নাসিম ওসমান
এ কে এম নাছিম ওসমান ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য। তার নির্বাচনী এলাকা হলো নারায়ণগঞ্জ-৫।[১]
নাসিম ওসমান | |
---|---|
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৬ – ১৯৯১ | |
কাজের মেয়াদ ২০০৮ – ১৮ এপ্রিল ২০১৪ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ৩১ জুলাই ১৯৫৩ নারায়ণগঞ্জ |
মৃত্যু | ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ভারত |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | পারভীন ওসমান |
সম্পর্ক | সেলিম ওসমান (ভাই) শামীম ওসমান (ভাই) |
পিতামাতা | এ কে এম শামসুজ্জোহা (পিতা), নাগিনা জোহা (মাতা) |
জীবিকা | রাজনীতিবিদ |
জন্ম
সম্পাদনানাসিম ওসমানের জন্ম নারায়ণগঞ্জ জেলায়। ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনানাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। নাসিম ওসমান প্রথমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার বাবা এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহচর। পরবর্তীতে নাসিম ওসমান বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে পড়েন। তিনি ৪ বার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, যথাক্রমে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে।[২][৩]
মুক্তিযুদ্ধে যোগদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাসিম ওসমান পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন।
শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিশোধ
সম্পাদনা১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের সকলের সাথে হত্যা করা হয়। তার আগের দিন ১৪ আগস্ট তিনি পারভীন ওসমানকে বিয়ে করেন। বিয়েতে শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামাল উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে নাসিম ওসমান নবপত্নীকে ফেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চলে যান। তিনি ঢাকায় প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।তিনি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বাহিনীতে যোগ দেন। এরপর তিনি আবার ভারতে চলে যান এবং সেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তৎকালীন কাদের বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।[৪]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনানাসিম ওসমানের বাবা এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য।[৫] তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর আবার ১৯৭৩ সালে তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। নাসিম ওসমানের ছোট ভাই শামীম ওসমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য। তার মেঝো ভাই সেলিম ওসমান তার মৃত্যুর পর সাংসদ নির্বাচিত হন।[৬] নাসিম ওসমানের স্ত্রীর নাম পারভিন ওসমান। এই দম্পতির এক ছেলে আজমির ওসমান ও দুই কন্যা আছে।
মৃত্যু
সম্পাদনা২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য নাসিম ওসমানকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লিতে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি দেরাদুন যান। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থানকালে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি ৩০ এপ্রিল, ২০১৪ সালে মারা যান।[৭]
স্বীকৃতি
সম্পাদনা- নাসিম ওসমানের নামে নারায়ণগঞ্জে একটি শিশু পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। মেরি-গোরাউন্ড, ওয়াটার বোট, জেট কোস্টার, মিনি গেইন্ট হুইল, মিনি শান্তা মারিয়া, ফ্লাওয়ার কাপ, বাম্বার কার ইত্যাদি রাইটগুলো পাওয়া যায় এখানে।[৮]
- তার সম্মানে শীতলক্ষ্যা নদীতে নির্মিত তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নামকরণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমান ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "এমপি নাসিম ওসমান আর নেই"। সমকাল। ২০১৮-০১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- ↑ "সাংসদ নাসিম ওসমান মারা গেছেন"। দৈনিক প্রথম আলো। ১ মে ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "সাংসদ নাসিম ওসমান আর নেই"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- ↑ "নারায়ণগঞ্জের সেই নাসিম ওসমান"। ২০১৮-০২-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- ↑ "ওসমান পরিবারের উত্থান, পতন"। ডেইলি স্টার। ২০১৮-০১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- ↑ "শপথ নিলেন সেলিম ওসমান"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৮ জুলাই ২০১৮। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "নাসিম ওসমান মারা গেছেন"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৩০ এপ্রিল ২০১৪। ৮ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "হয়ে গেলো নাসিম ওসমান পার্কের জমকালো শুভ উদ্বোধন"। ২০১৮-০১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- ↑ নাসিম ওসমান তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর উদ্বোধন, যুগান্তর, ১০ অক্টোবর ২০২২