আ টোয়েন্টিনাইন-সেন্ট রবারি

১৯১০ সালের মার্কিন নির্বাক স্বল্পদৈর্ঘ্য নাট্য চলচ্চিত্র

আ টোয়েন্টিনাইন-সেন্ট রবারি (ইংরেজি: A 29-Cent Robbery, অনুবাদ'একটি ২৯ সেন্ট ডাকাতি') ১৯১০ সালের মার্কিন নির্বাক স্বল্পদৈর্ঘ্য নাট্য চলচ্চিত্র। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের মতে চলচ্চিত্রটি পরিচালা করেছেন ব্যারি ওনিল।[] এটি প্রযোজনা করেছে থানহাউসার কোম্পানি। এই চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে এডনা রবিনসন নামে এক কিশোরী চরিত্রে মারি এলিনের অভিষেক হয়, যে তার পরিবারের বাড়ি লুট করার সময় চোরকে বাধাদানের প্রচেষ্টা চালায়। যেখানে একদল চোর একত্রিত হয়ে তার ২৯ সেন্ট সমেত খেলনা ব্যাংক লুট করে।

আ টোয়েন্টিনাইন-সেন্ট রবারি
চলচ্চিত্রের দৃশ্যে মারি এলিন
মূল শিরোনামA 29-Cent Robbery
পরিচালকব্যারি ওনিল
প্রযোজকথানহাউসার কোম্পানি
শ্রেষ্ঠাংশে
চিত্রগ্রাহকব্লেয়ার স্মিথ
পরিবেশকথানহাউসার কোম্পানি
মুক্তি
স্থিতিকাল৭২০ ফুট
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষা

চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের দ্বারা ইতিবাচক মন্তব্য অর্জন করে এবং প্রায় সমস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি প্রদর্শিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটি ছিল থানহাউসার কোম্পানি কর্তৃক প্রথম স্প্লিট-রিল; একটি একক রিলের মধ্যে এই চলচ্চিত্রটি ছাড়াও দ্য ওল্ড সু কাম ব্যাক অন্তর্ভুক্ত ছিল।

কাহিনিসংক্ষেপ

সম্পাদনা

এক চোর লুটপাটের অভিপ্রায়ে রবিনসনদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তবে তরুণী এডনা রবিনসন চোরটিকে দেখে ফেলায় সে শুধুমাত্র তার সামান্য ২৯ সেন্ট ইউএসডি (২০২১ অনুযায়ী $৮-এর সমতুল্য) অঙ্কের খেলনা ব্যাংক নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাংক চুরি যাবার পর এডনার মন খারাপ হওয়ায় তার বাবা-মা এ সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা থানায় যায় ডাকাতির প্রতিবেদন করতে, কিন্তু পুলিশ তাদের উপহাস করে। রবিসসনের বাবা-মা বাড়ি ফিরে আসে এবং তাকে জানায় যে পুলিশ এ-বিষয়ে কিছু করতে উৎসাহী নয়। এ কথা শুনে রবিনসন আরো দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়ে ওঠে। তাই সে নিজেই থানায় যায় এবং পুলিশ ক্যাপ্টেনকে চুরির ঘটনা সম্পর্কে অবগত করে। এরপর পুলিশ ক্যাপ্টেন মামলার কাজে তার অফিসারদের নিযুক্ত করেন এবং তারা খেলনা ব্যাংক বহনকারী বিভিন্ন পুরুষদের গ্রেফতার করে আনে। ডাকাত শনাক্ত করার জন্য পুলিশ রবিনসনকে বললে, সে জানায় আসল চোর এখানে নেই। অবশেষে পুলিশ ধরে আনা লোকদের মুক্ত করে দেয় এবং রবিনসন নিজেই চোর ধরার সিদ্ধান্ত নেয়। তাই সে একটি পুলিশের বাঁশি ও পোশাক যোগাড় করে নিজের মতোন তদন্ত শুরু করে, এবং অবশেষে চোর খুঁজে পায়।[][]

অভিনয়ে

সম্পাদনা

নির্মাণ

সম্পাদনা
 
বিলবোর্ডে আ টোয়েন্টিনাইন-সেন্ট রবারি

এই চলচ্চিত্রের পরিচালক নির্দিষ্টভাবে পরিচিত ছিলেন না। ব্যারি ওনিল ছিলেন থমাস জে. ম্যাকার্থির মঞ্চ নাম, যিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ থানহাউসার চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন; যার মধ্যে এর প্রথম দুই-রিলের রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট অন্তর্ভুক্ত ছিল। লয়েড বি. কার্লটন ছিল কার্লটন বি. লিটলের মঞ্চ নাম। তিনি একজন পরিচালক হিসেবে স্বল্প সময়ের জন্য থানহাউসার কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯১০ সালের গ্রীষ্মে তিনি বায়োগ্রাফ কোম্পানিতে স্থানান্তরিত হন।[] আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট পরিচালক হিসাবে ব্যারি ওনিলকে কৃতিত্ব দেন।[] অন্যদিকে চলচ্চিত্র ইতিহাসবিদ কুয়েন্টিন ডেভিড বোয়ার্স অবশ্য এই বিশেষ নির্মাণের জন্য পরিচালক হিসাবে তাকে স্বীকৃতি প্রদান করেন নি, তবে তিনি ক্যামেরাম্যান হিসাবে ব্লেয়ার স্মিথকে কৃতিত্ব দেন।[]

এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মারি এলিনের পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটে, এবং শীঘ্রই তিনি "থানহাউসার কিড" হিসাবে পরিচিত ও বিখ্যাত হয়ে ওঠেন।[] তার বড় বোন, গ্রেস এলিন, পরবর্তীতে থানহাউসার প্রোডাকশনে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। তবে গ্রেস এলিন ১৯১৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত থানহাউসার কোম্পানির আনুষ্ঠানিক সদস্য ছিলেন না।[]

মুক্তি এবং অভ্যর্থনা

সম্পাদনা

আনুমানিক ৭৫০ ফুট (২৩০ মি) দৈর্ঘ্যের এ এক রিলের নাট্য চলচ্চিত্রটি শুক্রবার ১৫ এপ্রিল ১৯১০ সালে মুক্তি পায়।[][] এছাড়াও আরেকটি ছোট, দ্য ওল্ড সু কাম ব্যাক চলচ্চিত্র এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে একটি স্পিল্ট-রিল তৈরি করেছে। এটি ছিল থানহাউসার কোম্পানি কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম স্পিল্ট-রিল। এছাড়াও এটি থানহাউসার কোম্পানির প্রথম চলচ্চিত্র যা মঙ্গলবার সাপ্তাহিক মুক্তির পরিবর্তে শুক্রবারে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। মুভিং পিকচার নিউজের একটি বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, সাপ্তাহিক মুক্তির তারিখ মূলত প্রদর্শকদের অনুরোধে পরিবর্তন করা হয়েছিল বলে জানা যায়।[]

চলচ্চিত্রটি ইতিবাচক সমালোচনা অর্জন করতে সক্ষম হয়। দ্য মর্নিং টেলিগ্রাফ বলে, কাহিনিটি বিশ্বাসযোগ্য হতে অত্যন্ত কষ্টকল্পিত ছিল, কিন্তু এটি দারুণ ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।[] দ্য মুভিং পিকচার ওয়ার্ল্ড চলচ্চিত্রটির অভিনয় এবং চিত্রগ্রহণ সন্তোষজনক ছিল বলে বিবৃতি দেয়।[] অসংখ্য দেশে চলচ্চিত্রটির বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়েছিল, কখনও কখনও কমেডি হিসাবে, ইন্ডিয়ানা,[][] ক্যান্সাস,[][১০] নিউ ইয়র্ক,[১১] এবং পেন্সিলভেনিয়ার[১২] থিয়েটার কর্তৃক।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "আ টোয়েন্টিনাইন-সেন্ট রবারি"আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট। ২০১৪। ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ 
  2. কুয়েন্টিন ডেভিড বোয়ার্স (১৯৯৫)। "Volume 2: Filmography - A 29-Cent Robbery"থানহাউসার ফিল্মস: অ্যান এনসাইক্লোপিডিয়া অ্যান্ড হিস্ট্রি। ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৯, ২০১৫ 
  3. "কাহিনিসূত্রের সংক্ষিপ্তসার"আইএমডিবি (ইংরেজি ভাষায়)। আমাজন.কম। ২৩ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ 
  4. কুয়েন্টিন ডেভিড বোয়ার্স (১৯৯৫)। "Volume 1: Narrative History -Chapter 3 - 1910: Film Production Begins"থানহাউসার ফিল্মস: অ্যান এসসাইক্লোপিডিয়া অ্যান্ড হিস্ট্রি। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ 
  5. কুয়েন্টিন ডেভিড বোয়ার্স (১৯৯৫)। "Volume 3: Biographies - Eline, Marie"থানহাউসার ফিল্মস: অ্যান এসসাইক্লোপিডিয়া অ্যান্ড হিস্ট্রি। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ 
  6. "মুক্তির তথ্য"আইএমডিবি (ইংরেজি ভাষায়)। আমাজন.কম। ২৩ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ 
  7. "Rustic"। সিমোর, ইন্ডিয়ানা: সিমোর ডেইলি রিপাবলিকান। ২৪ ডিসেম্বর ১৯১০। পৃষ্ঠা ১। ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫নিউজপেপার্স.কম-এর মাধ্যমে।  
  8. "Vaudet"। রাশভিল, ইন্ডিয়ানা: দ্য ডেইলি রিপাবলিকান। ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯১০। পৃষ্ঠা ৫। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫নিউজপেপার্স.কম-এর মাধ্যমে।  
  9. "The Magic"। হাচিনসন, কানসাস: দ্য হাচিনসন নিউজ। ১ জুন ১৯১০। পৃষ্ঠা ৭। ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ – নিউজপেপার্স.কম-এর মাধ্যমে।  
  10. "Star Theatre"। অটওয়া, কানসাস: দ্য অটওয়া ডেইলি রিপাবলিক। ১৬ মে ১৯১০। পৃষ্ঠা ৮। ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ – নিউজপেপার্স.কম-এর মাধ্যমে।  
  11. "Star Theatre [স্টার থিয়েটার]"। নিউ ইয়র্ক: টাইমস হেরাল্ড। ৫ মে ১৯১০। পৃষ্ঠা ৫। ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ – কুয়েন্টিন ডেভিড বোয়ার্স-এর মাধ্যমে।  
  12. "Nickelet [নিকলেট]"। আল্লেন্টোব্ন, পেনসিলভানিয়া: দ্য আল্লেন্টোব্ন ডেমোক্র্যাট। ১৮ মে ১৯১০। পৃষ্ঠা ৫। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ – নিউজপেপার্স.কম-এর মাধ্যমে।  

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা