অ্যাডলিন চ্যাপম্যান

অ্যাডলিন মেরি চ্যাপম্যান ( জন্ম নাম চ্যাপম্যান; ২৭শে আগস্ট ১৮৪৭ - ২০শে জানুয়ারি ১৯৩১, প্রথম বিবাহিত নাম অ্যাডলিন গেস্ট), ছিলেন মহিলাদের ভোটাধিকারের জন্য একজন ইংরেজ প্রচারক। তিনি একজন ভোটাধিকারী ছিলেন এবং ভোটাধিকারীদের জঙ্গিবাদের বিরোধিতা করেছিলেন। উইমেন সোশ্যাল অ্যাণ্ড পলিটিক্যাল ইউনিয়নের প্রারম্ভিক সদস্য হওয়ার পর, তিনি ১৯০১ সাল থেকে সেন্ট্রাল সোসাইটি ফর উইমেনস সাফ্রেজের সদস্য হয়েছিলেন। প্রধান ভোটাধিকার সংস্থা ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ উইমেনস সাফ্রেজ সোসাইটিজ (এনইউডব্লিউএসএস) -এর অকার্যকারিতা হিসাবে তিনি যা দেখেছিলেন, তাতে অসন্তুষ্ট হয়ে তিনি নিউ কনস্টিটিউশনাল সোসাইটি ফর উইমেন'স সাফ্রেজের (এনসিএস) প্রতিষ্ঠা করেন, তিনি এর সভাপতিও ছিলেন।[১]

অ্যাডলিন চ্যাপম্যান
জন্ম২৭শে আগস্ট ১৮৪৭
মৃত্যু২০ জানুয়ারি ১৯৩১(1931-01-20) (বয়স ৮৩)
জাতীয়তাইংরেজ
অন্যান্য নামঅ্যাডলিন মেরি গেস্ট
পরিচিতির কারণনারী ভোটাধিকারের প্রচারক
দাম্পত্য সঙ্গী

এনসিএস-এর লক্ষ্য ছিল সরকারকে লবি করা, শাসক লিবারেল পার্টির প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রচারণা করা (যেহেতু দলটি তখন ব্যাপকভাবে নারীদের ভোটাধিকার বিরোধী ছিল) এবং স্পষ্টভাবে "অন্যান্য ভোটাধিকারীদের প্রকাশ্য সমালোচনা থেকে বিরত থাকা"। ১৯১৬ সাল থেকে, এনসিএস-এর সভাপতি হিসাবে, তিনি মহিলাদের সাংবিধানিক ভোটাধিকার সমিতির পরামর্শদাতা কমিটিতে যোগ দিয়েছিলেন: পরামর্শদাতা কমিটির লক্ষ্য সফলভাবে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯১৮ সালে বাস্তবায়িত হয়েছিল, যার ফলে ৩০ বছরের বেশি বয়সী মহিলারা প্রথমবার ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছিলেন। কিছু নারীর ভোটের অধিকার প্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে ১৯১৮ সালের জুন মাসে এনসিএস বিলুপ্ত হয়।[২]

জীবনী সম্পাদনা

অ্যাডলিন চ্যাপম্যান ১৮৪৭ সালের ২৭শে আগস্ট ইংল্যাণ্ডের সারের রোহ্যাম্পটনে একজন ধনী ব্যাংকার ডেভিড বার্কলে চ্যাপম্যান (১৭৯৯ - ১৮৯১), এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মারিয়ার (বিবাহপূর্ব চ্যাটফিল্ড; জন্ম ১৮১০) কাছে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রোহ্যাম্পটনের একটি বড় বাড়ি ডাউনশায়ার হাউসে লালিত-পালিত হন এবং শিক্ষয়িত্রীদের দ্বারা তাঁর অনেক ভাইবোনের সাথে বাড়িতেই শিক্ষিত হন।[২][৩]

১৮৬৭ সালের ২৩শে এপ্রিল, অ্যাডলিন চ্যাপম্যান বিয়ে করেন আর্থার এডওয়ার্ড গেস্টকে (১৮৪১ - ১৮৯৮)। ১৮৬৮ থেকে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত, আর্থার পুল অঞ্চলের জন্য রক্ষণশীল সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁদের দুটি সন্তান ছিল; তাঁদের মেয়ে মিলড্রেড (১৮৬৮ - ১৯৪২) কর্নেল জেডি ম্যানসেলকে বিয়ে করেছিলেন এবং তিনি ছিলেন একজন ভোটাধিকারী। ১৮৮১ সালের মধ্যে, বিবাহ ব্যর্থ হয়েছিল এবং অ্যাডলিন তাঁর স্বামীর ব্যভিচারের কথা উল্লেখ করে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন: যাইহোক, আইন তাঁর পক্ষে ছিল না এবং তাঁর মামলা খারিজ করা হয়েছিল। ১৮৯৮ সালে আর্থার মারা গেলে বিয়েটি শেষ হয়।[২]

১৮৯৯ সালের ৩০শে ডিসেম্বর, অ্যাডলিন বিয়ে করেছিলেন সেসিল মরিস চ্যাপম্যানকে (১৮৫২ - ১৯৩৮), সেসিল মরিস ছিলেন তাঁর এক সম্পর্কিত ভাই। সেন্ট মার্গারেট চার্চ, ওয়েস্টমিনস্টারে একটি পরিষেবা চলাকালীন তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। বরের ভাই হিউ চ্যাপম্যানের সহায়তায় হেনরি স্কট হল্যাণ্ড পরিষেবাটি পরিচালনা করেছিলেন।[৪] সেসিল একজন ব্যারিস্টার ছিলেন, ১৮৯৬ থেকে ১৮৯৮ সাল পর্যন্ত লন্ডন কাউন্টি কাউন্সিলে চেলসির একজন মডারেট পার্টি কাউন্সিলর হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৮৯৯ সাল থেকে ১৯২৪ সালে অবসর নেওয়া পর্যন্ত তিনি একজন মেট্রোপলিটন পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।[৫] একজন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে, তাঁর "সাজা কখনোই অযথা কঠোর ছিল না এবং তাঁর ন্যায়বিচার সবসময় করুণা মিশ্রিত ছিল"।[৫] এছাড়াও তিনি মহিলাদের ভোটাধিকার এবং বিবাহবিচ্ছেদ সংস্কারের সমর্থক ছিলেন। তিনি ১৯১১ সালে ম্যারেজ অ্যাণ্ড ডিভোর্স: সাম নিডেড রিফর্মস ইন চার্চ অ্যাণ্ড স্টেট প্রকাশ করেন।[২] অ্যাডলিন চ্যাপম্যানের প্রথম বিবাহের বিপরীতে, দ্বিতীয় বিবাহটি আনন্দময় ছিল।[২]

১৯০১ সালে, অ্যাডলিন চ্যাপম্যান সেন্ট্রাল সোসাইটি ফর উইমেনস ফ্রেজের সদস্য হন। ডাব্লুএসপিইউ একটি ভোটাধিকার সংস্থায় পরিণত হওয়ার আগে তিনি তার প্রথম বছরগুলিতে উইমেন'স সোশ্যাল অ্যাণ্ড পলিটিক্যাল ইউনিয়নকে (ডব্লিউএসপিইউ) অর্থ দিয়েছিলেন। ১৯০৯ সালে, ভোটাধিকার বন্দীদের জোর করে খাওয়ানোর প্রতিক্রিয়া হিসাবে, তিনি মহিলাদের ভোটাধিকারের জন্য প্রচারে নিজেকে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও তিনি ভোটাধিকারীদের দ্বারা গৃহীত প্রত্যক্ষ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন, তিনি ১৯১১ সালের আদমশুমারি বর্জনে অংশ নিয়েছিলেন এবং মহিলা কর প্রতিরোধ লীগের সদস্য ছিলেন; পরেরটির জন্য, ১৯১৩ সালে করের পরিবর্তে তাঁর পণ্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল[২]

 
১৯১৪ সালে মহিলাদের ভোটাধিকার অফিসের জন্য নতুন সাংবিধানিক সোসাইটি

অ্যাডলিন চ্যাপম্যান বিশ্বাস করতেন প্রধান ভোটাধিকার সংস্থা, ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ উইমেনস সাফ্রেজ সোসাইটিজ (এনইউডব্লিউএসএস), অপর্যাপ্তভাবে কার্যকর। ১৯১০ সালের ৫ই জানুয়ারি, তিনি নতুন সাংবিধানিক সোসাইটি ফর উইমেনস সাফ্রেজের (এনসিএস) প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন ছিলেন।[২] এনসিএস-এর লক্ষ্য ছিল "সরকার বিরোধী নির্বাচনী নীতিতে বিশ্বাসী সকল ভোটাধিকারীকে একত্রিত করা, যারা সাংবিধানিক উপায়ে কাজ করতে চায়, এবং যাদের বিবেক তাদেরকে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পরিচালিত করে, সেইরকম অন্যান্য ভোটাধিকারীদের প্রকাশ্য সমালোচনা থেকে বিরত থাকা"।[২][৬] তিনি ছিলেন এনসিএসের প্রথম এবং একমাত্র সভাপতি। তিনি ভূমিকায় সক্রিয় ছিলেন এবং সভা-সমাবেশে বক্তৃতা করার জন্য নিয়মিত দেশ সফর করতেন।[২]

১৯১৬ সালে, তিনি মহিলা সাংবিধানিক ভোটাধিকার সমিতির পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য এবং এনসিএস-এর প্রতিনিধি হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ভোটের অধিকার আরও বেশি মানুষের কাছে প্রসারিত করার জন্য সরকারের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির লক্ষ্য ছিল এই বর্ধিত নির্বাচকমণ্ডলীতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা, এবং এটি জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯১৮ -এ উপলব্ধি করা গিয়েছিল। এটি সেইসব ৩০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার দেয় যাঁরা প্রয়োজনীয় সম্পত্তির যোগ্যতা পূরণ করেছিলেন। ১৯১৮ সালের জুন মাসে, আইনটি পাস হওয়ার পরে, এনসিএস বিলুপ্ত হয়ে যায়।

মহিলাদের ভোটাধিকারের জন্য নতুন সাংবিধানিক সোসাইটি বিলুপ্ত হওয়ার পরে, অ্যাডলিন চ্যাপম্যান ক্যাভেণ্ডিশ-বেন্টিঙ্ক গ্রন্থাগারের সদস্য হন (যা পরে মহিলা গ্রন্থাগারে পরিণত হয়)। ১৯২৪ সালে তাঁর স্বামীর অবসর গ্রহণের পর, এই দম্পতি রোহ্যাম্পটনের দ্য কটেজে থাকতেন। তিনি ১৯৩১ সালের ২০শে জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Crawford, Elizabeth (২০০৩)। The women’s suffrage movement: a reference guide, 1866–1928। Routledge। পৃষ্ঠা 105–106। 
  2. Elizabeth, Crawford। "Chapman [née Chapman; former married name Guest], Adeline Mary (1847–1931)"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ডিওআই:10.1093/odnb/9780198614128.013.369183  (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।) (Subscription or UK public library membership required.)
  3. ঐতিহাসিক ইংল্যান্ড"DOWNSHIRE HOUSE  (শ্রেণী II*) (1065522)"ইংল্যান্ডের জন্য জাতীয় ঐতিহ্য তালিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২৩ 
  4. "Births, Deaths, Marriages and Obituaries: Chapman-Guest"। The Standard। ৩ জানুয়ারি ১৯০০। 
  5. "Mr. C. M. Chapman"। The Times। ২৪ জুন ১৯৩৮। পৃষ্ঠা 18। 
  6. Notice of the formation of the New Constitutional Society for Women’s Suffrage, Women's Library@LSE, 2LSW/E/15/02/1

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা