অনিল ঘড়াই
কথাশিল্পী অনিল ঘড়াই (১ নভেম্বর, ১৯৫৭—২৩ নভেম্বর, ২০১৪) ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের একজন বাঙ্গালী সাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যে তার অবস্থান অনন্য। দলিত ও প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে সাহিত্যচর্চার সুবাদে তাকে অন্ত্যজ জীবনের রূপকার বলা হয়ে থাকে।[২][৩]
অনিল ঘড়াই | |
---|---|
জন্ম | ১ নভেম্বর, ১৯৫৭ রুক্মিণীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর [১] |
মৃত্যু | ২৩ নভেম্বর ২০১৪ | (বয়স ৫৭)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | কৃষ্ণনগর কলেজ |
পেশা | সাহিত্যিক, তড়িৎ প্রকৌশলী |
প্রতিষ্ঠান | দক্ষিণ-পূর্ব রেল |
পরিচিতির কারণ | ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | জন্মদাগ, নুনবাড়ি, অনন্ত দ্রাঘিমা |
পুরস্কার | বঙ্কিম পুরস্কার (২০১০), সর্বভারতীয় সংস্কৃতি পুরস্কার (১৯৯৪) |
জীবন
সম্পাদনাঅনিল ঘড়াইয়ের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রুক্মিণীপুর গ্রামে। পিতা অভিমন্যু ঘড়াই ও মাতা তিলোত্তমা ঘড়াই। অনিলের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের অনেকটা সময় কেটেছে নদিয়া জেলার কালিগঞ্জে।
অনিল ঘড়াই পড়াশোনা করেছিলেন টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে তিনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ১৯৮৪ সালে তিনি চক্রধরপুরে রেলের ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি খড়গপুর রেলবিভাগে বদলি হন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়েতে আধিকারিক হিসেবে চাকরি করতেন। চাকরিসূত্রে চক্রধরপুর ও পরে খড়গপুরে বসবাস করতেন।[৪][৫]
সাহিত্যিক জীবন
সম্পাদনা২৫ বছর বয়সে প্রকাশিত প্রথম গল্পগ্রন্থ কাক এবং ৩২ বছর বয়সে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস নুনবাড়ি দিয়েই তার স্বতন্ত্র যাত্রা শুরু হয়। তার গল্প, উপন্যাস ও কবিতা মিলিয়ে গ্রন্থের সংখ্যা ৭০-৮০ - এর মতো।ঔপন্যাসিক ও গল্পকার পরিচয়ের আড়ালে তিনি ছিলেন আসলে অসাধারণ এক আত্মভোলা কবি। নদিয়া ও মেদিনীপুরের গ্রামীণ মানুষ ও তাদের কথ্যভাষা যেমন উঠে এসেছে তার রচনায়, তেমনি চক্রধরপুরে বসবাস করার সুবাদে সিংভূম অঞ্চলের কথ্যভাষাসহ সেখানকার মানুষের জীবনের ছবি পাওয়া যায় তার সাহিত্যে। ১৯৯০ সালে তার প্রথম ছোটগল্প প্রকাশ হয় দেশ (পত্রিকা)-তে।[৬][৭]
প্রকাশিত গ্রন্থ
সম্পাদনাউপন্যাস
- নুনবাড়ি (১৯৮৯)
- বনবাসী (১৯৯০)
- মুকুলের গন্ধ (১৯৯৩)
- তরঙ্গলতা (১৯৯৩)
- বোবাযুদ্ধ (১৯৯৩)
- বক্ররেখা (১৯৯৪)
- পবন (১৯৯৪)
- কাননে কুসুমকলি (১৯৯৪)
- ধর্মের কল (১৯৯৫)
- মেঘ জীবনের তৃষ্ণা (১৯৯৬)
- কালের পুতুল (১৯৯৬)
- দৌড়বোগাড়ার উপাখ্যান (১৯৯৭)
- খেলাঘর (১৯৯৮)
- জন্মদাগ (১৯৯৯)
- বিপরীত যুদ্ধের মহড়া (২০০০)
- নীল দুঃখের ছবি (২০০১)
- পাতা ওড়ার দিন (২০০২)
- সামনে সাগর (২০০৩)
- অনন্ত দ্রাঘিমা (২০০৯)
গল্পগ্রন্থ
- কাক (১৯৮২)
- পরীযান (১৯৮৫)
- আগুন (১৯৮৭)
- জ্ঞানবৃক্ষের ফল (১৯৮৮)
- কটাশ (১৯৯০)
- তিন ভুবনের গল্প (১৯৯০)
- জার্মানের মা (১৯৯১)
- ভারতবর্ষ (১৯৯২)
- গর্ভ দাও (১৯৯৩)
- কামকুঠিয়া (১৯৯৬)
- আকাশ মাটির খেলা (১৯৯৭)
- লু (১৯৯৭)
- গোদানা (১৯৯৮)
- স্বপ্নের খরাপাখি (১৯৯৮)
- অক্ষরমালা (১৯৯৮)
- শ্বেতপদ্ম (১৯৯৮)
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- সর্বভারতীয় সংস্কৃতি পুরস্কার (১৯৯৪)
- মাইকেল মধুসূদন স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯৪)
- তারাশঙ্কর স্মৃতি পুরস্কার (২০০১)
- সোমেন চন্দ স্মৃতি পুরস্কার (২০০২)
- বঙ্কিম পুরস্কার (২০১০)
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ M. Prabha (২০০০)। The waffle of the toffs: a sociocultural critique of Indian writing in English। Oxford & IBH। পৃষ্ঠা 54। আইএসবিএন 978-81-204-1359-7। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ প্রয়াত সাহিত্যিক অনিল ঘড়াই
- ↑ Saheli Mitra (২৮ নভেম্বর ২০০৩)। "Speaking in Many Voices"। The Telegraph (Kolkata)। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ কথা ও কাহিনির মধ্যে ভূমিতেই বিলগ্ন ছিলেন তিনি, আজীবন
- ↑ "Anil Ghorai"। ২ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ কথা ও কাহিনির মধ্যে ভূমিতেই বিলগ্ন ছিলেন তিনি, আজীবন
- ↑ "অনিল ঘড়াই আর নেই"। ২ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০২১।