উৎকল ব্রাহ্মণ হল একটি ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় যারা ভারতের ওড়িশা রাজ্যের অন্তর্গত। উৎকল ব্রাহ্মণরা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ঐতিহাসিক তত্ত্বাবধায়ক। উৎকল ব্রাহ্মণ হল পঞ্চগৌড় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি যারা মূলত বিন্ধ্যের উত্তরে বসবাস করত।[১] তারা ওড়িশার জনসংখ্যার প্রায় ৭% গঠন করে।[২]আগেকার দিনে মেদিনীপুরের পশ্চিম অংশ, বাঁকুড়ার দক্ষিণ অংশ উড়িষ্যার অন্তর্গত ছিল। এইসব এলাকায় উৎকল ব্রাহ্মণ জনগোষ্ঠীর বসবাস দেখা যায়।

পঞ্চগৌড় ব্রাহ্মণ
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
ওড়িশাপশ্চিমবঙ্গছত্তিশগড়ঝাড়খণ্ডঅন্ধ্রপ্রদেশ
ভাষা
ওড়িয়া
ধর্ম
হিন্দুধর্ম
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
সারস্বত ব্রাহ্মণগৌড় ব্রাহ্মণমৈথিল ব্রাহ্মণকান্যকুব্জ ব্রাহ্মণ

ইতিহাস সম্পাদনা

 
১৯২৮ সালে উড়িষ্যার পুরীতে একজন উৎকল ব্রাহ্মণ পুরোহিতের ঐতিহ্যবাহী পোশাক

প্রাচীন যুগে উৎকল ছিল বৌদ্ধজৈন ধর্মের কেন্দ্র। শৈলোদ্ভব রাজবংশ শৈবধর্মের অনুসারী ছিল যারা ৬ শতক থেকে ৮ শতক পর্যন্ত এই অঞ্চল শাসন করেছিল। তারা ৭ম শতাব্দীতে পরশুরামেশ্বর মন্দির তৈরি করেছিলেন যা ভুবনেশ্বরের প্রাচীনতম মন্দির। শৈলোদ্ভব রাজা দ্বিতীয় মাধবরাজা তার শিলালিপিতে বলেছেন যে তিনি গুপ্ত সাম্রাজ্য থেকে তার স্বাধীনতার জন্য অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন যা ৭ম শতাব্দীতে ওড়িশায় ব্রাহ্মণের উপস্থিতি নির্দেশ করে।[৩] কেশরী রাজবংশ ৯ম থেকে ১২শ শতাব্দী পর্যন্ত মধ্যযুগীয় সময়ে শাসন করেছিল যারা ভুবনেশ্বরে লিঙ্গরাজ মন্দির, মুক্তেশ্বর মন্দির এবং রাজারাণী মন্দির নির্মাণ করেছিল। তারা ওড়িশায় স্থাপত্যের নতুন শৈলী প্রবর্তন করে এবং তাদের শাসন বৌদ্ধধর্ম থেকে হিন্দুধর্মে পরিবর্তিত হয়।[৪] কিংবদন্তি অনুসারে যতী কেশরী ১০ শতকে অশ্বমেধ অনুষ্ঠানের জন্য কনৌজ থেকে ১০,০০০ ব্রাহ্মণকে তার রাজ্যে নিয়ে এসেছিলেন।[৫] ১১৫১-১১৫২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নেউলপুর অনুদানে (আনুমানিক ৭৯৫ খ্রিস্টাব্দ) ভৌম-কর রাজবংশের শুভকরদেব দ্বারা ২০০ জন ব্রাহ্মণ এবং পুরীর কাছে আরও ৬০০০ ব্রাহ্মণ বসতি স্থাপনের রেকর্ড রয়েছে।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Lochtefeld, James G. (২০০২)। The Illustrated Encyclopedia of Hinduism: N-Z। Rosen। পৃষ্ঠা 725। আইএসবিএন 9780823931804 
  2. Nava Kishor Das (২০১২)। Odisha। Anthropological Survey of India by Seagull Books। আইএসবিএন 978-81-7046-293-4 
  3. Snigdha Tripathy 1997, পৃ. 67।
  4. Walter Smith 1994, পৃ. 26।
  5. Walter Smith 1994, পৃ. 27।
  6. Witzel 1993, পৃ. 267।