এশিয়া-মহাদেশীয় সিংহ পুনঃপ্রবর্তন প্রকল্প

সিংহ সংরক্ষণ হল ক্রমান্বয়ে সিংহের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণে যে ব্যবস্থার মাধ্যমে সিংহের বাসস্থানের নিরাপত্তা ও প্রজননের মাধ্যমে সিংহের সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রকল্প।

গির অরণ্যের সিংহ সংরক্ষণ চিহ্নিত স্থান

ইতিহাস সম্পাদনা

 
ঐতিহাসিক এবং প্রস্তাবিত সিংহ সংরক্ষণ এলাকা, ভারত

সিংহ হল সৌন্দর্য ও বীরত্বের প্রতীক। প্রাচীনকালে সিংহ সংরক্ষণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ভারত অবধি বিন্যস্ত থাকলেও বর্তমানে তা কেবল পশ্চিম গুজরাতের গির অরণ্যে সীমাবদ্ধ। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ এশিয়ার সিংহের সংখ্যা কমে ৫০-এর কাছে নেমে আসে। 'Asiatic Lion Reintroduction Project'-এর মাধ্যমে এশিয়ার সিংহকে বাঁচানোর জন্য ভারত সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।[১]

সিংহ হ্রাসের কারণ সম্পাদনা

প্রতিনিয়ত সিংহের সংখ্যা হ্রাসের কারণগুলি হল:

  • বাসস্থানের বিনাশ: মানব জনসংখ্যার চাপে বনভূমি গড়ে তোলায় সিংহের স্বাভাবিক বাসস্থান নষ্ট হয়েছে। গির অরণ্যের মধ্যে দিয়ে প্রধান সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে দুর্ঘটনায় বহু সিংহ মারা।
  • চোরাশিকার: সিংহের হাড় ভেষজ ঔষধরূপে ব্যবহৃত হয় এবং নখ ও চামড়ার লোভে অসাধু ব্যবসায়ী, চোরাশিকারিরা সিংহ হত্যা করে অর্থ উপার্জন করে।[১]

সংরক্ষণের প্রচেষ্টা সম্পাদনা

জুনাগড়ের রাজা

1890 খ্রিষ্টাব্দে প্রথম সিংহ সংরক্ষণের প্রচেষ্টা করেন। তিনি সিংহ হত্যা নিষিদ্ধ করেন। এই নিষেধ ভারত স্বাধীনের পরেও বজায় থাকে। ১৯৬০ এবং ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে গির অরণ্যকে যথাক্রমে অভয়ারণ্যজাতীয় উদ্যানরূপে ঘোষণা করা হয়। এখানে গুজরাত সরকারের তত্বাবধানে গির লায়ন প্রজেক্ট চালু হয়। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সিংহের পপুলেশন বাড়তে থাকে। বর্তমানে গির অরণ্যে এশিয়ান সিংহের সংখ্যা ৫২৩ (২০১৫, সিংহ গণনা অনুযায়ী)। বর্তমানে ভারত সরকারের পরিবেশমন্ত্রক প্রজেক্ট টাইগার-এর মতো প্রজেক্ট লায়ন নামক প্রকল্প তৈরি করেছে।[১]

উদ্দেশ্য সম্পাদনা

সিংহ সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল:

  • নতুন আইন প্রণয়নের ও প্রয়োগের দ্বারা সিংহ হত্যা নিষিদ্ধ করা।
  • কোনো সংরক্ষিত অরণ্যে সীমিত সীমানার মধ্যে রেখে খাদ্য, পানীয় ও প্রজননের উপযুক্ত ব্যবস্থার দ্বারা সিংহের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ জনিত কারণে ও কোনো এপিডেমিক রোগের কারণে সিংহের সংখ্যা হ্রাস পেলে পুনরায় সেই সংখ্যা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. জীবনবিজ্ঞান ও পরিবেশ। ছায়া প্রকাশনী, ১ বিধান সরণি, কলকাতা- ৭০০০৭৩। জানুয়ারি, ২০১৬। পৃষ্ঠা ১৩৬।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)