এস্রাজ

একটি তার যন্ত্র

এস্রাজ (বিকল্প উচ্চারণঃ ইস্রাজ ; হিন্দী: इसराज) হচ্ছে একটি তার যন্ত্র। এই যন্ত্রটি মূলতঃ ভারতীয় উপমহাদেশেই ব্যবহৃত হয়। এর উৎপত্তিও খুব বেশি দিন আগে নয়। আনুমানিক ২-৩ শত বৎসর আগে, হাজার বছর ধরে প্রচলিত সারেঙ্গীর সরলরূপ হিসাবে যন্ত্রটি আবিষ্কৃত হয়।[] বলা হয় এস্রাজ সেতারসারেঙ্গীর সমন্বিত রূপ।[] এস্রাজের ব্যবহার দেখা যায় মূলতঃ পূর্ব ও মধ্য ভারতে এবং বাংলাদেশে । এটি তারের ওপর ছড় টেনে বাজাতে হয়। মূলতঃ সঙ্গতকারী যন্ত্র হিসেবেই এস্রাজ ব্যবহৃত হলেও এটিতে পূর্ণ গানের সুর তোলা সম্ভব। রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে এস্রাজের সঙ্গত শ্রুতিমধুরতা সৃষ্টি করে।[]

একজন বালক এস্রাজ বাজাচ্ছেন।

তারসেহনাজ

সম্পাদনা

এস্রাজের আরেকটি রূপ হলো তারসেহনাজ

দিলরুবা

সম্পাদনা
 

এস্রাজের সমরূপ আরেকটি বাদ্যযন্ত্র রয়েছে যা দিলরুবা নামে পরিচিত। এটি ভারতের উত্তরাংশে সচরাচর ব্যবহৃত হয়। ধর্মীয় সঙ্গীত ও হালকা রাগপ্রধান সঙ্গীতে দিলরূবা ব্যবহৃত হয়। নির্মিতির দিক থেকে ঐক্য থাকলেও দিলরুবার বাদন পদ্ধতি ভিন্ন।

এস্রাজ এবং দিলরুবা উভয়েরই কাঠামো ও গঠন শৈলী প্রায় অভিন্ন।[] মাঝারি আকৃতির সেতারের মতে ডান্ডির উপর ২০টি ধাতব ঘাট বেঁধে দেয়া হয়। এগুলোর উপর ১২ থেকে ১৫টি সহমর্মী সুরের বা তরঙ্গের তার বাঁধা হয়। দিলরুবায় অবশ্য এরচেয়ে বেশি সংখ্যক তার ব্যবহৃত হয় (১৯), এ কারণে দিলরুবার পাটাতনটি একটু চওড়া হয়ে থাকে। দু'টো যন্ত্রেই প্রধান তার চারটি। এগুলো বেহালার মতো ছড়ের সাহায্যে বাজানো হয়। নিচের অংশ সেতারের লাউয়ের তুম্বার পরিবর্তে কাঠের ছোট তুম্বাকৃতির খোলের উপর তবলার উপরিভাগের মতো ছাগলের চামড়ার ছাউনি দিয়ে টান টান করে বাঁধা হয়। উল্লেখযোগ্য যে সারেঙ্গীতে ব্যবহৃত হতো প্রাণীজ তার, অন্যপক্ষে এস্রাজ ও দিলরুবায় ধাতব তার ব্যবহার হয়।

বাদক জোড় আসনে বসে বাজিয়ে থাকেন। বাম কাধেঁ যন্ত্রের গ্রীবাটির ভর রেখে ভূমিতে এস্রাজ স্থাপন করা হয়। এরপর ডান হাতে ছড় টানা হয় এবং বাম হাতে তারের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করা হয়।

বিখ্যাত বাদক

সম্পাদনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমন্ত্রণে বিষ্ণুপুরের অশেষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনে এস্রাজের শিক্ষকতা করেছিলেন। তার শিষ্য রণধীর রায় এস্রাজবাদক হিসাবে বিশেষ সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. এস্রাজের ইতিহাস
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০০৯ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০০৯ 
  4. "ভারতীয় এস্রাজ"। ৯ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০০৯ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা