মংগন জেলা
মংগন জেলা (পূর্বনাম: উত্তর সিকিম জেলা) হল ভারতের সিকিম রাজ্যের একটি জেলা। এই জেলার সদর শহর হল মংগন। ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে এটি সপ্তম সবচেয়ে কম জনবহুল জেলা।[১]
মংগন | |
---|---|
জেলা | |
সিকিমের মানচিত্রে মংগন জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৭°৩১′ উত্তর ৮৮°৩২′ পূর্ব / ২৭.৫১৭° উত্তর ৮৮.৫৩৩° পূর্ব | |
রাজ্য | সিকিম |
দেশ | ভারত |
আসন | মংগন |
আয়তন | |
• মোট | ৪,২২৬ বর্গকিমি (১,৬৩২ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৬১০ মিটার (২,০০০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪৩,৩৫৪ |
• জনঘনত্ব | ১০/বর্গকিমি (২৭/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-SK-NS |
ওয়েবসাইট | http://nsikkim.gov.in |
ভূগোল
সম্পাদনাউত্তর সিক্কিম জেলা সিকিমের চারটি জেলার মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড়ো। এই জেলা পর্বতবহুল। এখানে আল্পীয় ও উত্তর তুন্দ্রা উদ্ভিজ্জ দেখা যায়। এই জেলায় অনেক জলপ্রপাতও দেখা যায়। খাড়া উপত্যকায় ধস নামার প্রবণতা দেখা যায়। পর্বতের চূড়ায় বরফ গলা এবং বৃষ্টিপাতের জন্য ধস বেশি নামে।
জেলার বেশিরভাগ মানুষ মংগনের কাছে থাকেন। মংগন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২,০০০ ফুট (৬১০ মি) উচ্চতায় অবস্থিত। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৫° থেকে সর্বনিম্ন -৪০°-এর মধ্যে ওঠানামা করে। এই জেলায় নেপালের সীমান্তের কাছাকাছি কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটি অবস্থিত। কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যানের অংশবিশেষ এই জেলায় অবস্থিত।
অর্থনীতি
সম্পাদনামংগনকে বিশ্বের কার্ডামোম রাজধানী বলা হয়। এই অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার কার্ডামোম চাষ করা হয়।
এই অঞ্চলে কয়েকটি বিদ্যুৎ প্রকল্প থাকায় জেলাবাসীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করেন। এখানকার অধিবাসীরা মূলত জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকেন।
২০০৬ সালে পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক উত্তর সিক্কিমকে ভারতের ২৫০টি সবচেয়ে অনগ্রসর জেলার একটি হিসেবে ঘোষণা করে।[২] সিক্কিমের এই একটি জেলায় অনগ্রসর অঞ্চল অনুদান তহবিল কর্মসূচির অধীনে অনুদান পেয়ে থাকে।[২]
পর্যটন
সম্পাদনাউত্তর সিকিমের অধিকাংশ অঞ্চলে পর্যটকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত। এই সব অঞ্চল দেখতে হলে পর্যটকদের বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। এই জেলায় যে অংশটি গণচীনের সীমান্তবর্তী, সেই অঞ্চলটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী সবসময় প্রহরী রাখে। যদিও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য অনেক পর্যটকই এখানে আসেন। আবার অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন জেলার কোনো কোনো অংশের জৈবব্যবস্থা সংরক্ষণে বাধাও হয়ে দাঁড়াচ্ছে।[৩]
প্রশাসনিক বিভাগ
সম্পাদনামংগন জেলা দুটি মহকুমায় বিভক্ত:[৪]
নাম | সদর | গ্রামের সংখ্যা[৫] | অবস্থান |
---|---|---|---|
চুংথাং | চুংথাং | ৯ | |
মংগন | মংগন | ৪৬ |
জনপরিসংখ্যান
সম্পাদনা২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, মংগন জেলার জনসংখ্যা ৪৩,৩৫৪।[১] এই জনসংখ্যা লিচেনস্টেইনের প্রায় সমান।[৬] জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে ৬৩৪তম স্থানের অধিকারী।[১] জেলার জনঘনত্ব ১০ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২৬ জন/বর্গমাইল) ।[১] ২০০১-২০১১ সালের দশকীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৫.৬৬%।[১] উত্তর সিক্কিমের লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৭৬৯ জন নারী।[১] জেলার সাক্ষরতার হার ৭৭.৩৯%।
এই জেলার অধিবাসীরা মূলত নেপালি বংশোদ্ভুত। লেপচা ও ভুটিয়ারা এখানকার আঞ্চলিক জাতিগোষ্ঠী। নেপালি ভাষা জেলার প্রধান ভাষা।
পরিবহন
সম্পাদনাঘন ঘন ধস নামে বলে এই জেলার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব ভাল নয়।
উদ্ভিদ ও প্রাণী
সম্পাদনামংগন জেলায় লুপ্তপ্রায় প্রজাতির রেড পান্ডা দেখা যায়।[৭] এই প্রাণীটিই সিক্কিমের রাষ্ট্রীয় পশু। ২০০০ থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায় এই প্রাণী দেখা যায়। এগুলির উচ্চতা হয় প্রায় ২ ফুটের মতো।
১৯৭৭ সালে মংগন জেলায় কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান গঠিত হয়। এই জাতীয় উদ্যানের আয়তন ১,৭৮৪ কিমি২ (৬৮৮.৮ মা২)।[৮] এই জাতীয় উদ্যানের একটি অংশ পশ্চিম সিক্কিম জেলায় অবস্থিত। এছাড়া ১৯৮৪ সালে গঠিত শিংবা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যও এই জেলায় অবস্থিত। এই অভয়ারণ্যের আয়তন ৪৩ কিমি২ (১৬.৬ মা২).[৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- ↑ ক খ Ministry of Panchayati Raj (সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯)। "A Note on the Backward Regions Grant Fund Programme" (পিডিএফ)। National Institute of Rural Development। ৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১১।
- ↑ Choudhury, A.U. (2011). Tourism pressure on high elevation IBAs. Mistnet 12(1): 11-12.
- ↑ Sikkim Administrative Divisions (PDF) (মানচিত্র) (English ভাষায়)। The Registrar General & Census Commissioner, India, New Delhi, Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২৯।
- ↑ "MDDS e-Governance Code (Sikkim Rural)" (PDF)। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-১৫।
- ↑ US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২০১৯-০১-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১।
212 Liechtenstein 35,236 July 2011 est.
- ↑ Choudhury, A.U. (2001). An overview of the status and conservation of the red panda Ailurus fulgens in India, with reference to its global status. Oryx 35(3):250-259
- ↑ ক খ Indian Ministry of Forests and Environment। "Protected areas: Sikkim"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- উইকিভ্রমণ থেকে মংগন জেলা ভ্রমণ নির্দেশিকা পড়ুন।