মুনড্রাম পিরাই (তামিল: மூன்றாம் பிறை, অনুবাদ 'তৃতীয় চাঁদ') ১৯৮২ সালের একটি তামিল চলচ্চিত্র যেটি রচনা ও পরিচালনা করেছিলেন বলু মহেন্দ্র। চলচ্চিত্রটির মুখ্য ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন কমল হাসান এবং শ্রীদেবী, এছাড়াও সহ-অভিনয়শিল্পী হিসেবে সিল্ক স্মিতা, পূর্ণম বিশ্বনাথান এবং ওয়াই. জি. মহেন্দ্রন ছিলেন। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন ইলাইয়ারাজা আর গীতিকার ছিলেন কন্নদাস, বৈরামুথু এবং গঙ্গই অমরন। এই চলচ্চিত্রটি কন্নদাসের লেখা শেষ গান বহন করে, কন্নদাস ১৯৮১ সালে মারা যান।

মুনড্রাম পিরাই
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকবলু মহেন্দ্র
প্রযোজকজি. থিয়াগরজন
জি. সর্বনন
রচয়িতাবলু মহেন্দ্র
শ্রেষ্ঠাংশেকমল হাসান
শ্রীদেবী
সুরকারইলাইয়ারাজা
চিত্রগ্রাহকবলু মহেন্দ্র
সম্পাদকডি. বসু
প্রযোজনা
কোম্পানি
সত্য জ্যোতি ফিল্মস
পরিবেশকসত্য জ্যোতি ফিল্মস
মুক্তি
  • ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ (1982-02-19)
স্থিতিকাল১৩৪ মিনিট
দেশভারত ভারত
ভাষাতামিল

মুনড্রাম পিরাই হচ্ছে একজন স্কুল-শিক্ষক আর. শ্রীনিবাস (কমল হাসান) সম্পর্কে যে ভাগ্যলক্ষ্মী (শ্রীদেবী) নামের একটি মেয়েকে একটি পতিতালয় থেকে তার কেট্টি এলাকার বাসায় নিয়ে আসে, ভাগ্যলক্ষ্মী 'রেট্রোগ্রেড এ্যামনেশিয়া' নামের একটি রোগে ভুগছিল। চলচ্চিত্রটিতে দেখায় যে ভাগ্যলক্ষ্মী কীভাবে তার অতীতের সব কিছু মনে করে ফেলে এবং পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় শ্রীনিবাসের সাহায্যে। মুনড্রাম পিরাইয়ের কাহিনী পরিচালক বলু মহেন্দ্রর নিজের জীবনের সঙ্গে কিছুটা মিলে যায়, বলু মহেন্দ্রর সঙ্গে অভিনেত্রী শোভা'র সঙ্গে সম্পর্কের একটু পরোক্ষ প্রতিফলন এই চলচ্চিত্রে দেখানো হয়, শোভাকে বলু বিয়ে করেছিলেন ১৯৭৮ সালে, আর সে ১৯৮০ সালে মারা যায়। চলচ্চিত্রটির শুটিং হয়েছিল তামিলনাড়ুর 'উটি' এর কাছের একটি ছোট শহর 'কেট্টি'তে, আরও শুটিং হচ্ছিল কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে। শুটিং শেষ হতে মোট ৩০ দিন লেগেছিল, আর ৩৬,০০০ ফিট চলচ্চিত্র নেগেটিভ লেগেছিল।

মুনড্রাম পিরাই ১৯৮২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছিল এবং ইতিবাচক সমালোচনামূলক সাড়া পেয়েছিল। চলচ্চিত্রটি ব্যাপকভাবে ব্যবসা-সফল হয়েছিল এবং মাদ্রাজের (বর্তমানে চেন্নাই) এর 'সত্যম থিয়েটার' এ ৩৭৯ দিন ও অন্যান্য থিয়েটারে ২০০ দিন চলেছিল। দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) জিতে ছিলো মুনড্রাম পিরাই, একটি সেরা অভিনেতা (কমল হাসান) এবং আরেকটি সেরা চিত্রগ্রহণ (বলু মহেন্দ্র)। এটি বলুকে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণও এনে দিয়েছিল সেরা পরিচালক হিসেবে এবং পাঁচটি 'তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার' জিতেছিল এই চলচ্চিত্রটিঃ সেরা চলচ্চিত্র, সেরা অভিনেতা (কমল হাসান) এবং সেরা অভিনেত্রী (শ্রীদেবী)। চলচ্চিত্রটি তেলুগু ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল এবং নাম দেওয়া হয়েছিল বসন্ত কোকিলা। মহেন্দ্র পরে চলচ্চিত্রটিকে হিন্দি ভাষায় পুনঃনির্মাণ করেন এবং তার নাম দিয়েছিলেন সাদমা, যেটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৩ সালে এবং ওখানেও কমল এবং শ্রীদেবী একই ধরনের চরিত্রে ছিলেন।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯][১০]

কাহিনী সম্পাদনা

ভাগ্যলক্ষ্মী, এক যুবতী নারী, একটি পার্টি শেষে গাড়ি-দুর্ঘটনায় পতিত হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি হয় বড় ধরনের আঘাত পেয়ে। তাকে চিকিৎসা করানো হয়, তার 'রেট্রোগ্রেড এ্যামনেশিয়া' ধরা পড়ে যেটি হচ্ছে একধরনের মানসিক রোগ, সে তার মাতা-পিতাকে চিনতে পারেনা। তার মানসিক অবস্থা বাচ্চাদের মত হয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গোপনে গোপনে একটি পতিতালয়ে পতিতা হিসেবে নিয়ে আসা হয়। শ্রীনিবাস (চিনু) চেন্নাইতে তার এক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্যে আসে, সেই বন্ধুটি চিনুকে নিয়ে ঐ পতিতালয়টিতে দৈহিক মিলন করার জন্য যায়। পতিতালয়ের সর্দারনী ভাগ্যলক্ষ্মীকে যার নতুন করে নাম রাখা হয়েছে বিজয়া চিনুর কক্ষে পাঠায়। চিনু বুঝতে পারে যে মেয়েটির মানসিক-সমস্যা আছে, সে তার প্রতি মায়া দেখায় এবং দৈহিক মিলন করেনা। চিনু জানতে পারে মেয়েটি একটি ভালো পরিবারের সন্তান, তাকে এখানে গোপনে গোপনে এনে পতিতাবৃত্তিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিনু পরের দিনও আসে, পতিতালয়ের সর্দারনীকে টাকা দিয়ে বিজয়াকে তার সঙ্গে বাইরে নিয়ে আসে। তাকে কেট্টি নিয়ে আসে চিনু যেখানে সে স্কুল-শিক্ষক হিসেবে চাকরি করে। চিনু তাকে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে তাকে আদর-যত্ন দেওয়া শুরু করে কারণ মেয়েটি একটি রোগে আক্রান্ত। বিজি - চিনু এ নামেই ডাকে মেয়েটিকে, মেয়েটি তার সকল অতীত ভুলে চিনুর সঙ্গ পছন্দ করা শুরু করে। একদিন ঐ এলাকারই এক কাঠুরে (নাম - নেতারাজ) বিজিকে যৌন-নজর দেয় এবং বিজিকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে, তবে বিজি কোনোমতে পালায়। সে চিনুকে এই ব্যাপারে নালিশ দিলে চিনু মেজাজ ব্যাপক গরম করে প্রায় কাঠুরিয়াটিকে অনেক মারধর করে কিন্তু তার প্রতিবেশী তাকে থামিয়ে দেয় যারা বিজির মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছিল। চিনুর স্কুল-প্রধানের পত্নী চিনুর প্রতি যৌন-আকর্ষণ বোধ করে, যদিও চিনু তার এ অনুভূতিকে পাত্তা দেয়না।

বিজির পিতা বেদাচলম পুলিশকে তার মেয়ে সম্বন্ধে খবর দেওয়া সহ পত্রিকায় একটি হারানো বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন। চিনু এবং বিজি ট্রেনে করে চেন্নাই থেকে উটি যাওয়ার সময় এক যাত্রী তাদেরকে দেখে ফেলে। চিনু বিজিকে একটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসে এবং তাকে সেখানে রেখে আসে। চিনুর অনুপস্থিতিতে পুলিশ তার বাড়ি আসে বিজির খোঁজে। পুলিশ জানতে পারে বিজির চিকিৎসা করানো হচ্ছে এবং তারা সেই চিকিৎসালয়ে যায়। চিনু আসতে ভয় পাচ্ছিল পুলিশের কারণে। চিকিৎসা ভালোভাবে চলতে থাকে আর বিজি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে তার দুর্ঘটনা এবং চিনুর কথা পুরোপুরি ভুলে যায়। বেদাচলম আর তার স্ত্রী খুশী হয় আর তারা চিকিৎসকের মাধ্যমে জানতে পারে যে মানুষটি তাকে এখানে এনেছিল সে তাকে অনেক যত্ন করেছে। বেদাচলম পুলিশের কাছ থেকে অভিযোগ তুলে নিয়ে বিজিকে নিয়ে চেন্নাই এর উদ্দেশে যাত্রা কর।

পুলিশ চলে যাওয়ার পর চিনু ঐ গাড়িটির পিছু নেয় যেটিতে বিজি যাচ্ছিল। চিনু গাড়িটি অনুসরণ করতে করতে রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং বিজির সাড়া পাবার চেষ্টা করে, তবে সে তাকে চিনতে পারেনা। চিনু বানরের মত নাচতে শুরু করে যেটির ভক্ত ছিল বিজি যখন সে অসুস্থ ছিল, বিজি তারপরেও তাকে চিনতে পারেনা, মনে করে নেয় একটি ভিখারী খাবারের জন্য তার কাছে সাহায্য চাচ্ছে। চিনু চেষ্টা চালিয়ে যায় বিজির সাড়া পাবার জন্য তবে প্রত্যেক ক্ষেত্রে অসফল হয়। ট্রেন চলে যেতে থাকে আর চিনু হতাশ হয়ে আর চেষ্টা করেনা।

চরিত্র সম্পাদনা

  • কমল হাসান - আর. শ্রীনিবাস (চিনু)
  • শ্রীদেবী - ভাগ্যলক্ষ্মী/বিজয়া/বিজি
  • ওয়াই জি মহেন্দ্রন - শ্রীনিবাসের বন্ধু
  • সিল্ক স্মিতা - শ্রীনিবাসের স্কুল-প্রধানের সহধর্মিণী
  • গান্থিমাথি - পতিতালয়ের সর্দারনী
  • পূর্ণম বিশ্বনাথান - শ্রীনিবাসের বিদ্যালয়ের মালিক (স্কুল-প্রধান)
  • এস আর বীররাঘবন - বেদাচলম
  • রমণমূর্তি - আয়ুর্বেদ চিকিৎসক
  • কে. নেতারাজ - কাঠুরিয়া নেতারাজ

প্রযোজনা সম্পাদনা

বিকাশ সম্পাদনা

মুনড্রাম পিরাই প্রযোজনা করেছিলেন জি তিয়াগরজন এবং জি সর্বনন, তাদের প্রডাকশন ব্যানার 'সত্য জ্যোতি ফিল্মস' এর মাধ্যমে।[১] এ রামস্বামী এবং ডি বসু যথাক্রমে আর্ট ডিরেকশন এবং সম্পাদনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।[১১] 'কফি উইথ অনু' নামের এক টেলিভিশন শোতে উপস্থাপিকা অনু হাসনকে পরিচালক বলু মহেন্দ্র বলেছিলেন যে চলচ্চিত্রটি তিনি তার স্ত্রী শোভার স্মরণে বানিয়েছেন এবং এটির কাহিনী শোভার আত্মহত্যার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়, ১৯৮০ সালে শোভা আত্মহত্যা করেন ১৭ বছর বয়সে।[৪][১২]দ্য হিন্দু পত্রিকার লেখক এস শিব কুমার বলেন, চলচ্চিত্রটির শেষে দেখানো শ্রীদেবীর কমল হাসানকে চিনতে না পেরে ছেড়ে চলে যাওয়ার দৃশ্যটি শোভার বলু মহেন্দ্রকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাটাই পরোক্ষভাবে নির্দেশ করে।[৫] সি বি রাও চলচ্চিত্রটির হিন্দি সংস্করণ সাদমা (১৯৮৩) এর রিভিউতে বলেন যে তামিল সংস্করণটিই আসল বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলে, অপরদিকে তামিল নামটিও (মুনড্রাম পিরাই) অনেক সুন্দর।[৬] সাদমা শব্দের বাংলা অর্থ মানসিক আঘাত আর মুনড্রাম পিরাই এর বাংলা অর্থ হচ্ছে নতুন পূর্ণচন্দ্র দেখা যাওয়ার তৃতীয় দিনে অর্ধচন্দ্র দেখা গিয়েছে।

বলু মহেন্দ্র কমল হাসনের কাছে চলচ্চিত্রটির স্ক্রিপ্ট নিয়ে গেলে কমল ২০ মিনিট ধরে বলুর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার পর 'চিনু'র চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হন।[১৩] প্রাথমিকভাবে ভাগ্যলক্ষ্মীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রীপ্রিয়াকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় শ্রীদেবীর কাছে যাওয়া হয় এবং তিনি চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করেন।[১৪] পূর্ণম বিশ্বনাথানকে স্কুল হেডমাস্টারের চরিত্রে নেওয়া হয়,[১৫] এবং সিল্ক স্মিতাকে যিনি ততদিনে ২০টির মত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ফেলেছিলেন এবং শুধু 'আইটেম নাম্বার' করার জন্যই বিবেচিত হতেন, হেডমাস্টারের কামুক পত্নীর চরিত্রে নেওয়া হয়।[১৬]

শুটিং সম্পাদনা

মুনড্রাম পিরাই চলচ্চিত্রটির শুটিং তামিলনাড়ু প্রদেশের 'উটি' এর কাছে কেট্টি এলাকায় হয়েছিলো। এছাড়া ব্যাঙ্গালোরেও (কর্ণাটক) শুটিং হয়েছিলো।[১৭] চলচ্চিত্রটি শেষ করতে মোট ৩০ দিন সময় লেগেছিলো।[১৭]ঐ সময় বলু মহেন্দ্রকে ট্রেন ভাড়া করতে কোনো বেগ পেতে হয়নি এবং বেশি টাকাও দিতে হয়নি; তিনি কমল হাসান এবং শ্রীদেবীর কেট্টি যাওয়ার জন্য একটি ট্রেন ভাড়া করেছিলেন, এবং আরেকটি ট্রেন তাকে ভাড়া করতে হয়েছিলো শেষের সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের ধারণের জন্য এবং ওটি 'কেট্টি রেলওয়ে স্টেশন'এ ধারণ করা হয়। এই শেষ দৃশ্যের শুটিং এর সময় বৃষ্টি হচ্ছিল, স্ক্রিপ্টে যদিও বৃষ্টির কথা বলা ছিলোনা তাও মহেন্দ্র সিনেমার শুটিং চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং কাজ শেষ করেছিলেন বৃষ্টির মধ্যেই।[১৮] সিনেমা নির্মাণ কাজ শেষে অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার কণ্ঠ অনুরাধা নামের একজন ডাবিং করে দেন কারণ স্মিতা তামিল ভাষা জানতেননা। মহেন্দ্র অনুরাধাকে স্মিতার চরিত্র কি রকম তা ঠিকমত বুঝিয়ে দিয়ে তাকে তারপরে ডাবিং করতে বলেন।[১৯]

চলচ্চিত্রটি যখন নির্মাণ করা হবে বলে ভাবা হচ্ছিলো তখন এটির প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা বলাবলি করছিলেন যে একজন তরুণ আরেকজন মানসিক রোগী তরুণীর প্রেমে পড়ে, এরকম কাহিনী দিয়ে চলচ্চিত্র বানালে ভালো ব্যবসা করতে পারবেনা।[২০] চলচ্চিত্রটির শুরু এবং শেষ দিকে 'ভায়োলিন মিউজিক' ব্যবহার করা হয়েছিলো।[২১] ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে পরিচালক বলু মহেন্দ্র বলেন যে, 'পোনমেনি উরুগুদে' (কমল এবং স্মিতাকে নিয়ে চিত্রিত) গানটি অপ্রয়োজনীয় ছিলো, তিনি গানটি সিনেমায় রাখতে চাননি কিন্তু সিল্ক স্মিতাকে একটু আলাদাভাবে প্রকাশ করার জন্য গানটিকে চলচ্চিত্রে ঢুকান।[২২] চলচ্চিত্রটির পূর্ণ দৈর্ঘ্য ছিলো ৩,৯১৭.৭৪ মিটার ([রূপান্তর: অনির্ধারিত একক])।[২৩]

প্রভাব এবং গ্রহণ সম্পাদনা

মুনড্রাম পিরাই চলচ্চিত্রে একটি তরুণীকে দেখানো হয় যে একটি দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাচ্চাদের মত আচরণ করা শুরু করে। অবদমিত যৌনতা এই চলচ্চিত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমনটি বলু মহেন্দ্রর পূর্ববর্তী চলচ্চিত্র মুদু পানি (১৯৮০) এর মূল বিষয়বস্তুও অবদমিত যৌনতাকে ঘিরেই ছিলো।[২৪] তাছাড়া এই চলচ্চিত্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দুই মূল চরিত্রের মধ্যে যৌন দুশ্চিন্তা থাকে এবং সেটা সমাধিত হয়না।[২৫] চলচ্চিত্র সমালোচক কে. জেশী মুনড্রাম পিরাইকে শারীরিক এবং মানসিক অক্ষমতা দেখানো হয় এমন অন্যান্য তামিল চলচ্চিত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন যেমন সেতু (১৯৯৯), পিতামাগান (২০০৩), পেরাড়াগান (২০০৪), চন্দ্রমুখী (২০০৫), আন্নিয়ান (২০০৫) এবং সূর্য শিবকুমার অভিনীত গজিনী (২০০৫)।[২৬] পরিচালক বলুকে ভাগ্যলক্ষ্মী চরিত্রটির রেট্রোগ্রেড এ্যামনেশিয়া সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন কাহিনীকে ঠিকমত ফুটিয়ে তোলার জন্য ওটির প্রয়োজন তিনি অনুভব করেছেন।[২৬] তামিল চলচ্চিত্র সমালোচক ভরদ্বাজ রঙ্গন কমল হাসানের চরিত্র চিনু সম্বন্ধে বলেন যে, "চিনু বিজির জন্য কত কষ্ট করে, তাকে অনেক আদর যত্ন করে, এত ভালো জেনেও চিনুকে শেষমেশ খারাপ পরিণতি ভোগ করতে হয় যে এত ভালোবাসা দিয়েও শেষে বিজির দ্বারা পরিচয় পায়না'।[২৭] ভরদ্বাজের একটি বই 'চলচ্চিত্রের দেয়ালের পিছে' তে তিনি কমলের অভিনয়ের প্রশংসা করেন এবং বলেন তার মত অভিনেতা ভারতে খুব কমই দেখা গিয়েছে।[২৮][২৯][৩০]

স্ক্রল ডট ইন এর লেখিকা নন্দিনী রামনাথ মুনড্রাম পিরাই সম্বন্ধে বলেন, "চলচ্চিত্রটি আমার দেখা অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র যেটাতে প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রী তাদের সেরা পারফরমেন্স দেখিয়েছেন, এছাড়া চলচ্চিত্রটির গান, লোকেশন, সিনেমাটোগ্রাফি, প্রোডাকশন, পরিচালনা সব মিলিয়ে সব কিছুই একদম চমৎকার ছিলো"।[৩১]

সঙ্গীত সম্পাদনা

চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম কালজয়ী সঙ্গীতকার ইলাইয়ারাজা

গানের তালিকা
নং.শিরোনামগীতিকারগায়ক/গায়িকাদৈর্ঘ্য
১."কান্নে কালাইমানে"কন্নদাসকে জে ইয়েসুদাস৪ঃ০৯
২."ভানেঙ্গুম তাঙ্গা"বৈরামুথুএস পি বলসুব্রাহ্মণ, এস জনকী৪ঃ৩৪
৩."নারীকাদাই"বৈরামুথুকমল হাসন, শ্রীদেবী৪ঃ০১
৪."পোনমেনি উরুগুদে"গঙ্গই অমরনএস জনকী৪ঃ৩২
৫."পুংগাট্রে পুদিদানাদে"কন্নদাসকে জে ইয়েসুদাস৪ঃ১৮
মোট দৈর্ঘ্য:২১ঃ৩৪

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Kumar, S. R. Ashok (১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৬)। "A saga of success"The Hindu। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  2. Dhananjayan 2011, পৃ. 72।
  3. Gayathri, Jayaraman (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Silk Route"Livemint। ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৫ 
  4. Srinivasan, Lata (২৩ জুন ২০১২)। "Kollywood turns to suicide"The Times of India। ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  5. Kumar, S. Shiva (৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "More than meaning"The Hindu। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  6. Asiaweek 1984, পৃ. 156।
  7. Haasan, Kamal (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Kamal Haasan's tribute to Balu Mahendra"Business Line। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  8. Sampath, Janani (২৫ জানুয়ারি ২০১৪)। "Eighties Flavour Keen to Leave Imprint"The New Indian Express। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  9. Rajadhyaksha ও Willemen 2014, পৃ. 455।
  10. Bobb, Dilip; Pillai, Sreedhar (১৫ জুলাই ২০১৩)। "Smitha: The silken touch"India Today। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  11. Mahendra, Balu (১৯৮২)। Moondram Pirai (motion picture) (Tamil ভাষায়)। Sathya Jyothi Films। From 8:51 to 9:15। 
  12. Gayathri, Jayaraman (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Silk Route"Livemint। ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৫ 
  13. Haasan, Kamal (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Kamal Haasan's tribute to Balu Mahendra"Business Line। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  14. Sampath, Janani (২৫ জানুয়ারি ২০১৪)। "Eighties Flavour Keen to Leave Imprint"The New Indian Express। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  15. Rajadhyaksha ও Willemen 1998, পৃ. 455।
  16. Bobb, Dilip; Pillai, Sreedhar (১৫ জুলাই ২০১৩)। "Smitha: The silken touch"India Today। ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  17. Dhananjayan 2011, পৃ. 73।
  18. Varma, K. Dinesh (২ জানুয়ারি ২০১৪)। "Kollywood's romance with trains unstoppable"The Hindu। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  19. Padmanabhan, Geeta (৭ আগস্ট ২০১৪)। "When voices do the acting"The Hindu। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  20. "Stalwarts to zoom in on creative, commercial secrets of celluloid"The Hindu। ৩ অক্টোবর ২০১২। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  21. Rangan, Baradwaj (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Marketplace art"The Hindu। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  22. Kamath, Sudhish (২৫ এপ্রিল ২০০৬)। "'Don't let the fire die out'"The Hindu। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  23. Mahendra, Balu (১৯৮২)। Moondram Pirai (motion picture) (Tamil ভাষায়)। Sathya Jyothi Films। From 0:00 to 0:02। 
  24. Hariharan, K. (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "The uncompromising spirit"The Hindu। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  25. Srinivasan, Sudhir (২৫ নভেম্বর ২০১৪)। "A collage from a movie critic's scrapbook"The Hindu। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  26. Jeshi, K. (১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "In an imperfect world"The Hindu। ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  27. Rangan, Baradwaj (৯ মার্চ ২০১২)। "Lights, Camera, Conversation... — The awakening of unconsciousness"The Hindu। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  28. Rangan 2014, পৃ. 251–252।
  29. "Moondram Pirai (DVD)"  22 August 2014. Tamil Matinee. Sathya Jyothi Films. Scene from 13:30 to 22:16.
  30. Rangan 2012, পৃ. 50–51।
  31. Ramnath, Nandini (১০ এপ্রিল ২০১৭)। "Picture the song: Fragments of an idyllic romance in 'Poongatru Puthiraanathu' from 'Moondram Pirai'"Scroll.in। ১৯ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৭ 

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা