অগ্নিকুণ্ড একটি মরমি সঙ্গীত গ্রন্থ। এটি মরমি কবি ইবরাহীম আলী তশনা রচিত। এর খণ্ডাংশ প্রকাশিত হয় ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে।[১] অগ্নিকুণ্ড গ্রন্থে ৩৬০টি সঙ্গীত রয়েছে।[২] কবি সরওয়ার ফারুকীর সম্পাদনায় ২৯৭ টি সঙ্গীত সহ পূর্ণাঙ্গ অগ্নিকুণ্ড প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে মদিনা পাবলিকেশান্স থেকে মরমি কবি ইবরাহিম আলী তশনা ও অগ্নিকুণ্ড গানের সংকলন শিরোনামে।[৩]

কবি লিখিত অগ্নিকুণ্ড'র আদি পাণ্ডুলিপি

ইতিহাস সম্পাদনা

ইবরাহীম তশনা রাজনৈতিক, সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি উর্দু কবিতার চর্চা করতেন। তার কবিতা তদানীস্তন উত্তর ভারত হতে প্রকাশিত নানা সাময়িকীতে নিয়মিত প্রকাশ হত।[৪] খেলাফত আন্দোলন-এ অংশগ্রহনের ফলে ১৯২২ সালে গ্রেফতার হলে তশনা জেলে বসে বাংলা সঙ্গীত রচনায় মনোনিবেশ করেন। ১৯২২ সাল থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত লিখিত সঙ্গীতগুলো পরবর্তীতে 'অগ্নিকুণ্ড' গ্রন্থবদ্ধ হয়।

আলোচ্য বিষয় সম্পাদনা

অগ্নিকুণ্ড গ্রন্থে ১. আল্লাহ স্মরণ ২. নবী স্মরণ ৩. ওলি স্মরণ ৪. মুর্শিদ স্মরণ ৫. ভক্তিমূলক ৬. ফকিরি তত্ত্ব ৭. নিগূঢ় তত্ত্ব ৮. মনঃশিক্ষা ৯. দেহতত্ত্ব ১০. কামতত্ত্ব ১১. বিচ্ছেদ ইত্যাদি বিষয় সমূহ আলোচিত।[৫] তশনার ভাষায়:

সাহিত্য সমালোচনা সম্পাদনা

সুফিদের সাধনারীতি গুরু-শিষ্যকেন্দ্রিক। বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ ও বৌদ্দ সাধনা রীতির সহিত। গুরু শিষ্যকে এর গূঢ় রহস্য ভেদ করে দেন।[৬] মারিফতের পথে অগ্রসর হতে হলে খাঁটি মুরশিদ বা গুরু প্রয়োজন। মুরশিদই ‘মারেফাত’ প্রাপ্তির একমাত্র রজ্জু। তাঁদের গানেই একথা তাঁরা বলেছেন। গান তাই সাধনারও অঙ্গ হয়ে পড়েছে।[৭] মুর্শিদের তরে অগ্নিকুণ্ডের গান:

[৬]

মুস্তাফা জামান আব্বাসীর ভাষায়; এগুলো নিছক প্রেমসঙ্গীত হতেই পারে না, এগুলো আধ্যাত্মিক নিগূঢ় চেতনার অমৃত ফসল।[৩] তশ্নার উপলব্ধিঃ

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. উদাসী তশ্না, মাওলানা ওলিউর রহমান, প্রকাশকাল : ১৯৯২
  2. সিলহেট মে উর্দু, আব্দুল জলিল বিসমিল, আনজুমান-এ-তারাক্কি উর্দু, ১৯৮০-১৯৮১ করাচি
  3. মরমি কবি ইবরাহিম আলী তশনা ও অগ্নিকুণ্ড গানের সংকলন, সরওয়ার ফারুকী, মদিনা পাবলিকেশান্স, একুশে বইমেলা ২০০৯
  4. মাসিক মদিনা,প্রথম সংখ্যা, মার্চ, ১৯৬১
  5. বাঁশির সুরে অঙ্গ জ্বলে, নন্দলাল শর্মা
  6. বাঁশির সুরে অঙ্গ জ্বলে, নন্দলাল শর্মা, সিলেট ২০০৭
  7. আশরাফ সিদ্দিকী: লোক সাহিত্য হয় খণ্ড, ঢাকা ১৯৯৫: ১৪১, ১৪৪