প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুরস্কার জেতেন।[১১] এক বছর পর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেটালস তাঁকে ২০০৩ সালের জি.ডি. বিড়লা স্বর্ণ পদকে ভূষিত করে।[১২] ভারত সরকার ২০০৯ সালে তাঁকে আরএন্ডডি ও একাডেমিয়া বিভাগে জাতীয় ধাতুবিদ দিবস পুরস্কার প্রদান করে[১৩] এবং তিনি ২০১১ সালে ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ সোসাইটি অব ইন্ডিয়া (ইএমএসআই) এর আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।[১৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Honorary Professor"। Centre for Nano Science and Engineering (CeNSE), Indian Institute of Science। ২০১৭। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Seashell strength inspires stress tests"। Rice University News & Media। ২০১৭। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Board of Trustees - TRA ERF"। T R Anantharaman Education and Research Foundation। ২০১৭।
- ↑ Richa Malhotra (২৫ মে ২০১২)। "The story of Nobel-winning 'quasicrystals'" (পিডিএফ)। Current Science। 102 (10): 1356–1357।
- ↑ S. Ranganathan, K. Chattopadhyay (১৯৮৯)। "Decagonal quasicrystals"। Phase Transitions। 16 (1–4): 67–83। ডিওআই:10.1080/01411598908245682। বিবকোড:1989PhaTr..16...67R।
- ↑ "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "INSA Young Scientists Medal"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ১১ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "MRSI Medal"। Materials Research Society of India। ২০১৭।
- ↑ "Engineering Sciences"। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৬। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Platinum Jubilee Award" (পিডিএফ)। Banaras Hindu University। ২০১৭।
- ↑ "IISc Alumni Award for Excellence in Research in Science/Engineering"। Indian Institute of Science। ২০১৭।
- ↑ "Face-to-Face" (পিডিএফ)। Indian Institute of Metals। ২০১৭। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "National Metallurgists' Day (NMD) Awards" (পিডিএফ)। Indian Institute of Metals। ২০১৭। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "EMSI Lifetime Achievement Award"। Electron Microscope Society of India। ২০১৭।
অতিরিক্ত পঠন
সম্পাদনা- Nirad Mudur (২৮ জুলাই ২০১৬)। "Inspired by Molluscs to Build Stronger Homes and Aircraft"। Bangalore Mirror।
- "Solar Energy Research Institute for India and the United States (SERIIUS)"। profile। IIT Bhubaneswar। ২০১৭। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- "60th birthday of Prof. Kamanio Chattopadhyay"। Department of Materials Engineering, Indian Institute of Science। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২৪।
- "Equipment grant by Alexander von Humboldt Foundation"। Meeting with Jörn Rohde। German Missions in India। ২০১৭। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- "Re-launching of "Beyond the Walls" - a lecture series by distinguished Alumni members"। NIT Durgapur Alumni Association। ৬ অক্টোবর ২০১৬।
- "Solar Energy Research Institute for India and the United States Kick-Off"। News report। Sandia National Laboratories। ২৭ নভেম্বর ২০১২। ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।