অমলেন্দু চন্দ্র

ভারতীয় রসায়নবিদ

অমলেন্দু চন্দ্র (জন্ম ১৯৬৩) হলেন একজন ভারতীয় তাত্ত্বিক ভৌত রসায়নবিদ, এবং কানপুরের ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠানের একজন অধ্যাপক ও রসায়ন বিভাগের প্রধান।[১] তিনি আণুবীক্ষণিক তত্ত্ব এবং তরল, ইন্টারফেস ও গুচ্ছের আনুমানিক অনুকরণের (সিমুলেশন) জন্য পরিচিত[২] তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমী[৩] এবং ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির নির্বাচিত ফেলো।[৪] বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য ভারত সরকারের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ ২০০৭ সালে তাঁকে শান্তি স্বরূপ ভটনাগর পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এটি একটি সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কার। রাসায়নিক বিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৫]

অমলেন্দু চন্দ্র
জন্ম (1963-10-06) ৬ অক্টোবর ১৯৬৩ (বয়স ৬০)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তন
পরিচিতির কারণআণুবীক্ষণিক তত্ত্ব এবং আনুমানিক অনুকরণের উপর গবেষণা
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ

জীবনী সম্পাদনা

 
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়

অমলেন্দু চন্দ্র, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ১৯৬৩ সালের ৬ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[৬] তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা থেকে তাঁর ডক্টরাল পর্যায়ের পড়াশোনা করেছিলেন। ১৯৯১ সালে পিএইচডি করার পরে, তিনি আইজ্যাক ওয়ালটন কিলাম ফেলোশিপ পেয়ে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরাল পরবর্তী পড়াশোনার জন্য কানাডায় চলে গিয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালে ভারতে ফিরে আসার পর, তিনি আইআইটি কানপুরে যোগদান করেছিলেন। সেখানে তিনি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং বিভাগের প্রধান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।[৭] এই সময়ে তিনি দুটি চেয়ার অধ্যাপক পদে ছিলেন, সেগুলি হল রাহুল এবং নমিতা গৌতম চেয়ার অধ্যাপক (২০০৮-১১)[৮] এবং সজনী কুমার রায় স্মৃতি চেয়ার অধ্যাপক (২০১১)।[৯] তিনি বিমান বাগচীর সাথেও যুক্ত ছিলেন এবং বাগচীর নেতৃত্বে থাকা গবেষণা দলকে তাদের কাজে সহায়তা করেছিলেন।[১০]

অমলেন্দু চন্দ্র তরল, ইন্টারফেস ও গুচ্ছের আনুমানিক অনুকরণের ভিত্তিতে গবেষণা করেছিলেন এবং তিনি অণুবীক্ষণিক তত্ত্বের বিকাশ ও পূর্বাভাস করে অবদান রেখেছেন।[১১] তিনি জটিল আণবিক তরল এবং বিশাল আয়তনের আয়নিক দ্রবনগুলির ভারসাম্য এবং গতিশীল আচরণ সম্পর্কে ব্যাপকভাবে গবেষণা করেছেন। পাশাপাশি তাত্ত্বিক এবং গণনা পদ্ধতি ব্যবহার করে আবদ্ধ সংযুক্ত পরমাণুর কাঠামো নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন।[৭] তিনি সহকর্মী দ্বারা পর্যালোচিত বিভিন্ন নিবন্ধে তাঁর গবেষণাগুলি নথিভুক্ত করেছেন;[১২] বৈজ্ঞানিক নিবন্ধগুলির একটি অনলাইন আধার রিসার্চগেট, ১১৮টি নিবন্ধকে তাদের তালিকাভুক্ত করেছে।[১৩]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

১৯৯৩ সালে চন্দ্র ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা দ্বারা নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সংস্থার সহযোগী হিসাবে তিনি কাজ করে গেছেন।[১৪] ১৯৯৫ সালে, ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি তাঁকে তরুণ বিজ্ঞানী পদক দিয়েছিল[১৫] এবং এর পরে ১৯৯৭ সালে, সেখান থেকে তিনি পেয়েছিলেন অনিল কুমার বোস স্মৃতি পুরস্কার।[১৬] তিনি ২০০৬ সালে কেমিক্যাল রিসার্চ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন; এই সংস্থা তাঁকে ২০১৫ সালে আবারও সম্মানিত করেছিল রৌপ্য পদক দিয়ে।[১৭] বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ তাঁকে ২০০৭ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শান্তি স্বরূপ ভটনাগর পুরস্কার প্রদান করেছিল, যেটি একটি সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কার।[১৮] ২০০৯ সালে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন[৩] এবং ২০১৫ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী থেকে ফেলো নির্বাচিত হন।[৪] তিনি আরও বেশ কয়েকটি গবেষণা ফেলোশিপ পেয়েছিলেন, যার মধ্যে আছে আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট ফেলোশিপ (২০০২–০৩), রামনা ফেলোশিপ (২০০৬–০৯ এবং ২০১০–১৩), এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের জে. সি. বোস জাতীয় ফেলোশিপ (২০১৩)।[৬]

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Dean"। Indian Institute of Technology, Kanpur। ২০১৬। ১০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২০ 
  2. "Brief Profile of the Awardee"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. "Fellow profile"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। 
  4. "Indian fellow"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ৮ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২০ 
  5. "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  6. "Faculty profile"। IIT Kanpur। ২০১৬। 
  7. "Professor, Department of Chemistry"। IIT Kanpur। ২০১৬। 
  8. "Rahul and Namita Gautam Chair Professorship"। IIT Kanpur। ২০১৬। ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  9. "Sajani Kumar Roy Memorial Chair Professorship"। IIT Kanpur। ২০১৬। ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  10. "Welcome to Biman Bagchi Group"। Biman Bagchi Group। ২০১৬। ২৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২০ 
  11. "Handbook of Shanti Swarup Bhatnagar Prize Winners" (পিডিএফ)। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৬। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  12. "Browse by Fellow"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। 
  13. "On ResearchGate"। ২০১৬। 
  14. "Associate of Indian Academy of Sciences"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। 
  15. "Young Scientist Medal"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ১১ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২০ 
  16. "Anil Kumar Bose Memorial Award"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ১১ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২০ 
  17. "CRSI Bronze Medal"। Chemical Research Society of India। ২০১৬। ১৬ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  18. "Chemical Sciences"। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৬। ২০১২-০৯-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।