আলাপ:লুসিতানো

সাম্প্রতিক মন্তব্য: Arindam Maitra কর্তৃক ৪ বছর পূর্বে "নাম" অনুচ্ছেদে

নাম সম্পাদনা

@Arindam Maitra: "লুসিতানোস" (Lucitanos) স্পেনীয় ভাষাতে জাতিটির জাতিসূচক বিশেষণভিত্তিক নাম, s দিয়ে বহুবচন বোঝাচ্ছে; অর্থাৎ লুসিতানোস হল "লুসিতানোগণ"। ইংরেজিতে লুসিটেনিয়ানস, ফরাসিতে ল্যুসিতানিয়াঁ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ যে ভাষায় যে রকম রীতি, সেভাবে জাতিসূচক বিশেষণ ব্যবহার করে বহুবচন প্রত্যয় যোগ করে নাম রাখা হয়েছে। এই দিক থেকে চিন্তা করে বাংলা ভাষায় আমার মতে নিবন্ধের শিরোনাম হওয়া উচিত লুসিতানীয় জাতি। কারণ বাংলাতে আমরা "জাতিসূচক বিশেষণ + জাতি" এই ফরম্যাটটা ব্যবহার করি। যেমন ফ্রাংক জাতি, বাঙালি জাতি, ইত্যাদি। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৭:২৮, ১০ অক্টোবর ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন

  • আপনার গঠনমূলক সমালোচনার জন্য ধন্যবাদ। আমিও প্রাথমিকভাবে নিবন্ধটির নাম লুসিতানীয় করার কথাই ভেবেছিলাম। "জাতি" কথাটির কথা ভাবিনি, কারণ আলোচ্য সময়ে জাতিগঠন প্রক্রিয়াটিই চালু হয়নি। কিন্তু পরে "লুসিতানো" নামটিই বাছি, কারণ প্রথমত "লুসিতানীয়" শব্দটি আমার কানে একটু বেশি বুকিশ ধরনের বাংলা বলেই মনে হয়েছে (এমন ধরনের বাংলা যা লেখার সময়ে ব্যবহৃত হয়, বলার সময় প্রায় কখনওই ব্যবহৃত হয় না)। তাছাড়া সাধারণভাবে আমরা এখন বাংলায় বহু বিদেশি ভাষাজাত শব্দকে সেইরকম রেখেই উচ্চারণ করে থাকি। তাতে তাদের বাংলাকরণের ক্ষেত্রে কোনও বাধার সৃষ্টি হয় না। সেই হিসেবে আমার মনে হয়েছে, "লুসিতানো" শব্দটি তুলনামূলকভাবে সহজতর ও বাঙালির পক্ষে বেশি গ্রহণযোগ্য। দ্বিতীয়ত, কোনও বিদেশি শব্দকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমি মূল ভাষাকে অনুসরণ করাকেই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি। এক্ষেত্রে তাই আমাদের স্পেনীয় বা পর্তুগিজ ভাষাকেই (লুসিতানোদের বাসভূমি বর্তমানে ঐ দেশদুটিরই অন্তর্ভুক্ত) অনুসরণ করা উচিত বলে মনে হয়েছে। কিন্তু বহুবচন হিসেবে 's' টিকে আমি সজ্ঞানেই পরিত্যাগ করেছি। কারণ আপনি যেমন বলেছেন - যে ভাষার যে রীতি। ইংরেজি, স্পেনীয়, জার্মান, প্রভৃতি বহুভাষাতেই plural marker খুব গুরুত্বপূর্ণ ও আবশ্যিক হলেও বাংলায় তা নয়। তাই এক্ষেত্রে 'লুসিতানোরা' শব্দটি একটি রম্যরচনা বা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাপ্রসূত লেখার ক্ষেত্রে নাম হিসেবে উপযুক্ত হলেও একটি ঐতিহাসিক বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে যে নৈর্ব্যক্তিকতার প্রয়োজন, তার পক্ষে ঠিক উপযুক্ত নয়। সেইকারণেই নিবন্ধের নাম হিসেবে আমি লুসিতানো শব্দটিকেই বেছেছি। আপনার গঠনমূলক মতামত ব্যক্ত করার জন্য আবার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। - অরিন্দম মৈত্র (আলাপ) ০৯:২৩, ১০ অক্টোবর ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন
দ্রুত ও বিশদ উত্তরের জন্য ধন্যবাদ। আপনার কথার সূত্র ধরেই বলছি যে উইকিপিডিয়া কিন্তু একটা প্রমিত লিখিত বিশ্বকোষ, কথোপকথনের বাংলা লেখার জায়গা ঠিক এটা নয়। যেমন কথা বলার সময় আমরা অনেক বাংলা ইংরেজি

মিলিয়ে একটা খিচুড়ি ভাষায় কথা বলি, সেটা নিশ্চয়ই উইকির ভাষা হবে না। এখন যদি এটা স্বীকার করেন যে উইকির ভাষা হবে এক ধরনের প্রমিত, সামঞ্জস্যপূর্ণ লিখিত ভাষা, তাহলে সেক্ষেত্রে লিখিত ভাষার রীতি অনুসরণ করাটাই কি ঠিক নয়? আর রেফারেন্স বা আকরগ্রন্থ হিসেবে বিশ্বকোষের ভাষা তো আরও বেশি নির্ভরযোগ্য হওয়া উচিত, তাই না? আমরা কিন্তু ইংরেজ জাতি, ফরাসি জাতি, কাস্তিলীয় জাতি, এদের উপর নিবন্ধ লেখার সময় আপনার যুক্তি অনুসারে ইংলিশ, ফ্রঁসে, কাস্তেইয়ানো এভাবে লিখবো না, তাই না? কিংবা বাঙ্গাল বা ফ্রাংক? এভাবে তো আমরা লিখি না, তাই না? ঠিক একইভাবে লিখিত বাংলার রীতি মেনে লুসিতানীয় জাতি লেখাটাই সমীচীন মনে করি। তা সে যতই "বুকিশ" লাগুক না কেন। কারণ একটা প্রমিত লিখিত বিশ্বকোষে এভাবে লেখাটাই রীতি। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৯:৫৯, ১০ অক্টোবর ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন

  • হ্যাঁ, ঠিক। আমরা ইংলিশ বা ফ্রঁসে লিখবো না, কারণ "ইংরেজ" বা "ফরাসি" বাংলায় ইতিমধ্যেই বহুল প্রচলিত শব্দ (কাস্তিলীয় কিন্তু মোটেই তেমনভাবে বাংলায় প্রচলিত শব্দ নয়, এবং উচ্চারণগতভাবে সেটি মূলানুগও নয়, ফলে 'কাস্তেইয়ানো' ব্যবহার করাই সেখানে বেশি যুক্তিযুক্ত।)। কিন্তু যে শব্দ সেভাবে বাংলায় প্রচলিত নয়, আমি সেই শব্দের ক্ষেত্রে কথাটা লিখেছি। প্রমিত বাংলার ক্ষেত্রেও পাঁচ ধরনের বাংলা শব্দের মধ্যে পঞ্চম ধরনটি হল "বিদেশি শব্দ" (টেবিল, চেয়ার, নাৎসি, কম্পিউটার, খ্রিস্ট, ওলন্দাজ; শেষোক্ত শব্দটি পর্তুগিজ শব্দ holandés এর বাংলাকরণ; স্বাভাবিকভাবেই এক্ষেত্রে কিন্তু বাঙালি বাংলা ব্যাকরণের নিয়ম জোর করে তার উপর প্রয়োগ করে ওলান্দীয় বা হল্যান্ডীয় জাতীয় কোনও শব্দ তৈরি না করে স্বাভাবিকভাবেই ওলন্দাজ, দিনেমার, যীশু, হরতন, রুইতন, ইস্কাবন, প্রভৃতি শব্দকেই বাংলা হিসেবে গ্রহণ করেছে। কথাতেও, লেখাতেও।)। এবং এই ধরনের নতুন নতুন শব্দগ্রহণ করেই ভাষা (শুধু বাংলা নয়, সকল ভাষাই) সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। আর আগেই বলেছি "লুসিতানো" একটি জনগোষ্ঠী ঠিকই, কিন্তু কোনও 'জাতি' নয়। কারণ জাতি ব্যাপারটাই আলোচ্য সময়ে ঐতিহাসিকভাবে গড়ে ওঠেনি। ফলে 'জাতি' শব্দটি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আর শেষে একটা কথা - ভাষা একটা বহতা নদীর মতো। সেখানে কথ্যভাষা ও লেখ্যভাষার মধ্যে একধরনের সামঞ্জস্য রক্ষা সবসময়েই খুবই প্রয়োজনীয়। নাহলে ধীরে ধীরে লেখ্যভাষা জনমানসে তার বোধগম্যতাই হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। সেক্ষেত্রে সেই সাধারণ্যে অবোধ্য ভাষায় রচিত বিশ্বকোষও কিন্তু প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলতে বাধ্য। আপনার সাথে এই প্রাণবন্ত মতবিনিময় আমাকেও খুবই আনন্দ দিল। আন্তরিক ধন্যবাদ ও শারদীয়া শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। ভালো থাকবেন। - অরিন্দম মৈত্র (আলাপ) ১৫:২৬, ১০ অক্টোবর ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন
"লুসিতানো" পাতায় ফেরত যান।