অ্যাস্ট্রোল্যাব (প্রাচীন গ্রিকἀστρολάβος এস্ট্রোলাবোস; আরবি: ٱلأَسْطُرلاب আল-আসতুরলাব; ফার্সি: اِستاره یاب আসতারা ইয়াব) একটি বিস্তৃত নত-পরিমাপক এবং একটি অ্যানালগ ক্যালকুলেটর যেখানে জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং কাজ করতে সক্ষম একটি যন্ত্র। ঐতিহাসিকভাবে, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং নাবিকরা একটি দিগন্ত দেহের দিগন্তের ওপরের দৈর্ঘ্যের উচ্চতা পরিমাপ করতে এটি ব্যবহার করতো। এটি শাস্ত্রীয় প্রাচীনত্ব, ইসলামিক স্বর্ণযুগ,[২] ইউরোপীয় মধ্যযুগ এবং আবিষ্কারের যুগের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল।

২০১৩ সালে ইরানের তাবরিজে তৈরি একটি আধুনিক অ্যাস্ট্রোল্যাব।
অক্সফোর্ডের ইতিহাসের জাদুঘরে রাখা মধ্যযুগীয় (১৪৮০সাল) ইসলামী জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক গোলকীয় অ্যাস্ট্রোল্যাব। সম্ভবত সিরিয়া বা মিশর হতে [১]

ইতিহাস

সম্পাদনা

প্রাচীন বিশ্ব

সম্পাদনা

হেলেনিস্টিক সভ্যতায় ২২০ এবং ১৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পেরগা-র আপোল্লোনিয়ুস একটি প্রাথমিক অ্যাস্ট্রোল্যাব আবিষ্কার করেন। অ্যাস্ট্রোল্যাব ছিল প্ল্যানিসফিয়ার এবং ডিওপ্ট্রার সমন্বয়, একটি অ্যানালগ ক্যালকুলেটর যা জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। প্রাচীন বিশ্বে একই উদ্দেশ্যে আর্মিলারি গোলক ব্যবহৃত হত।

আলেকজান্দ্রিয়ার থিওন (c. 335 - c. 405) অ্যাস্ট্রোল্যাবর উপর একটি বিস্তারিত গ্রন্থ লিখেছিলেন এবং লুইস বলেন যে টেট্রাবিব্লোসে নথিভুক্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণগুলি করার জন্য টলেমি একটি অ্যাস্ট্রোল্যাব ব্যবহার করেছিলেন।[৩] প্লেন অ্যাস্ট্রোল্যাবের আবিষ্কারটি কখনও কখনও ভুলভাবে থিওনের কন্যা হাইপেশিয়ার বলে দাবী করা হয় তবে এটি কমপক্ষে ৫০০ বছর আগে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা যায়। বাইজেন্টাইন যুগ জুড়ে গ্রীক-ভাষী বিশ্বে অ্যাস্ট্রোল্যাব ব্যবহার অব্যাহত ছিল। ৫৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে, খ্রিস্টান দার্শনিক জন ফিলোপোনাস গ্রীক ভাষায় অ্যাস্ট্রোল্যাবের উপর একটি গ্রন্থ লিখেছিলেন, যা যন্ত্রটির উপর বিদ্যমান প্রাচীনতম গ্রন্থ।[৪]মেসোপটেমিয়ার বিশপ সেভেরাস সেবোখ্টও ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সিরিয়াক ভাষায় অ্যাস্ট্রোল্যাব নিয়ে একটি গ্রন্থ লিখেছিলেন।[৫]

মধ্যযুগ

সম্পাদনা
 
পারস্য বিজ্ঞানী নাসির আল-দীন আল-তুসি দ্বারা জ্যোতির্বিজ্ঞানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার একটি গ্রন্থ
 
একটি ১৮ শতকের পারস্য অ্যাস্ট্রোল্যাব

মধ্যযুগীয় ইসলামী বিশ্বে জ্যোতির্বিজ্ঞান আরও বিকশিত হয়েছিল, যেখানে মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নকশার ক্ষেত্রে কৌনিক স্কেল প্রবর্তন করেছিলেন,[৬] দিগন্তে অজিমুথকে নির্দেশ করে এমন বৃত্ত যুক্ত করেছিলেন। [৭] এটি সমগ্র মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল, মূলত জাহাজ চালানোর সহায়তা এবং মক্কার দিকনির্দেশনা কিবলা সন্ধানের উপায় হিসাবে এটি ব্যবহৃত হতো। অষ্টম শতাব্দীর গণিতবিদ মুহাম্মদ আল-ফাজারী প্রথম ব্যক্তি যিনি ইসলামী বিশ্বে অ্যাস্ট্রোল্যাব নির্মাণের জন্য কৃতিত্বপ্রাপ্ত হন। [৮]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Morrison, Robert G. (২০১৩)। "Islamic Astronomy"The Cambridge History of Science। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 115। আইএসবিএন 978-0-521-59448-6। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৮ 
  2. In the Islamic world, it was used to navigate deserts, then oceans, and to calculate the direction to Mecca.
  3. Lewis, M. J. T. (2001), Surveying Instruments of Greece and Rome, Cambridge University Press
  4. Modern editions of John Philoponus' treatise on the astrolabe are De usu astrolabii eiusque constructione libellus (On the Use and Construction of the Astrolabe), ed. Heinrich Hase, Bonn: E. Weber, 1839, OCLC 165707441 (or id. Rheinisches Museum für Philologie 6 (1839): 127–71); repr. and translated into French by Alain Philippe Segonds, Jean Philopon, traité de l'astrolabe, Paris: Librairie Alain Brieux, 1981, OCLC 10467740; and translated into English by H.W. Green in R.T. Gunther, The Astrolabes of the World, Vol. 1/2, Oxford, 1932, OL 18840299M repr. London: Holland Press, 1976, OL 14132393M pp. 61–81
  5. O'Leary, De Lacy (১৯৪৮)। How Greek Science Passed to the Arabs। Routledge and Kegan Paul।  "The most distinguished Syriac scholar of this later period was Severus Sebokht (d. 666–7), Bishop of Kennesrin. [...] In addition to these works [...] he also wrote on astronomical subjects (Brit. Mus. Add. 14538), and composed a treatise on the astronomical instrument known as the astrolabe, which has been edited and published by F. Nau (Paris, 1899)."
    Severus' treatise was translated by Jessie Payne Smith Margoliouth in R.T. Gunther, Astrolabes of the World, Oxford, 1932, pp. 82–103.}}
  6. See p. 289 of Surveying and navigational instruments from the historical standpoint. 
  7. The Mathematics of Egypt, Mesopotamia, China, India, and Islam: a Sourcebook 
  8. Richard Nelson Frye: Golden Age of Persia. p. 163