আলাপ:তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক রোগলক্ষণসমষ্টি

সাম্প্রতিক মন্তব্য: Zaheen কর্তৃক ৩ বছর পূর্বে "নাম" অনুচ্ছেদে

নাম সম্পাদনা

@Wikitanvir, Zaheen, ANKAN, এবং প্রলয়স্রোত: বর্তমানে বাংলা উইকির সংশ্লিষ্ট দুটি নিবন্ধের নামের মিল নেই। বর্তমানে নিন্মলিখিত নাম দেয়া হয়েছে:

  • Acute respiratory distress syndrome - সংকটাপন্ন তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক সিনড্রোম

সমস্যা: Acute অর্থে তীব্র ঠিক আছে। তবে সংকটাপন্ন কোথা থেকে আসল। respiratory = শ্বাসক্রিয়া, distress = বেদনা/যন্ত্রণা/কষ্টমূলক তথা respiratory distress = শ্বাসকষ্টমূলক ঠিক আছে। syndrome হল উপসর্গসমষ্টি।

আমি এই নাম করার প্রস্তাব করছি: তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি
  • Severe acute respiratory syndrome coronavirus 2 - গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস ২

সমস্যা: এখানে respiratory distress নাই কিন্তু শ্বাসকষ্টমূলক কীভাবে। বাকীগুলি ঠিক আছে।

আমি এই নাম করার প্রস্তাব করছি: গুরুতর তীব্র শ্বাসক্রিয়ার উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস ২

--আফতাবুজ্জামান (আলাপ) ০০:৩৫, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন

@আফতাবুজ্জামান: আপনার প্রথম প্রস্তাবটার সাথে আমিও একমত। তবে দ্বিতীয় প্রস্তাবটি নিয়ে ঠিক একমত নই। SARS-এর আসল নামে যদিও distress পরিভাষাটা নেই, তার পরেও সংজ্ঞা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে "গুরুতর" আর "তীব্র" বিশেষণগুলি দিয়ে এখানে "শ্বাসক্রিয়ার উপসর্গ"কে বৈশিষ্ট্যায়িত করা হচ্ছে না, কেননা শ্বাসক্রিয়ার উপসর্গ গুরুতর বা তীব্র হয় না... অন্য ভাবে বললে শ্বাসক্রিয়া কোনও সমস্যা নয় যে এর কোনও উপসর্গ দেখা যাবে। তবে শ্বাসক্রিয়ার কোনও সমস্যা তথা শ্বাসকষ্টের উপসর্গ থাকতে পারে, এবং সেটি গুরুতর কিংবা তীব্র হতে পারে। এই কারণেই ইংরেজি নামে কেবল respiratory থাকলেও বাংলা নামে "শ্বাসকষ্টমূলক" রাখাটা অর্থের দিক থেকে আমার মতে যৌক্তিক।--অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০১:৪১, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
আমি আরেকটু ঘাঁটলাম। Syndrome-কে "উপসর্গসমষ্টি"-র পরিবর্তে "লক্ষণসমষ্টি" (সমার্থকসমষ্টি) ব্যবহার করি। তখন "Respiratory syndrome"-এর ভালো বাংলা হবে "শ্বাসযন্ত্রের রোগলক্ষণসমষ্টি" (এর বদলে "শ্বাসযন্ত্রের রোগ-উপসর্গসমষ্টি" শুনতে খানিকটা বেশি দীর্ঘ ও খানিকটা বেশি বিদঘুটে শোনায়, তাই শ্রুতিমাধুর্যের স্বার্থে "লক্ষণসমষ্টি" পছন্দ করছি)। এখন Severe acute respiratory syndrome-এর পুরো বাংলা হবে "গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের রোগলক্ষণসমষ্টি" (১)। আসলে এই (১) পরিভাষাটিও কেমন যেন শোনায়, মনে হয় যেন শ্বাসযন্ত্রটিই গুরুতর ও তীব্র। কিন্তু সেটাতো ঠিক নয়। এর পরিবর্তে "শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর তীব্র রোগলক্ষণসমষ্টি" (২) বাংলাতে অনেক বেশি পরিষ্কার লাগে। তবে (২)-এর ক্ষেত্রে গুরুতর তীব্র (Severe acute) নামের মাঝখানে চলে আসে। সেটা সমস্যা হবার কথা না। ইংরেজি পরিভাষার শব্দের ক্রম বাংলা পরিভাষাতে হুবহু নকল করতে হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই; যেটা বাংলাতে শুনতে ঠিক শোনায়, সেটাই গ্রহণ করা উচিত। আর যদি "গুরুতর তীব্র" শুরুতে রাখতেই হয় তাহলে উপরে যেরকম বললাম "শ্বাসক্রিয়া"-র তুলনায় "শ্বাসকষ্টমূলক" অনেক বেশি যৌক্তিক, অর্থাৎ "গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি/লক্ষণসমষ্টি" (৩)। আমি হয় (২) অথবা (৩)-এর পক্ষে। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০২:০২, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
Severe acute respiratory syndrome-এর বাংলা গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি -ই থাকুক তবে। শব্দের ক্রমায়ন মূলের কাছাকাছি যতটা রাখা যায় তত ভালো। --আফতাবুজ্জামান (আলাপ) ০২:২৫, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
আরও একটা প্রস্তাব দেই। "গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি"। মূল ইংরেজি নামের ক্রম রক্ষা পেল। "শ্বাসকষ্ট"-ও এড়ানো গেল। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৪:০০, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
ঔষধবিজ্ঞানের পরিভাষায় ইংরেজি "sign"কে যদি লক্ষণ এবং "symptom"কে উপসর্গ বলি, সেক্ষেত্রে "syndrome"=উপসর্গসমষ্টি (ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মেডিকেল অভিধান অনুযায়ী সিনড্রোমের সংজ্ঞা দেওয়া এভাবে: A group of symptoms and/or signs that, occurring together, constitutes a particular disorder; তাই লক্ষণ ব্যবহার না করে উপসর্গ ব্যবহার সম্ভবত অধিকতর সঠিক হবে)। এদিক থেকে রোগলক্ষণ না ব্যবহার করার পক্ষে আমি। তবে "respiratory distress" কে শ্বাসকষ্ট বলছি, আবার "respiratory"-কেও শ্বাসকষ্ট বলছি, এটা ঠিক হচ্ছে না। পরিভাষার ব্যাপারে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসা প্রয়োজন, এই আলোচনা অন্যান্য রোগের নামের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হবে। respiratory distress=শ্বাসকষ্ট, respiratory=শ্বাসযন্ত্রীয় হতে পারে।
এভাবে করলে Acute respiratory distress syndrome = তীব্র সংকটাপন্ন শ্বাসযন্ত্রীয় উপসর্গসমষ্টি বা তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি, Severe acute respiratory syndrome coronavirus 2 = গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় উপসর্গসমষ্টি করোনাভাইরাস ২ বা গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় উপসর্গবিশিষ্ট করোনাভাইরাস ২ হোক। উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট কথাটি অতিরিক্ত কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
ভিন্নমতে, সিনড্রোমের বাংলা করার আদৌ প্রয়োজন আছে কি? গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় উপসর্গসমষ্টি শুনতে তুলনামূলক শ্রুতিমধুর লাগছে। Severe acute respiratory syndrome coronavirus 2 = গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় সিনড্রোম করোনাইভাইরাস-২ দেওয়াটা আমার কাছে সবচেয়ে শ্রুতিমধুর এবং কম সমস্যাবিশিষ্ট মনে হচ্ছে। — অংকন (আলাপ) ০৪:৪৮, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
১) ইংরেজিতে sign (অর্থাৎ ডাক্তার রোগীকে দেখে তার মধ্যে যেসব জিনিস শনাক্ত করেন) এবং symptom (অর্থাৎ রোগী নিজে ব্যক্তিগতভাবে যেসব জিনিস অনুভব করে) - এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। কিন্তু বাংলাতে sign এবং symptom-এর এরকম কোনও বিভাজন করা হয়নি। উভয়কেই বাছবিচার ছাড়াই লক্ষণ, রোগলক্ষণ বা উপসর্গ হিসেবে অনুবাদ করা হয়ে থাকে। আপনি যেমনটি বলছেন লক্ষণ হল sign, আর symptom হল উপসর্গ -- এরকম সুক্ষ্ম অর্থগত পার্থক্য বাংলায় করা হয় না। তাই বাংলাতে লক্ষণ (রোগলক্ষণ) ও উপসর্গ উভয়কেই সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এখন আমি সংসদ বিজ্ঞান পরিভাষা-তে দেখছি syndrome = "রোগলক্ষণাচয়" বা "রোগলক্ষণাবলির সমষ্টি", (আনন্দ পাবলিশার্স-এর) চিকিৎসা পরিভাষা অভিধান-এ দেখছি syndrome= "লক্ষণসমূহ, লক্ষণাবলি, লক্ষণপ্রচয়", তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রভাষক গৌরীপ্রসাদ ঘোষের উচ্চমানের ও পুরষ্কারপ্রাপ্ত ইংরেজি-বাংলা অভিধান Everyman's Dictinoary-তে দেখতে পাচ্ছি Symptomm="রোগলক্ষণ, উপসর্গ" Syndrome = "রোগলক্ষণপ্রচয়, লক্ষণাদি"। অর্থাৎ একাধিক রেফারেন্স বইতে syndrome-এর বাংলা করা হয়েছে "রোগলক্ষণসমষ্টি" বা তার খুব কাছাকাছি কিছু। এ কারণেই আমি "রোগলক্ষণসমষ্টি"র পক্ষপাতিত্ব করছি।
২) আর হ্যাঁ, "সিনড্রোমের" চেয়ে বাংলা পরিভাষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। সিনড্রোম বাংলা শব্দ নয়। এটি গ্রিক ভাষাজাত একটি পরিভাষা যা ইংরেজি এবং আরও অনেক পাশ্চাত্যদেশীয় ভাষাসমূহে ব্যবহৃত হয়। আমি যে শ্রুতিমাধুর্যের কথা বলছিলাম, সেটা কেবলমাত্র বাংলা শব্দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৫:৩৪, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
৩) "-সংশ্লিষ্ট" লেজুড়টা যদি ভাল না লাগে, তাহলে আমার বর্তমান প্রস্তাব SARS-Cov-2 = "গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২"। একটু লম্বা হলেও পরিষ্কার। আমার মতে মানদণ্ড হওয়া উচিত পুরোটা বাংলা হতে হবে (বাংলাকে অগ্রাধিকার; অর্থাৎ "সিনড্রোম" নয়), ইতিমধ্যে প্রকাশিত রেফারেন্স বা আকরগ্রন্থের সাথে সাযুজ্য থাকতে হবে (যেমন syndrome=রোগলক্ষণসমষ্টি) এবং একজন বাংলাভাষী শিক্ষিত মানুষের কাছে বাংলায় স্পষ্ট বোধগম্য হতে হবে (এজন্য "সংশ্লিষ্ট" বা "সৃষ্টিকারী" শব্দটা যোগ, না দিলে খুবই খালি-খালি, "অ-বাংলা" লাগে)। ইংরেজির হুবহু আক্ষরিক নকল হওয়াটা জরুরী নয়।--অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৫:৪৪, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন

@Zaheen, আফতাবুজ্জামান, এবং ANKAN: আমি সিনড্রোমের বাংলা করার বিরোধীতা করবো। বাংলা করার ব্যাপারে বেপরোয়া হয়ে বাংলা করতে গিয়ে আমরা প্রচলন ভুলে যাই এবং তাতে যে উৎসাহ থেকে নিবন্ধ লেখা সেটিই নষ্ট হয়ে যায়, সেটি কী কেউ খেয়াল করেন? সিনড্রোম বাংলায় অত্যন্ত প্রচলিত একটি শব্দ। এই ধরনের বাংলা করতে গিয়ে আমরা কতো পাঠককে একটি আজব অভিজ্ঞতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি সেটা কেউ ভাবে না। বিশ্বকোষ লিখতে এসে আমরা যে ভাষায় লিখছি সেই ভাষার প্রচলন বাদ দিয়ে খালি কার নিজের কাছে কি শ্রুতিমধুর লাগছে সেটি প্রাধান্য দিচ্ছি। সিনড্রোমের বাংলা করাটি অক্সিজেনের বাংলা অম্লজান করার মতো একটি বিষয়। শ্বাসযন্ত্রীয়, রোগলক্ষণসমষ্টি, ইত্যাদি যে শব্দগুলো এখানে আসছে, এগুলো কী অর্থে বোঝানো হচ্ছে সেটির জন্য এই আলোচনা একটি রেফারেন্স। এখানে বাংলা নিয়ে নাছোড়বান্দা হওয়ার মতো দেখে মনে হচ্ছে বিষয়বস্তু উন্নত করা নয়, পাঠকে একটু বোঝানোর মতো চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্য দেওয়া নয়, ষাট-সত্তর দশকের কোনো চিকিৎসাবিজ্ঞান গ্রন্থ রচনা করাই আমাদের উদ্দেশ্য। SARS-Cov-2 অন্যতম প্রচলিত একটি বিষয় এখন, কয়জন এই রোগটার এমন উদ্ভট বাংলা ব্যবহার করছেন, সূত্র দিতে পারবেন? এআরডিএস তো প্রতিবর্ণীকরণ হিসেবেই পরিচিত, আমি প্রতিবর্ণীকরণ করেই শুরু করেছিলাম, পরে দেখলাম পুরোটা করার দরকার নেই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনারা সিনড্রোম শব্দটাকেও ছাড় দিলেন না। আপনাদের এই শ্বাসযন্ত্রীয়/লক্ষণসমষ্টি নিয়ে আলোচনায় নিবন্ধটি কোনো উন্নয়ন হবে না, বরং যে নিবন্ধটি লিখেছেন (আমি) সেই নিরুৎসাহিত হবে, কারণ তার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি।

অর্ণব ভাইয়ের কাছে দুটি বিষয় আলোকপাত করি। প্রথমত, আপনি যে রেফারেন্সগুলো দিচ্ছেন ঐ বইগুলোর প্রথম প্রকাশ কবে, যদি বহু আগে হয় তবে এতোদিনে বাংলায় প্রচুর বিদেশি শব্দের মিশেল ঘটেছে। আর দ্বিতীয়ত, যাকে আপনি ইংরেজি-বাংলা অভিধান বানানোর জন্য টাকা দেন, সে সবকিছুর বাংলা জোর করে হলেও করবে, কিন্তু জনসাধারণ কিন্তু ব্যবহার করার জন্য টাকা পায় না, তারা যেটি সহজে বোঝেন সেটি-ই ব্যবহার করবেন ও গ্রহণ করবেন। আপনার এসব আলোচনা থেকে আমি অনেক কিছু শিখি, আমি আপনার কাছে সেজন্য ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ, কিন্তু আমি সবসময়-ই এই জানানোর বিষয়টি নিবন্ধের ভেতরে রাখার জন্য অনুরোধ করবো, একজন পাঠককে নিবন্ধ শিরোনামে প্রচলিত কিছুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তারপর ব্যুৎপত্তি ব্যাখ্যা করা উচিত বলে আমি মনে করি, ভড়কে দিয়ে নয়। — তানভির০৮:৪৭, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন

এ ব্যাপারে আমি তানভির ভাইয়ের সাথে সম্পূর্ণ একমত। সিনড্রোমের বাংলা না করার পক্ষেই আমি। এটা অত্যন্ত প্রচলিত শব্দ। এটার বাংলা থাকলেও ভীষণভাবে অপ্রচলিত, পাঠককে খটমট বাংলা দিয়ে তাজ্জব করে না দেওয়াটাই ভালো হবে। — অংকন (আলাপ) ০৯:৫৩, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
তানভির এবং অংকন, আমি আপনাদের প্রতি সর্বোচ্চ সহমর্মিতা ও সম্মান রেখেই সম্পাদনাগুলি করেছি। আপনাদের কাউকে নিবন্ধ লিখতে নিরুৎসাহিত করা কোনও মতেই আমার উদ্দেশ্য নয়। আপনারা খোলা মনে নিবন্ধ লিখুন ও সম্পাদনা করুন। বাংলা ভাষার উন্নতমানের বিশ্বকোষ লিখতে এসে বাংলা ভাষার পরিভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া কারও কারও দৃষ্টিভঙ্গিতে "বেপরোয়া", "উদ্ভট", "নষ্ট", "খটমটে", "নাছোড়বান্দা", "ষাট-সত্তরের দশকের", "তাজ্জব করার মতো" ইত্যাদি মনে হতে পারে, সেটা আমি বুঝি। কিন্তু এগুলি একটি ভাষার মেরুদণ্ডসহ নিজ শক্তিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো জরুরী একটি ব্যাপার। বাংলা ভাষাতে চিকিৎসাক্ষেত্রের দৈনন্দিন কথ্য ও লেখ্য ভাষাতে অজস্র ইংরেজি শব্দ বাংলার মোড়কে ঢুকে আছে, এটা অনস্বীকার্য। আমার মতে এটা খুব খারাপ কিছু না। মাতৃভাষা বাংলা আর বিশ্বভাষা ইংরেজি দুই ভাষাতেই ভাল দখল থাকা একজন ব্যক্তির জন্য উপকারী। কিন্তু বাংলা উইকিপিডিয়া তো কোনও দ্বিভাষিক, মিশ্রভাষী, দো-আঁশলা বিশ্বকোষ নয়, এটা ইন্টারনেট বা আন্তর্জালে বাংলা ভাষা-র সবচেয়ে বড় বিশ্বকোষ, যার প্রভাব দিনদিন বাড়বে। উইকিপিডিয়া একদিন হতে পারে বাংলার ভবিষ্যৎ আদর্শ আকরগ্রন্থ বা রেফারেন্স। তাই আমার মতে অন্য কোনও খানে না হোক, বাংলা উইকিপিডিয়াতে অন্তত বাংলাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রথমে প্রচলিত ইংরেজি শব্দটাকে বাংলা বর্ণে লিখে তারপর সেটাকে একটু বাংলায় বুঝিয়ে দেওয়া হল আমার মতে বাংলাকে এক ধরনের অসম্মান করা। আমরা কথ্য এমনকি লিখিত বাংলাতেও "চিকিৎসাবৈজ্ঞানিক", "চিকিৎসাবিজ্ঞান" খুবই কম বলি, কিন্তু সেই স্বল্প প্রচলনের দোহাই দিয়ে আমরা এখন বাংলা উইকিতে "মেডিক্যাল", "মেডিসিন", এগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে লিখতে যাব না। আমরা দৈনন্দিন জীবনে অনেকেই হরহামেশা "ইএনটি" বলতে পারি, কিন্তু এখানে "নাক-কান-গলা" লিখব। ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে একটা দো-আঁশলা ভাষায় কথা বলে আমারা অনেকেই এক ধরনের আত্মতৃপ্তি লাভ করি, সেটা তো নতুন কথা না, আমি নিজেও বলি। উপনিবেশবাদ-পরবর্তী যুগে এসেও অনেক উচ্চশিক্ষিত বাঙালির অহংকারই হলো তারা বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে একটা জগাখিচুড়ি ভাষায় কথা বলতে পারে, যা সাধারণ নিম্নবিত্ত জনসাধারণ হয়ত কখনোই পুরোপুরি মর্ম দিয়ে বোঝে না। আমি ১১০% নিশ্চিত যে, বাংলার সাধারণ মানুষ "রোগ", "লক্ষণ", "সমষ্টি" এই সব ভাষা অপেক্ষাকৃত সহজেই বুঝতে পারবে, কিন্তু "সিনড্রোম" বোঝা তো দূরের কথা, বরং "সিনড্রোম" বলতে গিয়ে তার দাঁত ভেঙে যেতে পারে। সিনড্রোম একটি সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ ও জটিল বিদেশী গ্রিকভিত্তিক শব্দ যাকে বাংলা বর্ণের শেখ সাদী মার্কা আলখাল্লা পরিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কারও কারও কথা শুনে মনে হতে পারে রাস্তার প্রাথমিক বিদ্যালয় পাস করা রাস্তার ডাবওয়ালাও মনে হয় তার স্বল্পশিক্ষিত মায়ের কাছ থেকে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ধার করে "সিনড্রোম" শব্দের অর্থ পড়ে বুঝে এসেছে। আমি দুঃখিত, কিন্তু আপনার এই চিত্রের সাথে আমি ঠিক একমত নই। যাই হোক, আমাকে একটু উইকিছুটিতে যেতে হবে। করোনার এই দুর্যোগের এই দিনে আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১১:২৬, ২২ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
@Zaheen: আপনি যে আদর্শের দিক থেকে দেখছেন সেটি আমিও ধারণ করি, কিন্তু একই সাথে আমি এই বাস্তবতাও মানি যে, আমরা বাংলাভাষী মানুষের কাছে জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে এখানে কাজ করি। তাই সেই পাঠকদের কাছে কোনটা বোধগম্য আর কোনটি নয় সেটি তাই বিবেচনা করতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই এআরডিএস নিয়ে পাঠক পড়তে আসবে তখন-ই যখন সে এটি কোনো চিকিৎসকের কাছ থেকে শুনবেন। চিকিৎসকরা এটি এআরডিএস বা এক ধরনের সিনড্রোম-ই বলবেন কোনো রোগসমষ্টি বলবেন না। আপনি বলতে পারেন, আপনি পুনর্নির্দেশনা দিয়ে ‘রোগলক্ষণসমষ্টি’-এর ব্যাখ্যা দিয়ে উইকিপিডিয়া ভরে ফেলবেন, কিন্তু দিনশেষে ঐ পাঠকের মনে যে সিনড্রোম-ই গেঁথে থাকবে। জোরপূর্বক নামকরণ গেলানো হলেও তা থাকবে না। কেনো জানেন? ঐ অভিধান মানুষ জানে না, জানতে চায় না। বাংলা বোর্ডের পাঠ্যপুস্তকেও সিনড্রোম বাংলা করেনি। লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী সিনড্রোম পড়ে আসছে, বুঝে আসছে। উইকিপিডিয়ার পাতা স্থানান্তর করতে হয়তো যাবে না, কিন্তু কোনো পত্রিকা, সরকারী নির্দেশনা, বই, সিনড্রোম বোঝাতে রোগলক্ষণসমষ্টি ব্যবহার করেনি ও করবে বলে মনেও হয় না। এটি বাস্তবতা, আপনি আদর্শের কারণে এভাবে বলছেন, আলোচনা না করেই নিবন্ধ স্থানান্তর করে ফেলেছেন। আমিসহ দুইজন এটির বিপক্ষে থাকলেও আমাদের যুক্তির কোনো গুরুত্ব দেননি, এমন কী নিবন্ধ প্রণেতারও নয়। এর পর আপনি বলছেন, “আপনারা খোলা মনে নিবন্ধ লিখুন ও সম্পাদনা করুন”, কিন্তু সম্মান রেখেই বলছি, এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হলে সেটা থাকে না ভাই। আমাদের নীতিমালা বলে প্রচলিত ও স্বীকৃত পরিভাষা, আপনি সেটার ধার-ই ধারলেন না। ইএনটি আর সিনড্রোম এক জিনিস না। ইএনটি-এর প্রচলিত পরিভাষা নাক-কান-গলা যা সর্বত্রই ব্যবহৃত হয়। আমি মনে করি, আপনার নিবন্ধটি আগের নামে ফিরিয়ে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আপনি আরও আলোচনা করতে চাইলে আলোচনাসভাতে এটির বাংলা পরিভাষা কোনটা ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করার অনুরোধ করবো। — তানভির২১:০৪, ২৩ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
বলাই বাহুল্য যে আমি আপনার তুলে ধরা চিত্রের সাথে পুরোপুরি একমত নই। আমি যতটুকু বুঝতে পারলাম, আপনার কথার সারমর্ম হচ্ছে বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন পেশাগত ক্ষেত্রে অস্বচ্ছ, দুর্বোধ্য ইংরেজি পরিভাষার আগ্রাসন ঘটেছে (আমি একমত), ফলে বহু দশক ধরে বাংলা পরিভাষার মর্যাদার অবনমন ঘটেছে (আমি একমত), তাই বাংলিশ পরিভাষাই এখন "বাংলা" হয়ে গিয়েছে (সম্পূর্ণ দ্বিমত) এবং আপনার মতে এটা নিয়ে আমাদের কিছুই করার নেই, বরং হাত গুটিয়ে আমরা এটা সুন্দর মেনে নিবো এবং এ ধরনের প্রচলিত অস্বচ্ছ বাংলিশ পরিভাষাকে আরও বেশি করে জায়গা করে দিয়ে, আরও সুন্দর করে প্রতিষ্ঠা করতে আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করব। আপনার মতে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষই আজ স্পষ্ট, উন্নত মানের বাংলা পরিভাষা পছন্দ করে না; এটা আমি একেবারেই বিশ্বাস করি না, বরং আমার মতে বাংলার প্রতি অনুরাগহীন পেশাদারদের মুখে ইংরেজি ভাষার ফুলঝুরিতে মোহিত না হলে বাংলার মানুষ তার মুখের ভাষা বাংলাকেই বেশি অগ্রাধিকার দেবে। আপনার মতে বাংলাদেশের বাংলাভাষী মানুষ বাংলা অভিধানের বাংলা শব্দ শপছন্দ করে না, বরং ইংরেজি অভিধানে "Syndrome"-এর সংজ্ঞা দেখতে বেশি পছন্দ করে। মানে বাংলা আসলে কোনও ভাষাই নয়, একটা নিম্নশ্রেণীর দুধভাত জাতীয় ভাষা, যার ভেতরে ইংরেজি ভাষার সুন্দর সুন্দর শব্দগুলি উপনিবেশ গেড়ে ফেলেছে এবং এই ভাষিক উপনিবেশ স্থাপন আসলে বাংলার জন্য ভালোই হয়েছে। আর যারা ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার একমাত্র বিশ্বকোষে বাংলা পরিভাষাকে যথাসম্ভব সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে চায়, উন্নত বাংলা পরিভাষার মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে চায়, তারাই আসলে "জোরজবরদস্তি" করছেন, তারা বেশি "আদর্শবাদী"। বলার অপেক্ষা রাখে না, আমি আপনার সাথে এক্ষেত্রে একেবারেই একমত নই। জ্ঞানবিজ্ঞানের বিকাশের জন্য ইংরেজির হাতা ধরে ঝুলতে হবে, এটা সম্পূর্ণ ভুল। সত্যেন্দ্রনাথ বসু, যিনি ঢাকায় বসে আইনস্টাইনের সাথে কাজ করেছিলেন, যার নামে বোসন কণার নাম করা হয়েছে, তাঁর একটা কথা মনে করা উচিত - “যারা বলেন বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা সম্ভব নয়, তাঁরা হয় বাংলা জানেন না, নয়তো বিজ্ঞান জানেন না”। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৩:৩৩, ২৪ মে ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
আরেকটা ব্যাপার। আপনার বহুল প্রচলিত বাংলিশ পরিভাষাগুলিকে কিন্তু একেবারে বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে নির্বাসন করা হয়নি। এগুলিকে নিবন্ধের ভিতরে সুন্দর করে প্রচলিত প্রতিবর্ণকরণ করে লেখা আছে। কেউ যদি গুগলে এএরডিএস দিয়ে খোঁজ করেন, তাহলেও এই পাতাটা আসবে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? মানুষ বাংলাটাও জানলো, আবার ইংরেজি পরিভাষাটাও জানলো। নিবন্ধের শিরোনামে বাংলা অক্ষরের ছদ্মবেশে ইংরেজি রাখতেই হবে, এটা নিয়ে এত জোরাজুরির কি আছে? --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৩:৪৭, ২৪ মে ২০২০ (ইউটিসি)উত্তর দিন
"তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক রোগলক্ষণসমষ্টি" পাতায় ফেরত যান।