আধুনিক দক্ষিণ আরবি ভাষাসমূহ

আধুনিক দক্ষিণ আরবি ভাষা (পূর্ব-দক্ষিণ সেমেটিক অথবা পূর্ব-দক্ষিণ আরবি) মূলত আরব উপদ্বীপের নিবাসী, ইয়েমেন এবং ওমান প্রভৃতি দেশের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এর মুখের ভাষা। এদের সাথে ইথিওপিয়ান সেমেটিক ভাষাও একই গোত্রে পড়ে, এবং এরা একত্রে দক্ষিণ সেমেটিক উপশাখা গঠিত হয় যা আফ্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের সেমেটিক শাখার অন্তর্গত।

আধুনিক দক্ষিণ আরবি ভাষা
ভৌগোলিক বিস্তারইয়েমেন, ওমান
ভাষাগত শ্রেণীবিভাগআফ্রো-এশিয়া
উপবিভাগ
গ্লটোলগmode1252[১]
{{{mapalt}}}

শ্রেনীবিন্যাস সম্পাদনা

আলেকজান্ডার মিলিতারেভ তার গ্লটোক্রনোলজি-ভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাসে আধুনিক দক্ষিণ আরবীয় ভাষাকে উত্তর সেমিটিক শাখার পরিবর্তে (যেখানে সকল সেমিটিক ভাষা অন্তর্ভুক্ত), দক্ষিণ সেমিটিক শাখা হিসেবে উপস্থাপন করেন [২][৩] এ ভাষাকে বর্তমানে প্রাচীন দক্ষিণ আরবীয় ভাষা হতে পৃথক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যাকে একসময় একই ভাষা পরিবারের সদস্য মনে করা হত।

ব্যাকরণ রীতি সম্পাদনা

আধুনিক দক্ষিণ আরবীয় ভাষাতে সুপ্রাচীন সেমিটিক রীতির সাথে সাদৃশ্য রয়েছে, বিশেষ করে উচ্চারণ ভঙ্গিমায়। এ ভাষায় অবিশুদ্ধ সেমিটিক ভাষার, কার্যত ঊষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি সংরক্ষিত হয়; যেমন-"খেজুর" শব্দটির "খ" এর উচ্চারণ।

এছাড়া আলেকজান্ডার মিলিতারেভ আধুনিক দক্ষিণ আরবীয় ভাষাতে একটি কুশ অপ্রভংশ সুত্রের সন্ধান পান, তিনি এ ব্যাপারে কুশ ভাষাভাষীদের আরব উপদ্বীপ এলাকায় সেমিটিক ভাষাভাষীদের সাথে বসবাস কে কারণ হিসেবে দেখান (Militarev 1984, 18-19; cf. এবং Belova 2003 সুত্রদ্বয় দ্রষ্টব্য)। ভচলাভ ব্লাসিক এর মতে, দক্ষিণের সেমিটিক ভাষাভাষীরা আফ্রিকা থেকে আগত প্রতিবেশিদের কুশ ভাষার সাথে নিজেদের ভাষায় স্থান দেয়। এ থেকে দক্ষিণ আরবীয় ভাষার উদ্ভব হয় এবং কুশ ভাষাভাষীরা পরবর্তীতে আফ্রিকার অন্তরীপে আর ফিরে যাননি। ব্লাসিক মধ্য আরবে প্রাপ্ত শিলালিপি এর বিশ্লেষণ উল্ল্যেখ করেন (উদ্ধৃতি Anati (1968, 180-84) দ্রষ্টব্য), যেখানে বলা হয় বর্ম হাতে নিয়ে "ডিম্বাকৃতি মাথার" মানুষ এর চিত্র গুহার দেয়ালে খোদাই করা আছে। সেখানে পাওয়া গুহাচিত্র এবং আরবীয় কুশদের মধ্যে যোগসুত্র পাওয়া যায়, যাদের কথা বাইবেলের প্রাচীন নিদর্শনে বলা হয়েছিল। এমনকি তারাও উপরে বর্ণিত বর্ম হাতেবহন করছিল।

প্রকারভেদ সম্পাদনা

  • মেহরি: বৃহত্তম আধুনিক দক্ষিণ আরবি ভাষা, যাতে ইয়েমেনে ৭০,০০০ এর অধিক লোক কথা বলে। এছাড়া ওমানে বসবারত ৫০,০০০ এর অধিক লোক কথা বলে, এবং প্রায় ১৫,০০০ লোক কুয়েতে সরে গিয়েছিলেন, তারাও এ ভাষায় কথা বলেন। সবমিলিয়ে ১৩৫,৭৬৪ জন (SIL 2000). মেহরি ভাষাভাষীদের "মেহরা" বলা হয়।
  • সোকোত্রী: সোকোত্রা দ্বীপে বসবারতরা আরেকটি জনবহুল ভাষা যারা আরবি ভাষার প্রভাবে ইয়েমেনের মূল ভূখণ্ড হতে বিলুপ্ত। ১৯৯০ সালের আদমশুমারি অনুসারে ইয়েমেনে, ৫৭,০০০ লোক এ ভাষায় কথা বলেন। সারা বিশ্বে এ সংখ্যা প্রায় ৬৪,০০০ অনুমান করা হয়।
  • সেহেরী: অনেক সময় পাহাড়ের জিব্বালী নামেও ডাকা হয়, আনুমানিক ২৫,০০০ লোকের ভাষা ;সর্বাধিক পরিচিত "বিদ্রোহীদের ভাষা" হিসেবে যা ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর মাঝামাঝিতে ওমানের "ধোফার রাজবংশের" সাথে ইয়েমেনের সীমান্তঞ্চলে যুদ্ধে চিহ্নিত হয়।
  • বাথারি: ২০০ জন প্রতিষ্ঠিত ভাষাভাষী রয়েছে।
  • হারসুসি: ওমানে ১০০০-১২০০ জন প্রতিষ্ঠিত ভাষাভাষী রয়েছে।
  • হবোইয়োত: ওমানে ১০০ জন প্রতিষ্ঠিত ভাষাভাষী রয়েছে।

তথ্যসংযোগ সম্পাদনা

  1. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "আধুনিক দক্ষিণ আরবি"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  2. http://www.krugosvet.ru/articles/77/1007711/1007711a1.htm
  3. Militarev, Alexander, "Once more about glottochronology and the comparative method: the Omotic-Afrasian case".

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  • Johnstone, T.M. 1975. The Modern South Arabian Languages. Afroasiatic Linguistics 1/5:93-121 [1-29
  • Johnstone, T.M. 1977. Ḥarsūsi Lexicon and English-Ḥarsūsi Word-List. London: Oxford University Press.
  • Johnstone, T.M. 1981. Jibbāli Lexicon. London: Oxford University Press.
  • Johnstone, T.M. 1987. Mehri Lexicon and English-Mehri Word-List. London: School of Oriental and African Studies.
  • Nakano, Aki’o. 1986. Comparative Vocabulary of Southern Arabic: Mahri, Gibbali, and Soqotri. Tokyo: Institute for the Study of *Languages and Cultures of Asia and Africa.
  • Nakano, Aki’o. 2013. Hōbyot (Oman) Vocabulary: With Example Texts. Ed. Robert Ratcliffe. Tokyo: Research Institute for Languages and Cultures of Asia and Africa.
  • Naumkin, Vitaly, et al. 2014b. Corpus of Soqotri Oral Literature. Volume 1. Leiden: Brill.
  • Rubin, Aaron D. 2010. The Mehri Language of Oman. Leiden: Brill.
  • Rubin, Aaron D. 2014. The Jibbali Language of Oman: Grammar and Texts. Leiden: Brill.
  • Watson, Janet C.E. 2012. The Structure of Mehri. Wiesbaden: Harrassowitz.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা