ইন্দোনেশিয়া–কাতার সম্পর্ক

ইন্দোনেশিয়া এবং কাতার রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক

ইন্দোনেশিয়া–কাতার সম্পর্ক হল ইন্দোনেশিয়া এবং কাতারের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৭৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। দুটি দেশেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। ইন্দোনেশিয়া বৃহত্তম মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ।[১] দোহায় ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস রয়েছে। পক্ষান্তরে জাকার্তায় রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস। দুটি দেশই ওআইসির সদস্যরাষ্ট্র।

ইন্দোনেশিয়া–কাতার সম্পর্ক
মানচিত্র Indonesia এবং Qatar অবস্থান নির্দেশ করছে

ইন্দোনেশিয়া

কাতার

ইন্দোনেশিয়া ও কাতার উল্লেখজনক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। স্বাক্ষরকৃত ক্ষেত্রেগুলোর মধ্যে বিমানপথে যোগাযোগ, পর্যটন এবং কৃষিখাতের সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য।[২]

উচ্চক্ষেত্রের সফর সম্পাদনা

তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্ভারের কারণে কাতার পৃথিবীর ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটি। ইন্দোনেশিয় রাষ্ট্রপতি সুশিলো ব্যাম্বাং ইউধন্য দোহায় ২০০৬ সালে প্রথম সফর করেন। এ সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ইন্দোনেশিয়ায় কাতারের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। কাতারের আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি ২০০৯ সালে জাকার্তায় সফর করেন।[১] ২০০১ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম চলাকালীন কাতারের প্রধানমন্ত্রী হামাদ বিন জসিম বিন জাবের আল থানি আবারও ইউধন্যর সাথে সাক্ষাৎ করেন।[২]

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পাদনা

২০১১ সালে দুইদেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৮৩.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, ২০১০ সালের চেয়ে যা ছিল ৫.২% বেশি। বাণিজ্যের এ পরিমাণ কাতারের পক্ষেই ছিল, বছরের পর বছর ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থাকার ফলে। এর কারণ ছিল দুটি; প্রথমত ইন্দোনেশিয় পণ্যের চাহিদা তৈরি করার মত জনসংখ্যা বা আঞ্চলিক অবস্থা - কোনোটাই কাতারের নেই। দ্বিতীয়ত ইন্দোনেশিয়ার ক্রমবর্ধিষ্ণু তেলের চাহিদা, যা তাদের অধিক পরিমাণে তেল আমদানি করতে বাধ্য করে। ইন্দোনেশিয়া কাতারে যেসকল পণ্য রপ্তানি করে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফার্নিচার, অফিসসম্পর্কিত সামগ্রি, কাগজ, ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রি এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য।[২]

কাতারের বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ইন্দোনেশিয়া। ২০১০ সালের মে মাসে কাতার হোল্ডিংস নামক কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির একটি সংগঠন ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের একটি ইন্দোনেশিয় ফান্ড গড়ে তোলে। ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ কোম্পানি পিটি ইন্দোসাত এর ৬৫ শতাংশের অংশীদার কিউটেল নামক একটি কাতারি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান।[১] ইন্দোনেশিয়ার বেশকিছু কোম্পানি কাতারে বিনিয়োগ করেছে, তার সবই মূলত তেলসম্পর্কিত। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিটি পারটামিনাও রয়েছে, যা কাতারের ৩ নং সেক্টরের তেলক্ষেত্র এবং গ্যাসব্লক পরিচালনা করে থাকে।[১]

অভিবাসী কর্মকর্তা সম্পাদনা

বর্তমানে কাতারে প্রায় ৪০ হাজার ইন্দোনেশিয় কর্মকর্তা রয়েছে। তাদের কেউ কেউ তেলখাতে কাজ করে, আবার কেউ গৃহকর্মী হিসেবেও কাজ করে। কাতার ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রশিক্ষিত কর্মকর্তাদের নিয়ে থাকে, বিশেষত তেলক্ষেত্রে এবং সেবিকা হিসেবে। ইন্দোনেশিয়ার শ্রমিক মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, ২০১৪ সালের শুরুর দিকে কাতার কর্মস্থলের হাজারের মত শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে লোক নেয়। তারা কাজ খুঁজে পায় তেল ও গ্যাস শিল্পক্ষেত্রে, হোটেল ও পর্যটনশিল্পে, নির্মাণশিল্পে এবং সেবিকা হিসেবে।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Veeramalla Anjaiah (December 21, 2010)। "Qatar wants to invest more in rising Indonesia: Envoy"। The Jakarta Post। সংগ্রহের তারিখ ১১ই নভেম্বর, ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. KBRI Doha (April 22, 2012)। "Meningkatkan Totalitas Diplomasi RI - Qatar" (Indonesian ভাষায়)। Tabloid Diplomasi। ২৯ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ই নভেম্বর, ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. Arie Novarina (February 4, 2014)। "Menakertrans: Qatar sediakan ribuan lowongan TKI" (Indonesian ভাষায়)। Antara News। সংগ্রহের তারিখ ১১ই নভেম্বর, ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা