অতুলচন্দ্র হাজারিকা
অতুলচন্দ্র হাজারিকা (অসমীয়া: অতুল চন্দ্র হাজৰিকা) অসমের একজন কবি, নাট্যকার, গদ্য লেখক ও শিশু সাহিত্যিক। ১৯৫৩ সন থেকে ১৯৫৬ সালে তিনি একাদিক্রমে তিনবার অসম সাহিত্য সভার সভাপতিরুপে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫৯ সালে অসম সাহিত্য সভা নঁগাও অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন। ১৯৮২ সালে অসম সাহিত্য সভা তাকে সাহিত্যাচার্য উপাধিতে বিভূষিত করে। তিনি অসমে এক নতুন নাট্য আন্দোলনের সৃষ্টি করেন যার ফলে বাংলা নাটক অসমের রঙ্গমঞ্চ ত্যাগ করিতে বাধ্য হয়েছিল।[১]
অতুলচন্দ্র হাজারিকা | |
---|---|
জন্ম | ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯০৩ গুয়াহাটি, অসম |
মৃত্যু | ৬ জুলাই ১৯৮৬ | (বয়স ৮২)
পেশা | লেখক, প্রবক্তা, অধ্যাপক |
ভাষা | অসমীয়া |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
শিক্ষা | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৬৭), পদ্মশ্রী পুরস্কার (১৯৭১), সাহিত্যাচার্য উপাধি |
দাম্পত্যসঙ্গী | সাবিত্রী হাজারিকা |
জন্ম ও শৈশব সম্পাদনা
১৯০৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তারিখে অসমের গুয়াহাটিতে অতুল চন্দ্র হাজারিকার জন্ম হয়। তার পিতার নাম রমাকান্ত হাজারিকা ও মাতার নাম নিরুপমা হাজারিকা। তিনি লতাশিল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাল্য শিক্ষা, মানিক চন্দ্র বরুয়া মধ্য ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে কটন কলেজিয়েট বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৩ সালে ৩টি লেটার সহ প্রবেশিকা পরিক্ষায় উর্ত্তীন হন। ১৯২৮ সালে কটন মহাবিদ্যালয় থেকে কলা বিভাগে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসমীয়া বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৩০ সন থেকে ১৯৪৮ সন পর্যন্ত তিনি অসমের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকতা করেন ও আইনের স্নাতক ডিগ্রী এবং বি.টি.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১৯৪৮ সালে কটন মহাবিদ্যালয়ের অসমীয়া বিভাগে প্রবক্তা রুপে নিযুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে কটন মহাবিদ্যালয়ের মুখ্য অধ্যাপক রুপে অবসর গ্রহণ করেন।[১]
ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা
১৯৩৭ সালে অতুল চন্দ্র হাজারিকা সাবিত্রী হাজারিকার সহিত বিবাহ সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তিনি গুয়াহাটির উজানবজারে স্থিত তপোবনে স্থাবীভাবে বসবাস করে আজীবন সাহিত্য সেবায় মনোনিবেশ করেন। জনপ্রিয় অসমীয়া লেখিকা করবী ডেকা হাজরিকা তার ভাগ্নি।
মৃত্যু সম্পাদনা
১৯৮৬ সালের ৭ জুন তারিখে অতুল চন্দ্র হাজারিকার মৃত্যু হয়।
সাহিত্যরাজী সম্পাদনা
অতুল চন্দ্র হাজারিকা সর্বমোট ১২৪টি গ্রন্থ রচনা করে অসমীয়া সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তারমধ্যে সংকলন ও সম্পাদনা করা গ্রন্থ ২৪টি, নাটক ও নাটক সম্পর্কীয় গ্রন্থ ৩২টি,[২] গীত ও কবিতা গ্রন্থ ২৩টি, শিশুর জন্য রচিত গ্রন্থ ৪০টি ও বিভিন্ন বিষয়ে রচিত গ্রন্থ মোট ৫টি। ১৯২৮ সালে তিনি মিলন পত্রিকায় সম্পাদনা করেছিলেন ও কিছুদিনের জন্য শিশু আলোচনী পত্রিকা দীপক-এ সম্পাদনা করেছিলেন। তিনি অমিয় কুমার দাসের বাহিত চিত্রদাস ছদ্মনামে অসংখ্য কবিতা প্রকাশ করেছেন। তার প্রথম কবিতা হচ্ছে বসন্তকাল। তার অসমীয়া নাট্য ইতিহাসমূলক গ্রন্থ মঞ্চমেলা ১৯৬৭ সালে সালে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থের জন্য তিনি সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭১ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধিতে সম্মানিত করে। অসম সাহিত্য সভার সাথে জড়িত থাকা অতুল চন্দ্র হাজারিকা ১৯৫৩ সাল থেকে একাদিক্রমে তিন বৎসর প্রধান সম্পাদকের পদে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৫৬ সালে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন ও ১৯৫৯ সালের অসম সাহিত্য সভার নগাঁও অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।[১]
কবিতা সংকলন
|
নাট্য সংকলন[২]
|
|
গ্রন্থ সংকলন (শিশুতোষ)
|
আত্মজীবনী সমূহ
|
সম্পাদিত গ্রন্থ সংকলন
|
সম্মান সম্পাদনা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ত্রিদিপ গোস্বামী। পদ্মনাথ গোহাঞি বরুৱার পরা রংবং তেরাঙলৈ। অনন্ত হাজরিকা, বনলতা প্রকাশন। পৃষ্ঠা ৮৩, ৮৪, ৮৫।
- ↑ ক খ Chandra Bhushan (১ জানুয়ারি ২০০৫)। Assam। Gyan Publishing House। পৃষ্ঠা ১৪৪–। আইএসবিএন 978-81-7835-352-4। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ ১৯১৭ চনর পরা অসম সাহিত্য সভার সভাপতিসকলর তালিকা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে অসম সাহিত্য সভার ওয়েবসাইট, সংগ্রহের তারিখ: ১৮ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ "সাহিত্য অকাডেমি বঁটা বিজয়ী অসমীয়াসকলর তথ্য"। সাহিত্য অকাডেমি। ৭ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৬, ২০১২।