গঙসা উগয়েন ওয়াংচুক (জংখা: ཨོ་རྒྱན་དབང་ཕྱུག, ওয়াইলি: o rgyan dbang phyug, ১৮৬২-১৯৩৬) ভূটানের প্রথম ড্রূক গ্যালাপ (রাজা) ছিলেন। তিনি ভূটানকে ১৯০৭ থেকে ১৯২৬ পর্যন্ত শাসন করেন। তার জীবদ্দশায় তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে চেষ্টা করেন।

উগয়েন ওয়াংচুক
প্রথম ড্রুক গ্যালাপ
রাজত্ব১৭ ডিসেম্বর ১৯০৭ – ২৬ অগাস্ট ১৯২৬
রাজ্যাভিষেক১৭ ডিসেম্বর ১৯০৭ [১]
পূর্বসূরিনেই (বংশগত রাজতন্ত্র তৈরি হল)
উত্তরসূরিজিগমে ওয়াংচুক
জন্ম১৮৬২
বুমথাং, ভংদুইচোলিং প্যালেস
মৃত্যু২৬ অগাস্ট ১৯২৬ (বয়স ৬৩–৬৪)
সমাধি
দাম্পত্য সঙ্গীআশি সুরুন্ডু লাহ্ম কুর্তো ক্ষমা চুকমো
রাজবংশওয়াংচুক
পিতাজিগমে নামগিয়েল
মাতাআশি পেমা চোকী
ধর্মবৌদ্ধধর্ম

জীবন সম্পাদনা

বাল্যকাল সম্পাদনা

উগয়েন ওয়াংচুক বুমথাং জেলার ভংদুইচোলিং প্যালেসে ১৮৬২সালে জন্মগ্রহণ করেন। [২] রাজা উগয়েন ওয়াংচুক একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক এবং রণকৌশলবিদ ছিলেন। তিনি বিশেষ করে তার জীবনের শেষের দিকে একজন ধার্মিক অনুশীলনকারী হয়ে উঠেছিলেন।[৩] তিনি খুব তরুণ বয়সে দেসি জিগমে নামগিয়েলের কাছে নেতৃত্বের এবং যুদ্ধবিগ্রহ শিল্প শিখে নিয়েছিলেন। উগয়েন ওয়াংচুককে একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। [৩]

সর্বসম্মত চুক্তি দ্বারা বৌদ্ধ রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্পাদনা

ভুটানকে ৫৭ ধারাবাহিক ড্রূক ডাসিস ২৫৬ বছর শাসন করে। তারপর বৌদ্ধ রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।[৪] উগয়েন ওয়াংচুক ১৯০৭ সালে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেও তিনি প্রায় এক দশকের জন্য প্রকৃত শাসক ছিলেন।[৫] ব্রিটিশ রেকর্ডে তাকে 'তরংস পেনলোপ' বা ভুটানের শাসক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। [৬] ১৭ ডিসেম্বর ১৯০৭ সালে, পুনাখা ডিজং-এ উগয়েন ওয়াংচুককে মানুষের প্রতিনিধিরা, কর্মকর্তা ও পাদরীবর্গরা সর্বসম্মতিক্রমে ভুটানের প্রথম বংশানুক্রমিক রাজা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। [২]

 
স্যার উগয়েন ওয়াংচুক এবং তাঁর উপদেষ্টাগণ ১৯০৫ সালে ভূটানের রাজধানী পুনাখাতে

বৈদেশিক সম্পর্ক এবং বিদেশে সফর সম্পাদনা

তিনি ব্রিটেনতিব্বতের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে, ১৯০৪ সালে ব্রিটিশদের তিব্বত অভিযানে যোগদান করেন।[৭] ১৯০৬ সালে তার পরবর্তী রাষ্ট্রীয় সফরে, তিনি কলকাতায় আসেন প্রিন্স অব ওয়েলসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে।

 
স্যার উগয়েন ওয়াংচুক ১৯০৬ সালে কলকাতায়

ভারতে উগয়েন ওয়াংচুকের শেষ সফর ১৯১১-তে হয়, যখন তিনি দিল্লি গিয়েছিলেন রাজা পঞ্চম জর্জের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে।[৬]

জন ক্লড হোয়াইট, যিনি ১৯০৮ পর্যন্ত ভুটানের জন্য ব্রিটিশ রাজনৈতিক অফিসার ছিলেন, তিনি রাজা উগয়েন ওয়াংচুকের জন্য গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করে তার সম্বন্ধে লিখেছিলেন "I have never met a native I liked and respected more than I do Sir Ugyen. He was upright, honest, open and straightforward." [৬]

আধ্যাত্মিকতা সম্পাদনা

রাজা উগয়েন ওয়াংচুক অনেক বৌদ্ধ আধ্যাত্মিক কর্তা সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

পশ্চিম শিক্ষা সম্পাদনা

রাজা উগয়েন পাশ্চাত্য শিক্ষার বীজ বপন করেন, সেইসাথে ভুটানে নিরঁজনের শিকড় মজবুত করার উদ্যোগ নেন।[২][৮]

মৃত্যু সম্পাদনা

১৯২৬ সালে, ৬৪ বয়সে, রাজা উগয়েন ওয়াংচুক ফোদরং থিনলেই রাবতেনে মারা যান।[২] ক্রাউন প্রিন্স জিগমে ওয়াংচুকের তখন ২১ বছর বয়স ছিল। ভূটানে স্থিতি এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।

 
স্যার উগয়েন ওয়াংচুক এবং তার পরিবার

সম্মানিত পদ সম্পাদনা

বিদেশী সম্মানিত পদ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Royal Ark
  2. dpel ‘brug zhib ‘jug lté ba (CBS) (২০০৮)। ‘brug brgyd ‘zin gyi rgyel mchog dang pa mi dwang au rgyan dwang phyug gi rtogs brjod bzhugs so (The Biography of the Second King of Bhutan Jigme Wangchuck)। Thimphu: The Centre for Bhutan Studies। আইএসবিএন 978-99936-14-47-0 
  3. Aris, Michael (১৯৯৪)। The Raven Crown: The Origins of Buddhist Monarchy in Bhutan। London: Serindia Publications। আইএসবিএন 978-193247-62-1-7 
  4. Tshewang, Lama Pema (১৯৭৩)। A Brief History of the First Hereditary King of Bhutan 
  5. Sood, Shubhi (২০০৮)। Bhutan: 100 Years of Wangchuck Vision। Noida: SDS Publications। 
  6. White, J.C (১৯০৯)। Sikkim and Bhutan, Twenty-One Years on the North-East Frontier 1887-1908। India: Low Price Publications। আইএসবিএন 97881-753-61-64-5 
  7. Allen, Charles (২০০৪)। Duel in Snows, the True Story of Younghusband Mission to Lhasa। London: John Murray Publishers। আইএসবিএন 978-0719554292 
  8. Tobgye, Lyonpo Sonam। Education System in Bhutan – Past, Present and Future – A Reflection 
উগয়েন ওয়াংচুক
জন্ম: 1861 মৃত্যু: 26 August 1926
শাসনতান্ত্রিক খেতাব
পূর্বসূরী
নেই
(বংশগত রাজতন্ত্র তৈরি হল)
First King of Bhutan
17 December 1907 – 21 August 1926
উত্তরসূরী
জিগমে ওয়াংচুক