আরএইচ রক্ত গ্রুপ পদ্ধতি
আরএইচ রক্ত গ্রুপ পদ্ধতি (ইংরেজি: Rh blood group system) হল এবিও রক্ত গ্রুপ পদ্ধতি ব্যতীত অপর একটি রক্ত গ্রুপ পদ্ধতি। এটি ৪৯টি সংজ্ঞায়িত রক্ত অ্যান্টিজেন দ্বারা গঠিত।[১] এদের মধ্যে পাঁচটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – D, C, c, E ও e। d অ্যান্টিজেনের অস্তিত্ব নেই। মূলত Rh(D) এর কথাই উল্লেখ করা হয়, এটি পজিটিভ (+) ও নেগেটিভ (-) হয় এবং এবিও গ্রুপের সঙ্গে একসাথে লেখা হয়। যেমন, কোনো মানুষের রক্ত গ্রুপ এ হলে ও আরএইচ ফ্যাক্টর Rh(D)+ হলে, লেখা হয় A+ (এ পজিটিভ)। রক্তদানের সময় আরএইচ ফ্যাক্টরের কথা অবশ্যই মাথায় রাখা হয়। এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস রোগে শিশু আরএইচ ফ্যাক্টরের জন্যই আক্রান্ত হয় ও কখনও কখনও মারা যায়।
ইতিহাস ও নামকরণ
সম্পাদনা১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ও আলেকজান্ডার সলোমন ওয়েনার রেসাস ম্যাকাক বানরের রক্ত থেকে আরএইচ অ্যান্টিজেন আবিষ্কার করেন। এখান থেকেই Rh নামটি এসেছে।
ফিসার–রেস | ওয়েনার |
---|---|
Dce | R0 |
DCe | R1 |
DcE | R2 |
DCE | RZ |
dce | r |
dCe | r' |
dcE | r″ |
dCE | ry |
প্রথম ধরনের নামকরণ পদ্ধতিটি (CDE পদ্ধতি) আবিষ্কার করেছিলেন বিজ্ঞানী রোনাল্ড ফিসার ও আর রেস এবং দ্বিতীয় পদ্ধতিটি (Rh–Hr পদ্ধতি) আবিষ্কার করেছিলেন বিজ্ঞানী ওয়েনার।
অ্যান্টিজেন
সম্পাদনাআরএইচ অ্যান্টিজেন বা আরএইচ ফ্যাক্টর উপস্থিত থাকলে তাকে আরএইচ পজিটিভ (Rh+) ও না থাকলে তাকে আরএইচ নেগেটিভ (Rh-) বলা হয়। এর মধ্যে Rh+ যুক্ত মানুষ বেশি দেখা যায়। নিম্নে কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল:
ফিনোটাইপ | জিনোটাইপ (ডিএনএ) | প্রাবল্য (%) | |
---|---|---|---|
ফিসার–রেস পদ্ধতি | ওয়েনার পদ্ধতি | ||
D+ C+ E+ c+ e+ (RhD+) | Dce/DCE | R0RZ | ০.০১২৫ |
Dce/dCE | R0rY | ০.০০০৩ | |
DCe/DcE | R1R2 | ১১.৮৬৪৮ | |
DCe/dcE | R1r″ | ০.৯৯৯২ | |
DcE/dCe | R2r′ | ০.২৭৭৫ | |
DCE/dce | RZr | ০.১৮৯৩ | |
D+ C+ E+ c+ e− (RhD+) | DcE/DCE | R2RZ | ০.০৬৮৭ |
DcE/dCE | R2rY | ০.০০১৪ | |
DCE/dcE | RZr″ | ০.০০৫৮ | |
D+ C+ E+ c− e+ (RhD+) | DCe/dCE | R1rY | ০.০০৪২ |
DCE/dCe | RZr′ | ০.০০৪৮ | |
DCe/DCE | R1RZ | ০.২০৪৮ | |
D+ C+ E+ c− e− (RhD+) | DCE/DCE | RZRZ | ০.০০০৬ |
DCE/dCE | RZrY | < ০.০০০১ | |
D+ C+ E− c+ e+ (RhD+) | Dce/dCe | R0r′ | ০.০৫০৫ |
DCe/dce | R1r | ৩২.৬৮০৮ | |
DCe/Dce | R1R0 | ২.১৫৮৬ | |
D+ C+ E− c− e+ (RhD+) | DCe/DCe | R1R1 | ১৭.৬৮০৩ |
DCe/dCe | R1r′ | ০.৮২৭০ | |
D+ C− E+ c+ e+ (RhD+) | DcE/Dce | R2R0 | ০.৭২৪৩ |
Dce/dcE | R0r″ | ০.০৬১০ | |
DcE/dce | R2r | ১০.৯৬৫৭ | |
D+ C− E+ c+ e− (RhD+) | DcE/DcE | R2R2 | ১.৯৯০৬ |
DcE/dcE | R2r″ | ০.৩৩৫৩ | |
D+ C− E− c+ e+ (RhD+) | Dce/Dce | R0R0 | ০.০৬৫৯ |
Dce/dce | R0r | ১.৯৯৫০ | |
D− C+ E+ c+ e+ (RhD−) | dce/dCE | rrY | ০.০০৩৯ |
dCe/dcE | r′r″ | ০.০২৩৪ | |
D− C+ E+ c+ e− (RhD−) | dcE/dCE | r″rY | ০.০০০১ |
D− C+ E+ c− e+ (RhD−) | dCe/dCE | r′rY | ০.০০০১ |
D− C+ E+ c− e− (RhD−) | dCE/dCE | rYrY | < ০.০০০১ |
D− C+ E− c+ e+ (RhD−) | dce/dCe | rr′ | ০.৭৬৪৪ |
D− C+ E− c− e+ (RhD−) | dCe/dCe | r′r′ | ০.০০৯৭ |
D− C− E+ c+ e+ (RhD−) | dce/dcE | rr″ | ০.৯২৩৫ |
D− C− E+ c+ e− (RhD−) | dcE/dcE | r″r″ | ০.০১৪১ |
D− C− E− c+ e+ (RhD−) | dce/dce | rr | ১৫.১০২০ |
এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস
সম্পাদনাএরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস বা হিমোলাইটিক ডিজিজ অব নিউবর্ন (HDN) বা নবজাতকের কণিকাধ্বংসজনিত রোগ Rh ফ্যাক্টরের কারণে হয়ে থাকে। পিতা RhD+ ও মাতা RhD- হলে সন্তানের এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যেহেতু, মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অমরার মাধ্যমে মাতার দেহে সৃষ্ট অ্যান্টি-Rh ফ্যাক্টর সন্তানের RhD+ অ্যান্টিজেন যুক্ত লোহিত কণিকাকে ধ্বংস করে ও শিশু মারাত্মক রক্তাল্পতায় ভোগে। এছাড়া জন্মগত জন্ডিস হয়, যা পরে চিকিৎসার দ্বারা দূর করা যায়। ফলস্বরূপ মারাও যেতে পারে।
উপস্থিতি
সম্পাদনাপরিসংখ্যান অনুযায়ী সারাবিশ্বে Rh+ মানুষ ৭৫% ও Rh- মানুষ ২৫%। যেহেতু, Rh+ হল জিনের প্রকট বৈশিষ্ট্য।
বংশগতি
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Dean, Laura. Blood Groups and Red Cell Antigens [Internet].. Bethesda (MD): National Center for Biotechnology Information (US); 2005, Chapter. 7.
- ↑ "Rh System"। Canadian Blood Services at learnserology.ca। ২০২০-১০-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-১৯।
- ↑ Race RR, Mourant AE (জুন ১৯৪৮)। "The Rh chromosome frequencies in England"। Blood। 3 (6): 689–95। ডিওআই:10.1182/blood.V3.6.689.689 । পিএমআইডি 18860341।