আইজিবিপি, বাংলাদেশ

আইজিবিপি, বাংলাদেশ (ইন্টারন্যাশনাল জিয়োস্ফিয়ার-বায়োস্ফিয়ার প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ) হচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থিত বহুবিষয়ক গবেষণা সংস্থা যা আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান কাউন্সিল, ইউরোপিয়ান কমিশন এবং নেদারল্যান্ডের বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত।[১] ১৯৮৬ সালে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান কাউন্সিল আইজিবিপি প্রতিষ্ঠা করে। স্টকহোমের ১৯৮৭ সালে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্টকহোমের রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সাইন্সের কার্যালয়ে এর সচিবালয় স্থাপন করা হয়। ১৯৮৯ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমীর আওতায় আইজিবিপি'র শাখা অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয়। আইজিবিপি বাংলাদেশের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে সাইফউদ-দীন চৌধুরী দায়িত্ব পালন করেন । ১৬ সদস্যের জাতীয় কমিটি বাংলাদেশ শাখার কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী সভাপতি আইজিবিপি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্বপালন করেন।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পাদনা

পরিবেশের ভৌত, রাসায়নিক এবং জীবজ প্রক্রিয়াসমূহের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় ও ব্যাখ্যা করা আইজিপির মূল উদ্দেশ্য। সমগ্র বিশ্বের পরিবেশের উপর মানুষের কর্মকাণ্ড কীভাবে এবং কি হারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে তা নির্ণয় করা এবং এসব সমস্যা সমাধানে দরকারী পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া আইজিবিপির অন্যতম উদ্দেশ্য।

কর্মকাণ্ড সম্পাদনা

বিশ্বের ৭২টি দেশে আইজিবিপি'র আঞ্চলিক শাখা আছে। প্রতিটি শাখার জন্যে একটি করে জাতীয় কমিটি আছে। এসব কমিটির পরামর্শে আইজিবিপি প্রাসঙ্গিক গবেষণা কর্ম পরিচালনা করে। এই দেশভিত্তিক আঞ্চলিক কমিটিগুলো আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ অনুদান প্রদান করে।

১৯৯০ সালে বাংলাদেশের জাতীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। জাতীয় কমিটিটি গবেষণার সুবিধার্থে কয়েকটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করে। সামুদ্রিক বাস্ত্তসংস্থান এবং বায়ুমন্ডলের পারস্পরিক সম্পর্ক, উদ্ভিজ্জ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতা, জৈবভূওরাসায়নিক (বায়োজিওকেমিক্যাল) প্রক্রিয়ার গতিশীলতা বাস্ত্তসংস্থানিক তন্ত্রসমূহের সক্রিয়তা, এবং বাস্ত্ততন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এই দল গুলো কাজ করে। বিভিন্ন দেশে গবেষণা কাজ চালানোর জন্যে আইজিবিপি কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি ও কাঠামো রয়েছে। বিশ্ব রাজনীতির কোনোপ্রকার প্রভাব আইজিবিপি'র কর্ম ও গবেষণা পরিচালনায় নাই, তবে এই সংস্থা দেশের নীতি নির্ধারণে নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক তথ্য যুগিয়ে সহায়তা প্রদান করে থাকে।

বাংলাদেশ অধিকাংশ সময়ে ভৌগোলিক অবস্থান, ভূপ্রকৃতি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক পরিবেশগত কারণে বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। ফলে সংস্থাটি জটিল বায়ুমন্ডল, ভূ-তাত্ত্বিক গঠনপ্রকৃতি, ভূপ্রাকৃতিক ভূগোল এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনাচার সংক্রান্ত বিষয়ের উপর গবেষণা পরিচালনায গুরুত্ব দেয় যাতে সংগৃহীত বৈজ্ঞানিক তথ্য খরা, বন্যা,ঘূর্ণিঝড়,জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সহায়ক হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "আইজিবিপি, বাংলাদেশ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৯