আচার্য হরিহর (৮ মার্চ ১৮৭৯ - ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১)[] উড়িষ্যার একজন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক এবং সমাজকর্মী ছিলেন। সত্যবাদী বন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে সত্যবাদীর সাহিত্যকর্মে তার সক্রিয় ও সফল অংশগ্রহণ ছিল।[] তিনি ভগবদ্গীতা এবং শিশুদের সহজ প্রথম ব্যাকরণ বইটি অনুবাদ করেছিলেন।[]

আচার্য

হরিহর দাস
জন্ম
হরিহর ব্রহ্মা

(১৮৭৯-০৩-০৮)৮ মার্চ ১৮৭৯
শ্রীরামচন্দ্রপুর, দক্ষিগোপাল, পুরী জেলা
মৃত্যু২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১(1971-02-21) (বয়স ৯১)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাশিক্ষক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
ভগবদ্গীতা অনুবাদ, শিশুর সহজ প্রথম ব্যাকরণ
পিতা-মাতাশ্রদ্ধা দেবী ও মহাদেব ব্রহ্মা

জন্ম ও শৈশব

সম্পাদনা

আচার্য হরিহর ৮ মার্চ ১৮৭৯ সালে পুরি জেলার দক্ষিগোপালার নিকটস্থ শ্রীরামচন্দ্রপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম শ্রদ্ধা দেবী এবং পিতার নাম মহাদেব ব্রহ্মা। তিনি চাহালি গ্রামে বাল্যশিক্ষা লাভ করেন এবং পরে পুরী জেলা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তারপর রাভেনসা কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে আইন অধ্যয়নের জন্য তিনি কলকাতায় যান। পণ্ডিত গোপবন্ধু দাস, পণ্ডিত নীলকণ্ঠ দাস প্রভৃতিগণ তাঁর শৈশবের বন্ধু ছিলেন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

আইন অধ্যয়ন করে কলকাতা থেকে ফিরে এসে তিনি পুরী জেলা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। তারপর নীলগরী গদজাত বিদ্যালয়ের শিক্ষক হন, পরবর্তীতে কটকের পাইরিমোহন একাডেমী স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ততদিনে পণ্ডিত গোপবন্ধু দাস, পণ্ডিত নীলকণ্ঠ, গোদাবরীশ বাবু এবং নন্দকিশোর বাবু বন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ও সেখানে তারা শিক্ষকতা শুরু করেন। আচার্য হরিহর ১৯২১ সালে বন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হন। তিনি ছাত্রদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন এবং তারা তাঁকে 'আচার্য' বলে ডাকত। পরে আচার্য হরিহর "বিধবা আশ্রম" প্রতিষ্ঠা করেন।[]

তিনি ওড়িশায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯২২ সাল থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত তিনি স্বরাজ্য সংগ্রামের কারণে বন্দী ছিলেন। আচার্য হরিহর প্রেসিডেন্ট হিসাবে রাজনৈতিক কর্মীদের কেন্দ্রপাড়া সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৩০ সালে লবণ সত্যগ্রহের সময় তিনি বালাসোর ইঞ্চুদির প্রধান ব্যক্তি হিসাবে গ্রেপ্তার হন। তিনি বনরা সেনা গঠন করেন। ১৯৪২ সালে তিনি ভারত ছাড় আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে হাজারীবাগ কারাগারে বন্দি থাকাকালীন তিনি ভাগবত গীতা ওড়িয়া ভাষায় অনুবাদ করেন।[]

পাইরিমোহন একাডেমিতে কর্মরত থাকাকালীন, তিনি শিশুর সহজ প্রথম ব্যাকরণ নামে ইংরেজিতে একটি ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।[] মহাত্মা গান্ধীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সংঘ, আশ্রম, খাদী কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা করেছিলেন।

মৃত্যু

সম্পাদনা

১৯৭১ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ৯১ বছর বয়সে আচার্য হরিহর মৃত্যুবরণ করেন।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "আচার্য হরিহর" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ওড়িশা সরকার। ৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  2. "An experiment in nationalist education: Satyavadi school in Orissa(1909-1926) (Krishan Shri)"academia.edu। ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১২Acharya Harihar Das (1881-1971), a serving teacher who joined Satyavadi in 1912. 
  3. ଓଡ଼ିଆ ସାହିତ୍ୟର ସଂକ୍ଷିପ୍ତ ପରିଚୟ (ওড়িয়া সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি), ড. বৃন্দাবনচন্দ্র আচার্য, পৃষ্ঠা: ২২৫