আল মামুন (বই)
আল মামুন (উর্দু: المامون) শিবলী নোমানীর রচিত প্রথম জীবনী সাহিত্য।[১] এতে আব্বাসীয় খলিফা আল মামুনের জীবনী আলোচিত হয়েছে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮৭ সালে। আলিগড় থেকে ১৮৮৯ সালে এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। গ্রন্থটিতে সৈয়দ আহমদ খান তিন পৃষ্ঠাব্যাপী উপক্রমনিকা তৈরী করেন। এটি ২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়। আব্বাসীয় শাসকদের মধ্যে খলিফা হারুনুর রশিদের পুত্র মামুনুর রশিদ ছিলেন খ্যাতিমান খলিফাদের মধ্যে অন্যতম। লেখক এই গ্রন্থে তার জীবন কর্মকে নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন।[২]
লেখক | শিবলী নোমানী |
---|---|
মূল শিরোনাম | উর্দু: المامون |
ভাষা | উর্দু (মূল) |
মুক্তির সংখ্যা | ২ খণ্ড |
বিষয় | আল-মামুন |
ধরন | জীবনী |
প্রকাশিত | ১৮৮৭ |
ওসিএলসি | ৭৯৩৮১৭০৫১ |
২৯৭.০৯ | |
ওয়েবসাইট | shibliebooks.com |
বর্ণনা
সম্পাদনাশিবলী নোমানীর দুই খণ্ডে রচিত এই গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে তিনি আলোচনা করেছেন খলিফা মামুনের ব্যক্তিগত জীবন, প্রশাসনিক জীবন, বিদ্রোহ দমন, যুদ্ধ এবং রাজ্য বিজয় সম্পর্কে। আর দ্বিতীয় খণ্ডে আলোচনা করেছেন তৎকালীন সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, আলেম-উলামা, কবি-সাহিত্যিক, জ্ঞানীগুণীদের জীবন নিয়ে। সংক্ষিপ্তরূপে তুলে ধরেছেন অন্যতম প্রাচীন নগরী বাগদাদের প্রকৃত ইতিহাস। আরও আলোচনা করেছেন সমসাময়িক অন্য সাম্রাজ্যগুলোও। তিনি বুঝানোর চেষ্টা করেছেন, তখন ইসলামি সাম্রাজ্যই ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্য। তিনি আল মামুনের ভালো কাজের জন্য প্রশংসা করেছেন আবার সমালোচনার স্থলে সমালোচনা করতে ছাড়েন নি।
ইসলামি শাসন ব্যবস্থায় বনু আব্বাসের মধ্যে হারুনুর রশিদের নাম অনেক খ্যাতি লাভ করলেও লেখক গ্রন্থ রচনায় মামুনের জীবনালেখ্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“ | বাস্তব কথাটি হলো যদি তিনি তার ইনসাফের হাত বার্মেকীদের রক্তে রঞ্জিত না করতেন তাহলে তাকে বাদ দিয়ে আমি অন্য কাউকে আব্বাসীয় খলিফাদের মধ্য থেকে আমার বিষয়বস্তুরূপে নির্বাচন করতাম না। | ” |
দর্শন আর যুক্তিশাস্ত্রের মূল প্রচারণা মামুনের যুগেই হয়েছিল। মামুনের প্রতি তার অগাধ ভক্তি থাকা স্বত্বেও শিবলী তার রচিত গ্রন্থের সর্বত্র মামুন প্রীতি প্রদর্শন করেননি। বরং কিছু কিছু স্থানে তিনি এমনভাবে রচনা করেছেন যে, মামুনের সম্মানের স্থলে তার প্রতিপক্ষের প্রতি তার পক্ষপাত সুলভ মনোভাব দৃশ্যমান হয়।[২]
এই গ্রন্থে শিবলীর কিছু অভিমত প্রতিষ্ঠিত ইতিহাসের বিপরীতে যায়। যেমনঃ তাহের এবং ইমাম রেজাকে বিষ পান করানো হয়েছিল। কিন্তু শিবলীর কাছে ইমাম রেজাকে বিষ পান করানো ভ্রান্ত ঘটনা। তাহেরকে বিষ দেওয়া হয়েছিল সঠিক এবং তা স্বয়ং মামুনই দিয়েছিল। কিছু স্থলে মামুনের ভুল সিদ্ধান্ত এবং নিয়ম বহির্ভূত বিচারগুলো সম্পর্কে শিবলী কৌশলী ব্যাখ্যা দিয়েছেন।[২]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ ভাট, সামি উল্লাহ (২০১৯)। "দ্যা ইম্পর্ট্যানস অব ওয়ার্কস অব মুহাম্মদ শিবলী নোমানী"। জার্নাল অব ইসলামিক স্টাডিজ এন্ড হিউম্যানিটিজ (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ (২): ১৭৩। আইএসএসএন 2527-838X। ডিওআই:10.21580/jish.32.2921। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১।
- ↑ ক খ গ মাহমুদ, মিনহাজ উদ্দীন (২০১৬)। উর্দু সাহিত্যে আল্লামা শিবলী নোমানীর অবদান (গবেষণাপত্র)। উর্দু বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৫৫–৫৭।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- আহরারি, মুহাম্মদ জাফর (১৯৯৯)। উর্দু সাহিত্যের নবজাগরণ এবং শিবলী (গবেষণাপত্র) (ইংরেজি ভাষায়)। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৫৪–১৫৭।
- মীর, জাহিদ হুসাইন (২০১৯)। শিবলীর রচনায় জীবনী ও ঐতিহাসিক উপাদান (গবেষণাপত্র) (উর্দু ভাষায়)। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৯১–১০৮।
- আম্মার, আব্দুল হাই (২০১৭)। উনবিংশ-বিংশ শতাব্দীতে সৈয়দ আহমদ খান, কাসেম নানুতুবি, শিবলী নোমানী, মানাজির আহসান গিলানি, আবুল কালাম আজাদের মত মুসলিম চিন্তাবিদদের শিক্ষা ভাবনা। ভারত: জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া। পৃষ্ঠা ১৫৮। hdl:10603/313157।
- খাতুন, শায়েস্তা (২০১৩)। মুসলিম মহিলাদের শিক্ষা ও সামাজিক বিকাশে আল্লামা শিবলীর ভূমিকা (গবেষণাপত্র) (উর্দু ভাষায়)। উর্দু বিভাগ, বীর বাহাদুর সিং পূর্বাঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৪৩–৪৪।
- আজিজ, শহিদ (২০১৬)। জীবনী সাহিত্য রচনায় মুহাম্মদ হুসাইন হাইকল এবং শিবলী নোমানীর তুলনামূলক অধ্যয়ন (গবেষণাপত্র) (আরবি ভাষায়)। বাবা গোলাম শাহ বাদশাহ বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ২০৮–২১৮।
- আহরারি, মুহাম্মদ জাফর (১৯৯৯)। উর্দু সাহিত্যের নবজাগরণ এবং শিবলী (গবেষণাপত্র) (ইংরেজি ভাষায়)। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ২৩০–২৫৩।
- আজিজ, শহিদ (২০১৬)। "জীবনী সাহিত্য রচনায় মুহাম্মদ হুসাইন হাইকল এবং শিবলী নোমানীর তুলনামূলক অধ্যয়ন"। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ, বাবা গোলাম শাহ বাদশাহ বিশ্ববিদ্যালয় (ইংরেজি ভাষায়)।
- আবু বকর, এম. সি. (২০১৪)। "হালি এবং শিবলীর উল্লেখ সহ উর্দুতে জীবনী সাহিত্য"। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ, উর্দু বিভাগ, শ্রী বেঙ্কটেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয় (উর্দু ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১।
- তালাত, জাফর (২০১৭)। "জীবনী সাহিত্যে শিবলী নোমানী"। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ, বীর বাহাদুর সিং পূর্বাঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- আল মামুনের উর্দু সংস্করণ