উশাইরা অভিযান
উশাইরা অভিযান বা গাজওয়ায়ে উশাইরা[১] ২ হিজরির জামাদিউল আওয়াল ও জামাদিউল আখির মাসের (নভেম্বর-ডিসেম্বর ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দ) মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত হয়।
বর্ণনা
সম্পাদনাআবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে একটি কুরাইশ বাণিজ্য কাফেলা সিরিয়ার দিকে যাচ্ছে - গোয়েন্দা মারফত এই খবর পাওয়ার পর মুহাম্মাদ প্রায় ১৫০ বা ২০০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে তাদের পথরোধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।[২] অভিযানকালে তিনি আবু সালামা ইবনে আবদুল আসাদ মাখজুমিকে মদিনার দায়িত্ব দিয়ে যান। বাহিনীর সাদা পতাকার বাহক ছিলেন হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব। এই বাহিনীতে উট ছিল ৩০টি ফলে সদস্যদেরকে পালাক্রমে উটে আরোহণ করতে হয়েছিল।[২]
মুসলিমরা বনু দিনারের গিরিপথ দিয়ে অগ্রসর হয়ে হাবারের মরুভূমির মধ্য দিয়ে যাত্রা করে ইবনে আজহার উপত্যকায় পৌছে। সেখানে একটি গাছের নিচে মুহাম্মাদ বিশ্রাম নেন। এই স্থানে তার নামাজ পড়ার স্থানে পরবর্তীতে মসজিদ নির্মিত হয়। তিনি এখানকার মুশতারাব নামক ঝর্ণার পানি পান করেছিলেন।[৩]
এরপর মুসলিমরা বামে খালায়েক নামক স্থানকে রেখে আবদুল্লাহ গিরিপথ দিয়ে যাত্রা করে। এরপর বামের পথ দিয়ে ইয়ালইয়ালের সমভূমিতে পৌছার পর ইয়ালইয়াল ও দাবুরের সংযোগস্থলে যাত্রাবিরতি করে। এখানকার কূয়া থেকে পানি পান করা হয়। এরপর বাহিনীটি ফারশ মিলালের সমভূমির মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। এরপর মুসলিমরা ইয়ামামার ছোট পার্বত্য অঞ্চল পেরিয়ে ইয়ানবুর সমভূমির মধ্য দিয়ে উশাইরা পৌছে।[৩][৪] তারা সেখানে হামালার পরিকল্পনা করে।[৫]
মুসলিমরা যুল উশাইরা পর্যন্ত অগ্রসর হয়। কিন্তু কুরাইশ কাফেলাটি কয়েকদিন পূর্বে উক্ত স্থান অতিক্রম করে চলে যায়। মুসলিমরা এখানে জামাদিউল আওয়াল ও জামাদিউল আখিরের কয়েকদিন অবস্থান করে। পরবর্তীতে কুরাইশ কাফেলাটি সিরিয়া থেকে ফিরে আসার সময় মুসলিমরা পুনরায় অবরোধের জন্য অগ্রসর হয় এবং ঘটনা পরিক্রমায় বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।[১][৩]
এই অভিযানের সময় মুহাম্মাদ এর সাথে বনু মাদলাজ গোত্রের মিত্রতা স্থাপিত হয়। এরপর মুসলিমরা মদিনায় ফিরে আসে।[১][৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ আর-রাহীকুল মাখতুম, গাজওয়ায়ে যুল উশাইরা অনুচ্ছেদ
- ↑ ক খ মোবারকপরী, সফিউর রহমান (২০০২)। গাজওয়ায়ে যুল উশাইরা অনুচ্ছেদ। আর-রাহীকুল মাখতুম (মার্জিত সংস্করণ)। রিয়াদ, সৌদি আরব। আইএসবিএন 9960-899-55-1। ওসিএলসি 223400876।
- ↑ ক খ গ ঘ সিরাত ইবনে হিশাম, উশাইরা অভিযান
- ↑ Ibn Hishām, ʻAbd al-Malik, -834. (১৯৬৭)। The life of Muhammad। Guillaume, Alfred, 1888-1965., Ibn Isḥāq, Muḥammad, -approximately 768.। Karachi: Pakistan Branch, Oxford University Press। পৃষ্ঠা ২৭৩। আইএসবিএন 0-19-636033-1। ওসিএলসি 2406302।
- ↑ Gabriel, Richard A. (২০০৭)। Muhammad : Islam's first great general। Norman, Okla.: University of Oklahoma Press। আইএসবিএন 978-0-8061-8250-6। ওসিএলসি 435767557।