উমায়ের ইবনে সাদ আল আনসারি

উমায়ের ইবনে সাদ আল-আনসারি ছিলেন মুহাম্মদের একজন সহচর।

শৈশব সম্পাদনা

উমায়ের যখন ছোট ছিলেন তখন তাঁর বাবা তাকে এবং তাঁর মাকে দরিদ্র ও নিঃস্ব করে মারা যান।[১] শেষ পর্যন্ত তার মা মদিনার অন্যতম ধনী ব্যক্তি জুলাস ইবনে সোয়াদের সাথে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

ইসলাম গ্রহণ সম্পাদনা

জুলাস ছিলো স্বনামখ্যাত আল-ওউস জাতির সন্তান।[১] মাত্র দশ বছর বয়সে উমায়ের নবী মুহাম্মাদের কাছে ইসলাম গ্রহণ করে একজন মুসলমান হয়েছিলেন এবং অল্প বয়সেই মসজিদে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।

অবদান সম্পাদনা

৬৩০ সালে বাইজেন্টাইন বাহিনীর বিরুদ্ধে তাবুক অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মুহাম্মদ তাকে নেতা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি মুসলমানদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।[২]

সেনাবাহিনী রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে উমায়ের মসজিদে নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরে আসেন। তিনি তার সৎপিতা জুলাসের অভিযানের জন্য প্রস্তুতি এবং মনোবলের ক্ষেত্রে অনিচ্ছা দেখতে পেলেন। উমায়ের মসজিদে গিয়ে যা দেখেছিলেন তা বর্ণনা করেছিলেন - "যুবকরা যারা সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে এসেছিলো এবং পরিবহণের অপ্রতুলতার কারণে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।" জুলাস তাদের বলছিলেন "মুহাম্মদ যদি নিজেকে নবী বলে দাবী করা সত্য হয় তবে আমরা সবাই গাধার চেয়েও খারাপ। "জুলাসের প্রতিক্রিয়ায় উমায়ের হতবাক।

উমায়ের যা শুনেছিলেন তা বিশ্বাস করতে পারেননি। তাকে জুলাসের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করার এবং তার বিশ্বাসঘাতকতা ও ভণ্ডামি মোকাবেলার মধ্যে বেছে নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। পছন্দটি বেদনাদায়ক ছিল, তবে তিনি মসজিদে গিয়ে মুহাম্মদকে তার সৎ বাবার কাছ থেকে যা শুনেছিলেন তা জানিয়েছিলেন। মুহাম্মদ তখন জুলাসকে ডেকে পাঠালেন যিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছিলেন যে তাঁর সৎসন্তান মিথ্যা বলেছেন।

উমায়ের তখন দোয়া করলেন:[১][৩]

"হে প্রভু, আমি আপনাকে যা বলেছি তা যাচাই করার জন্য আপনার নবীকে একটি ওহী প্রেরণ করুন।"

সাহাবায়ে কেরাম উমাইরের কাছ থেকে ফিরে যাওয়ার সাথে সাথে তারা দেখতে পেল যে মুহাম্মদ সাড়াপ্রাপ্ত হয়েছেন। ওহী পেয়ে তিনি তেলাওয়াত করেছেন:

يَحْلِفُونَ بِاللّهِ مَا قَالُواْ وَلَقَدْ قَالُواْ كَلِمَةَ الْكُفْرِ وَكَفَرُواْ بَعْدَ إِسْلاَمِهِمْ وَهَمُّواْ بِمَا لَمْ يَنَالُواْ وَمَا نَقَمُواْ إِلاَّ أَنْ أَغْنَاهُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ مِن فَضْلِهِ فَإِن يَتُوبُواْ يَكُ خَيْرًا لَّهُمْ وَإِن يَتَوَلَّوْا يُعَذِّبْهُمُ اللّهُ عَذَابًا أَلِيمًا فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمَا لَهُمْ فِي الأَرْضِ مِن وَلِيٍّ وَلاَ نَصِيرٍ

জুলাস মুহাম্মদের দিকে ফিরে বললেন, "আমার ভুল হয়ে গেছে। উমাইর সত্য বলেছে, আমিই মিথ্যা বলেছি। আমি অনুতাপ স্বীকার করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি..."

জুলাস তাওবা করেছিলেন এবং এরপরে বিশ্বস্ত মুসলমান হিসেবেই বেঁচে ছিলেন। যখনই উমায়েরের কথা বলা হত, জুলাস বলতেন:

"আমার আল্লাহ উমাইরকে আমার পক্ষ থেকে সদুপদেশ দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্যই আমাকে কুফর থেকে রক্ষা করেছেন এবং আমার ঘাড়কে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করেছেন।"

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Umayr ibn Sad Al-Ansari"www.sunnah.org। ২০২০-০২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৩ 
  2. "`Umayr Ibn Sa`d Al-Ansârî - islamophile.org - L'islam en français"www.islamophile.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৩ 
  3. "Umayr ibn Sad al-Ansari - Umayr ibn Sad al-Ansari - qwe.wiki"nl.qwe.wiki। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৩