আদম চূড়া অভয়ারণ্য
আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য হলো শ্রীলঙ্কার একটি প্রকৃতি সংরক্ষন এলাকা। আয়তনের দিক থেকে এটি শ্রীলঙ্কার ৫০টি অভয়ারণ্যের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম।[২]
আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী Ia (কঠোর প্রকৃতিক সংরক্ষণ) | |
অবস্থান | মধ্য এবং সাবরাগমুওয়া প্রদেশ, শ্রীলঙ্কা |
নিকটবর্তী শহর | রত্নাপুরা |
স্থানাঙ্ক | ৬°৪৮′৪৭″ উত্তর ৮০°২৯′০৪″ পূর্ব / ৬.৮১৩০৬° উত্তর ৮০.৪৮৪৪৪° পূর্ব |
আয়তন | ২২,৩৭৯.১ হেক্টর (৮৬.৪০৬ বর্গমাইল) |
স্থাপিত | ২৫ অক্টোবর ১৯৪০ |
কর্তৃপক্ষ | বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বিভাগ |
বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | 1203-001: "আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য (পিডব্লিউপিএ)" (২০১০ হতে) (শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি এলাকার অন্তর্ভূক্ত অংশ হিসেবে)[১] |
অবস্থান সম্পাদনা
এটি শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রভাগে অবস্থিত সাবরাগমুওয়া এবং মধ্য প্রদেশের মধ্যবর্তী সাবরাগমুওয়া পর্বতমালার অন্তর্গত আদম চূড়া পর্বত ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
পরিসীমা সম্পাদনা
আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্যের জন্য কোন নির্দিষ্ট সীমানা নেই। বেশিরভাগ সীমানা সরকারী এবং বেসরকারী খাতের মালিকানাধীন গাছপালা দ্বারা চিহ্নিত করা। পূর্ব সীমানা পরিষ্কার এবং পেড্রোটালাগালা পার্বত্য অঞ্চল এবং হর্টন সমভূমি জাতীয় উদ্যানের সাথে সংযুক্ত।
ইতিহাস সম্পাদনা
আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বৃষ্টবহুল অরণ্য যা শ্রী পাদা (আদামের শিখর) পর্বতের চারপাশে ২২,৩৭৯ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।[৩] শ্রীলঙ্কায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে (১৮১৫-১৯৪৮) চা বাগানের জন্য জমি পাওয়ার জন্য আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্যের অন্তর্গত একটি বিশাল বনাঞ্চল কেটে ফেলা হয়েছিল; যেমন নুওয়ারা এলিয়া জেলায় এখনও কর্মক্ষম রয়েছে এমন বিশাল চা উত্পাদনকারী এলাকাটি পূর্বে এই বনভূমির অংশ ছিলো। আদম চূড়া বনেে অবশিষ্ট অংশকে ১৯৪০ সালের ২৫ অক্টোবর বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বিবরণ সম্পাদনা
অরণ্যের সমোন্নতি রেখাগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,০০০ থেকে ৭,৩৬০ ফুট পর্যন্ত বিস্তৃত; ফলশ্রুতিতে দ্বীপের অন্যান্য প্রাকৃতিক সংরক্ষিত এলাকার চেয়ে এটি অস্বাভাবিক ভৌগলিক গঠনের অধিকারী। বেনা সামানালা (৬,৫৭৯ ফুট), দোতালুগালা, ডেটানাগালা, এই অভয়ারণ্যের কিছু উঁচু পর্বত। এছাড়াও এটি কেলানি নদী, কালু গঙ্গা, ওয়ালভে নদী এবং মহাবলী নদীর অনেক উপনদীর জন্মস্থান যেগুলো অভয়ারণ্যের অভ্যন্তরে ডোটালু জলপ্রপাত, গেরাডি জলপ্রপাত, গালাগামা জলপ্রপাত (৬৫৫ ফুট) এবং মাপানানা জলপ্রপাত (৩৩০ ফুট) এর মতো জলপ্রপাত তৈরি করে।
অভয়ার্যে প্রবেশের জন্য ৩টি পথ - হ্যাটন রুট, কুরুভিটা রুট এবং পালাবাদালা রুট রয়েছে যেগুলো বৌদ্ধ ভক্তরা এবং অন্যান্য পর্যটকরা আদম চূড়ায় পৌঁছানোর জন্য ব্যবহার করে থাকে: এদের মধ্যে কুরুভিটা এবং পালাবাদালা রুট ঠিক অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। পুরো বনাঞ্চলটি শ্রীলঙ্কার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন। এই বনের নিজস্বতা বজায় রাখার জন্য অভয়ারণ্যের অভ্যন্তরে পর্যটকদের থাকা বা ব্যবহারের জন্য কোনও লজ, বাংলো বা এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তবে শ্রীলঙ্কার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে পর্যটকদের অভয়ারণ্যে প্রবেশে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। বৃষ্টির সময় অভয়ারণ্যে প্রবেশ করা পর্যটকদের নিজের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ; কারণ অপ্রত্যাশিত বর্ষণ এবং তাৎক্ষণিক বন্যা জীবন-ঝুঁকির মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
প্রাণী সম্পাদনা
এখানে শ্রীলঙ্কার সর্বশেষ সিক্ত অঞ্চলের হাতির প্রজাতিটি দেখা যায়; যাদের ৩০-৫০টি বর্তমানে এখানে অবশিষ্ট রয়েছে।[৪] ২০০৯ সালের অক্টোবরে বিশ্বের বিরল প্রজাতির ব্যাং অ্যাডেনোমাস ক্যান্ডিয়ানাস (Adenomus kandianus) এই অভয়ারণ্যে পুনরাবিষ্কৃত হয়, যেটিকে ১৩৩ বছর ধরে বিলুপ্ত বলে মনে করা হচ্ছিলো।
আরও দেখুন সম্পাদনা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "World Heritage Committee inscribes two new sites on World Heritage List"। unesco.org। UNESCO। জুলাই ৩০, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১০।
- ↑ "Article from Divaina"। ২০০৯-১১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-০২।
- ↑ "Peak Wilderness"। touristdirectory.lk (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Peak Wilderness Sanctuary" (এইচটিএমএল) (ইংরেজি ভাষায়)। Wildlife Tours Sri Lanka। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩।