আব্দুস সালাম (বীর প্রতীক)

বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা

মোহাম্মদ আব্দুস সালাম (জন্ম: অজানা ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [১][২]

মোহাম্মদ আব্দুস সালাম
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

মোহাম্মদ আব্দুস সালামের জন্ম সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বরায়া উত্তরভাগ গ্রামে। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে কর্নেল হিসেবে অবসর নেন। তার বাবার নাম এইচ এম আলী এবং মায়ের নাম মোমেনা খানম। তার স্ত্রীর নাম নূরনাহার সালাম। তাদের এক ছেলে। ১৯৭১ সালে ঢাকার জিন্নাহ (বর্তমান তিতুমীর) কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন মোহাম্মদ আব্দুস সালাম। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধ করেন ৩ নম্বর সেক্টরের আশ্রমবাড়ি সাব-সেক্টরে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে শায়েস্তাগঞ্জের পূর্ব পাশে কেরাঙ্গী নদীর ওপর দারাগাঁও রেলসেতু ধ্বংস করার জন্য একটি দল গঠিত হয়। মোহাম্মদ আব্দুস সালামসহ এক দল মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী এক দল মিলিশিয়া ও রাজাকারদের কৌশলে আটক করে বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দিলেন সেতু। সেতু ভাঙতে ৪০০ পাউন্ড হাই এক্সপ্লোসিভ দরকার ছিলো এবং এ দলে থাকা মোট ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রত্যেকে ১০ পাউন্ড করে বহন করে নিয়ে যান। ক্যাম্প থেকে অপারেশনস্থল ছিলো প্রায় ২৫ মাইল দূরে। সময় হিসাব করে বেলা ১২টার দিকে আশ্রমবাড়ির ক্যাম্প থেকে অ্যাম্বুলেন্স ও একটি ট্রাক্টরে আমরা সিন্দুরখান সীমান্তে চলে যান মুক্তিযোদ্ধারা। বিকেল তিনটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হেঁটে আমরা লক্ষ্যস্থলে পৌঁছান মুক্তিযোদ্ধারা। সেতুর দুই পাশেই ছিলো পাহারা। সেতুটি ছিলো ৬০-৭০ গজ দীর্ঘ। সেখানে ঘূর্ণমান সার্চলাইট জ্বালানো। কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে একটি দল গেল পশ্চিম পাশে এবং অন্য দল গেল পূর্ব পাশে। একটি দল থাকল বিস্ফোরক লাগানোর জন্য। সেতুর কাছে গিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পাহারারত দুই মিলিশিয়াকে কৌশলে আটক করার পর এক্সপ্লোসিভ দল সেতুতে এক্সপ্লোসিভ লাগাতে শুরু করল। এক্সপ্লোসিভ লাগানো শেষ। সেফটি কর্ডে আগুন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটল। ভেঙে পড়তে থাকল লোহার গার্ডার। সেতুটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেল।

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২৫-০৪-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449