এলি বাতাসি

কীটপতঙ্গের প্রজাতি

এলি বাতাসি[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Neptis vikasi (Horsfield)) 'নিমফ্যালিডি'(Nymphalidae) গোত্র ও 'লিমেনিটিডিনি' (Limenitidinae) উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি।[২]

এলি বাতাসি
False Dingy Sailer/Dingy Sailer
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: সন্ধিপদী
শ্রেণী: পতঙ্গ
বর্গ: লেপিডোপ্টেরা
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Neptis
প্রজাতি: N. vikasi
দ্বিপদী নাম
Neptis vikasi
Horsfield, [1829]

আকার সম্পাদনা

এলি বাতাসি এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৬০-৭০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১][৩][৪]

বিস্তার সম্পাদনা

ভারত (উত্তরাঞ্চল, কুমায়ুন থেকে পূর্ব হিমালয়, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম থেকে অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারত) নেপাল, ভুটান, মায়ানমার ও উত্তর ইন্দো-চীন এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়।[৫]

বর্ণনা সম্পাদনা

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিশদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

এই প্রজাতি ফিক বাতাসি (Neptis harita) প্রজাতির সাথে সদৃশ যুক্ত।

ডানার উপরিতল কালচে ঘোলাটে বাদামি (dark smoky brown) ও সরু ময়লাটে সাদা অস্পষ্ট দাগ-ছোপ যুক্ত। সামনের ডানায় সেল-এর দাগটি লম্বা, দুইপ্রান্তে সরু ও মধ্যভাগে স্ফীত এবং দাগটির বহিঃপ্রান্তের সামান্য আগে উপরদিকে অস্পষ্ট একটি খাঁজ চোখে পড়ে। ডিসকাল ছোপগুলি কোস্টার নিচ থেকে শুরু হয়ে বক্রভাবে ডরসাম অবধি নেমে গেছে যাদের মধ্যে ৩ নং শিরামধ্যের ছোপটি কম-বেশি চতুষ্কৌণিক ও ৪ নং এর ছোপটি ভীষণ অস্পষ্ট। উক্ত ডিসকাল ছোপগুলির বহিঃপ্রান্ত লাগোয়া অস্পষ্ট একটি আঁকাবাঁকা বক্র পোস্ট-ডিসকাল রেখা বর্তমান। সাব-টার্মিনাল অস্পষ্ট সরু রেখাটি কালো শিরায় বহু-খন্ডিত ও কোস্টা থেকে টরনাস পর্যন্ত বিন্যস্ত। ডানার শীর্ষভাগে সিলিয়া (cillai) সুস্পষ্টভাবে সাদা; বাকি অংশে সিলিয়া কালচে, তবে মাঝেমধ্যে খুব ছোট ছোট অংশে অস্পষ্টভাবে সাদা।

পিছনের ডানায় সাব-বেসাল ও পোস্ট-ডিসকাল অংশে দুটি প্রায় সমান্তরাল লম্বা বন্ধনী বর্তমান এবং উভয়েই কালো শিরা দ্বারা খণ্ডিত। সাব-বেসাল বন্ধনীটি অপেক্ষাকৃত চওড়া সাব-টার্মিনাল রেখাটি সামনের ডানার অনুরূপ। সিলিয়া কালচে, তবে মাঝেমধ্যে খুব ছোট ছোট অংশে অস্পষ্টভাবে সাদা।

ডানার নিম্নতলের বর্ণ ও দাগ-ছোপ উপরিতলের অনুরূপ, তবে দাগ-ছোপগুলি অধিকতর সাদা ও স্পষ্টভাই বিন্যস্ত।

শুঙ্গ উপরিতলে কালো ও নিম্নতলে ফ্যাকাশে সাদা ও শীর্ষে হলদে বিন্দু। মাথা, বক্ষদেশ ও উদর উভয়তলেই কালচে বাদামি। বক্ষদেশ শুরুতে হালকা সবজে।[২][৪][৬]

আচরণ সম্পাদনা

এই প্রজাতি সুলভ দর্শন নয় (uncommon) এবং পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ইত্যাদি কিছু কিছু জায়গায় দুর্লভ। স্বভাব অন্যান্য সেইলারদের মতন, তবে ওড়ার ভঙ্গিমা সামান্য তেজি ও আক্রমনাত্মক (little aggression)। এরা ডানা অনুভূমিক রেখে বাতাসে ভেসে ওড়ে (glide) ও মাঝেমাঝে ডানা ঝাপটায়।পাতায় ডানা মেলা ও বন্ধ অবস্থায় বসে রসপান ও রোদ পোহানো এদের প্রিয় অভ্যাস এবং ভিজে মাটিতে বা পাথরের ভিজে ছোপে বসেও খ্যাদরস আহরণ করে ও রোদ পোহায়। এই প্রজাতি ফুলে অবস্থান করে মধুপান করে। অন্যান্য নিচু উচ্চতা থেকে ৩৫০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত জঙ্গলে পথের ধরে নদী-ঝর্ণার কিনারা, নদীখাত এদের পছন্দের বাসভূমি। অন্যান্য সেইলারদের তুলনায় এই প্রজাতিকে একটু বেশি খোলা-মেলা জায়গায় পাওয়া যায়।[৩][৪][৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ২৩৬। 
  2. Wynter-Blyth, M.A. (1957) Butterflies of the Indian Region, pg ১৯৪.
  3. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ১০২। 
  4. Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 420। আইএসবিএন 9789384678012 
  5. "Neptis Fabricius, 1807" at Markku Savela's Lepidoptera and Some Other Life Forms
  6. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৪৪৮। আইএসবিএন 978 019569620 2