আবায়া
"আ'বায়া" (আরবি: عباءة) অথবা শুধুমাত্র আ'বা আলখাল্লা হলো একটি সাধারণ ঢোলা বোরকাজাতীয় পোশাক, যা উত্তর আফ্রিকা ও আরব উপদ্বীপেসহ মুসলিম বিশ্বের নারীসমাজের একাংশ পড়ে থাকে। [১] ঐতিহ্যবাহী আবায়াত কালো রঙের হয়ে থাকে এবং একটি বৃহৎ বর্গাকৃতির বুনন বা কাফতান মাথা বা কাঁধ থেকে ঝুলে থাকে। মাথা, হাত ও পা ব্যতীত আবায়া পুরো শরীর ঢেকে রাখে। আবায়া নেকাব সহ পড়া যায়, যেখানে চোখ ছাড়া মুখের অন্য কোন অংশ দেখা যায় না। কিছু নারী হাত ঢাকার জন্য হাতে হাতমোজাও পড়ে থাকে।
ইন্দোনেশীয় ও মালয়েশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক কেবায়া নামটি আবায়া থেকেই এসেছে।
যৌক্তিকতাসম্পাদনা
কোরানের একটি আয়াত থেকে অনেক সময় "আবায়া"-এর যৌক্তিকতা টানা হয়, "হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।" [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৯ ]
বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠি আছে এমন দেশেই তাই আবায়া বেশি জনপ্রিয়, হাত এবং মুখমণ্ডল ব্যতীত শরীরে অন্য অংশ যাতে কেউ যাতে না দেখে তাই আবায়া পড়া হয়।
দেশসমূহসম্পাদনা
কিছু আরব রাষ্ট্রের বাইরে যেমন সৌদি আরবে আবায়া খুব বেশি মুসলিম নারীরা পড়ে না। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মত দেশে এটা দুর্লভ বলা চলে। আবার বিভিন্ন দেশে আবায়া ভিন্ন ভিন্ন পোশাককে বুঝায়। পার্সিয়ান গালফের আরব রাষ্ট্রসমূহে আবায়ার রঙ কালো হয়ে থাকে, অন্যদিকে তুর্কি আবায়া আবার রঙিন হয়।
শৈলীসম্পাদনা
ভিন্ন নাম থাকা সত্ত্বেও সব ধরনের আবায়ার মূল উদ্দেশ্য একই, শরীর ঢাকা। সাম্প্রতিককালের মডেলসমূহে জরজেট, শিফন, ক্রেফের মত পাতলা কাপড় থেকে কাটা কাফতান। সামনে খোলা বা সামনে লাগানো নামেও দুধরনের আবায়া প্রচলিত আছে। অঞ্চলভেদেও আবায়ার শৈলীর পরিবর্তন হয়। কিছু আবায়াতে কালো বুনের উপর সুচিকর্ম থাকে, আবার কিছু উজ্জ্বল রঙের হয় এবং তার উপর বিভিন্ন শিল্পকর্মের দেখা মেলে।
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ইয়ারউড, ডোরিন (১৯৭৮)। The Encyclopedia of World Costume(বিশ্বপরিচ্ছদের বিশ্বকোষ)। নিউ ইয়র্ক: বোনানজা বই। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন 0-517-61943-1।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- কৌর-জোনস, প্রিয়া। "সৌদি আবায়াকে নতুন করে সাজানো। " বিবিসি। ১২ মে ২০১১।
- আবায়ার ইতিহাস। "আবায়ার ইতিহাস।"