আলেকজান্ডার ম্যাকফারলেন

অধ্যাপক আলেকজান্ডার ম্যাকফারলেন এফআরএসই এলএলডি (২১ এপ্রিল ১৮৫১–২৮ আগস্ট ১৯১৩) ছিলেন একজন স্কটিশ যুক্তিবিদ, পদার্থবিজ্ঞানীগণিতবিদ

আলেকজান্ডার ম্যাকফারলেন
জন্ম২১ এপ্রিল ১৮৫১ (1851-04-21)
মৃত্যু২৮ আগস্ট ১৯১৩(1913-08-28) (বয়স ৬২)
চ্যাথাম, ওন্টারিও, কানাডা
জাতীয়তাস্কটিশ
মাতৃশিক্ষায়তনএডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণবিজ্ঞানীদের জীবনী
পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কিত বীজগণিত
দাম্পত্য সঙ্গীহেলেন সয়ারিঞ্জেন
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রযুক্তিবিদ্যা
পদার্থবিজ্ঞান
গণিত
প্রতিষ্ঠানসমূহটেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়
লিহাই বিশ্ববিদ্যালয়
ডক্টরাল উপদেষ্টাপিটার গিউথ্রি টেইট
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেনউইলিয়াম রোয়ান হ্যামিল্টন
উইলিয়াম কিংডন ক্লিফোর্ড
আর্থার কেলি
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেনজি.ডব্লিউ. পায়ার্স
কোয়াটার্নিয়ন সোসাইটি

জীবনী সম্পাদনা

ম্যাকফারলেন স্কটল্যান্ডের ব্লেয়ারগৌরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। পিটার গিউথ্রি টেইটের রসায়নাগার থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল তিনি তার ডক্টরাল থিসিস– "তড়িতের বিশৃঙ্খল নির্গমন"[১]-এ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেন।

১৮৭৮ সালে ম্যাকফারলেন রয়্যাল সোসাইটি অফ এডিনবার্গে জর্জ বুলের বীজগাণিতিক যুক্তিবিদ্যা সম্পর্কে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। পরবর্তীতে তিনি রয়্যাল সোসাইটি অফ এডিনবার্গের একজন সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পিটার গিউথ্রি টেইট, ফিলিপ কেল্যান্ড, আলেকজান্ডার ক্রাম ব্রাউন এবং জন হাটন ব্যালফোর[২] তাকে সদস্যপদ প্রদানের প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন। এর পরের বছর তিনি প্রিন্সিপলস অফ দ্য অ্যালজেব্রা অফ লজিক বইটি প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি বুলিয়ান চলককে বীজগাণিতিক প্রক্রিয়ায় প্রকাশ করার পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন।[৩]

ম্যাকফারলেন তার জীবদ্দশায় গবেষণা ও শিক্ষাক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্ট অ্যান্ড্রুস বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করতেন, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক (১৮৮৫–১৮৯৪)[৪] এবং লিহাই বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর তড়িৎবিদ্যা ও পরবর্তীতে গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কোয়াটার্নিয়ন সোসাইটির সচিব নিযুক্ত হন এবং ১৯০৯ সালে সভাপতি পদে আসীন হন। ১৯০৪ সালে উক্ত সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত বিবলিওগ্রাফি অফ কোয়াটার্নিয়ন্স গ্রন্থটি তিনিই সম্পাদনা করেছিলেন।

ম্যাকফারলেন ১৯১৬ সালে গণিতবিদদের জীবনী সম্পর্কে টেন ব্রিটিশ ম্যাথমেটিশিয়ান্স শীর্ষক একটি জনপ্রিয় গ্রন্থ রচনা করেন। ১৯১৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানীদের জীবনী সম্পর্কে তিনি অনুরূপ একটি গ্রন্থ লেকচার্স অন টেন ব্রিটিশ ফিজিসিস্টস অফ দ্য নাইনটিন্থ সেঞ্চুরি প্রকাশ করেন। ম্যাকফারলেনের জীবদ্দশায় জ্যামিতির প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়[৫], বিশেষ করে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক জি.বি. হ্যালস্টেডের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। ম্যাকফারলেনের স্পেস অ্যানালাইসিস প্রকাশনার ১৭ বছর পর, ১৯০৮ সালে হারম্যান মিনকোভস্কি তার স্পেসটাইম তত্ত্ব উত্থাপন করেন।[৬]

ম্যাকফারলেন বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণিতবিদ কংগ্রেসে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে ১৮৯৩ সালের শিকাগো এবং ১৯০০ সালের প্যারিস সম্মেলন উল্লেখযোগ্য।

ম্যাকফারলেন অবসর নেওয়ার পর ওন্টারিওর চ্যাথামে ফিরে আসেন এবং এখানেই ১৯১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[৭]

স্থান বিশ্লেষণ সম্পাদনা

আলেকজান্ডার ম্যাকফারলেন তার লেখাগুলোকে একত্রে "স্পেস অ্যানালাইসিস" (স্থান বিশ্লেষণ) নামে অভিহিত করেছেন। ১৮৯৪ সালে তিনি তার পুরনো পাঁচটি গবেষণাপত্র[৮] ও আলেকজান্ডার ম্যাকলয়ের ইউটিলিটি অফ কোয়াটার্নিয়ন্স ইন ফিজিক্স বইটি সম্পর্কে তার মতামত প্রকাশ করেন। গবেষণাপত্রে তিনি পূর্বের প্রকাশনা থেকে পৃষ্ঠা নম্বর অব্যাহত রেখেছেন এবং পাঠক পূর্বের বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত বলে ধরে নিয়েছেন।

গবেষণাপত্রের প্রথমটি হলো প্রিন্সিপলস অফ দ্য অ্যালজেব্রা অফ ফিজিক্স, এতে তিনি প্রথম অধিবৃত্তীয় কোয়াটার্নিয়ন বীজগণিতের অবতারণা করেন। দ্বিতীয় পত্রটির শিরোনাম দ্য ইমাজিনারি অফ দ্য অ্যালজেব্রা, এখানে তিনি হোমার্শাম কক্স (১৮৮২/৮৩)[৯][১০] এর অনুরূপ অধিবৃত্তীয় ভার্সর ব্যবহার করেছেন। এর উপস্থাপনা নিম্নরূপ:

 

এখানে, π/২ হলো রেডিয়ান এককে সমকোণ।

তৃতীয় ও চতুর্থ গবেষণাপত্রের শিরোনাম যথাক্রমে ফান্ডামেন্টাল থিওরেমস অফ অ্যানালাইসিস জেনারেলাইজড ফর স্পেস এবং অন দ্য ডেফিনিশন অফ দ্য ট্রাইগোনোমেট্রিক ফাংশনস। পঞ্চম পত্রের নাম ইলিপটিক অ্যান্ড হাইপারবোলিক অ্যানালাইসিস (উপবৃত্তীয় ও অধিবৃত্তীয় বিশ্লেষণ), এই পত্রে ম্যাকফারলেন কোসাইনের গোলকীয় সূত্রাবলিকে গোলকের মৌলিক উপপাদ্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এতে কোসাইনের অধিবৃত্তীয় সূত্রাবলির বর্ণনা পাওয়া যায়।

১৯০০ সালে আলেকজান্ডার ম্যাকফারলেন রয়্যাল সোসাইটির সহযোগিতায় হাইপারবোলিক কোয়াটার্নিয়ন্স[১১] বইটি প্রকাশ করেন। এর সাথে তিনি ৯টি জ্যামিতিক চিত্র সংবলিত একটি পত্র সংযুক্ত করেন যার মধ্যে দুটি অনুবন্ধী অধিবৃত্তও রয়েছে।

সৃষ্টিকর্ম সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. A Marfarlane (1878) "The disruptive discharge of electricity" from Nature 19:184,5
  2. Biographical Index of Former Fellows of the Royal Society of Edinburgh 1783–2002 (পিডিএফ)The Royal Society of Edinburgh। জুলাই ২০০৬। আইএসবিএন 0-902-198-84-X। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৭ 
  3. Stanley Burris (2015), "The Algebra of Logic Tradition", Stanford Encyclopedia of Philosophy
  4. See the Macfarlane papers at the University of Texas.
  5. 1830–1930: A Century of Geometry, L Boi, D. Flament, JM Salanskis editors, Lecture Notes in Physics No. 402, Springer-Verlag আইএসবিএন ৩-৫৪০-৫৫৪০৮-৪
  6. A. Macfarlane (1891) "Principles of the Algebra of Physics", Proceedings of the American Association for the Advancement of Science 40:65–117. It was 1908 when Hermann Minkowski proposed his spacetime.
  7. The Michigan Alumnus, Volume 22University of Michigan Library। ১৯১৬। পৃষ্ঠা 50। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০২ – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  8. A. Macfarlane (1894) Papers on Space Analysis, B. Westerman, New York, weblink from archive.org
  9. Cox, H. (১৮৮৩) [1882]। "On the Application of Quaternions and Grassmann's Ausdehnungslehre to different kinds of Uniform Space"Trans. Camb. Phil. Soc.13: 69–143। 
  10. Cox, H. (১৮৮৩) [1882]। "On the Application of Quaternions and Grassmann's Ausdehnungslehre to different kinds of Uniform Space"Proc. Camb. Phil. Soc.4: 194–196। 
  11. A. Macfarlane (1900) "Hyperbolic Quaternions" Proceedings of the Royal Society at Edinburgh, vol. 23, November 1899 to July 1901 sessions, pp. 169–180+figures plate. Online at Cambridge Journals (paid access), Internet Archive (free), or Google Books (free). (Note: P. 177 and figures plate incompletely scanned in free versions.)