বৈদ্যনাথ মন্দির

ভারতের একটি হিন্দু মন্দির

বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির বা বৈদ্যনাথ ধাম হল হিন্দু দেবতা শিবের ১২টি পবিত্রতম জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের অন্যতম। এই মন্দিরটি ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দেওঘর জেলার দেওঘর শহরে অবস্থিত। বৈদ্যনাথ মন্দির চত্বরে মূল বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের মন্দির ছাড়াও আরো ২১টি মন্দির আছে।[১]

বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির, দেওঘর
বৈদ্যনাথ মন্দিরের তৈলচিত্র, উইলিয়াম হোজেস, ১৭৮২
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাদেওঘর
পরিচালনা সংস্থাবাবা বৈদ্যনাথ টেম্পল ম্যানেজমেন্ট বোর্ড
অবস্থান
রাজ্যঝাড়খণ্ড
দেশভারত
স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীঅজ্ঞাত ( পুরাণ অনুসারে, বিশ্বকর্মা )
ওয়েবসাইট
babadham.org
মন্দিরের পিরামিড-আকৃতির শিখর

হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, রাবণ হলো শিবের পরম ভক্তের মধ্যে একজন তাই রাবনের অনুরোধে শিবের কৃপায় কৈলাশ পর্বত থেকে রাবণ শিবকে নিয়ে যাচ্ছিল লিঙ্গ রুপে। কিন্তু শিব পুত্র গণেশের ছলনা তে রাবণ শিবলিঙ্গ নিয়ে যেতে পারেনি লঙ্কায় সেই শিবলিঙ্গ বৈদ্যনাথ নামে আর্বিভাব হয়।

জ্যোতির্লিঙ্গ সম্পাদনা

শিবপুরাণ অনুসারে, একবার সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ও রক্ষাকর্তা বিষ্ণু তাদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে বিবাদে রত হন।[২] তাদের পরীক্ষা করার জন্য শিব ত্রিভুবনকে ভেদ করে জ্যোতির্লিঙ্গ নামে এক বিশাল অন্তহীন আলোকস্তম্ভ রূপে আবির্ভূত হন। বিষ্ণু ও ব্রহ্মা এই লিঙ্গের উৎস অনুসন্ধান করতে যান। ব্রহ্মা যান উপর দিকে এবং বিষ্ণু নামেন নিচের দিকে। কিন্তু তারা কেউই এই লিঙ্গের উৎসটি খুঁজে পাননা। ব্রহ্মা মিথ্যা বলেন যে তিনি উৎসটি খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু বিষ্ণু তার পরাজয় স্বীকার করে নেন। শিব তখন একটি দ্বিতীয় জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে আবির্ভূত হয়ে মিথ্যা বলার জন্য ব্রহ্মাকে শাপ দেন যে অনুষ্ঠানে তার কোনো স্থান হবে না। অন্যদিকে সত্য কথা বলার জন্য তিনি বিষ্ণুকে আশীর্বাদ ক্করে বলেন যে সৃষ্টির অন্তিমকাল পর্যন্ত তিনি পূজিত হবেন। জ্যোতির্লিঙ্গ হল সেই অখণ্ড সর্বোচ্চ সত্যের প্রতীক, যার অংশ শিব নিজে। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরগুলিতে শিব স্বয়ং অগ্নিময় আলোকস্তম্ভ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন।[৩][৪] শিবের ৬৪টি রূপভেদ রয়েছে। তবে এগুলির সঙ্গে জ্যোতির্লিঙ্গকে এক করা হয় না। প্রত্যেক জ্যোতির্লিঙ্গের নির্দিষ্ট নাম আছে – এগুলি শিবের এক এক রূপ।[৫] প্রতিটি মন্দিরেই শিবলিঙ্গ শিবের অনন্ত প্রকৃতির প্রতীক এক আদি ও অন্তহীন স্তম্ভের প্রতিনিধিত্ব করে।[৫][৬][৭] বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির হল গুজরাতের সোমনাথ, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীশৈলমের মল্লিকার্জুন, মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর, মধ্যপ্রদেশের ওঙ্কারেশ্বর, হিমালয়ের কেদারনাথ, মহারাষ্ট্রের ভীমশংকর, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর বিশ্বনাথ, মহারাষ্ট্রের ত্র্যম্বকেশ্বর, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের বৈদ্যনাথ, গুজরাতের দ্বারকায় নাগেশ্বর, তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমের রামেশ্বর এবং মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গাবাদের ঘৃষ্ণেরশ্বর[২][৮]

বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের অবস্থান নির্ণয়ের সমস্যা সম্পাদনা

শিবপুরাণের কোটিরুদ্র সংহিতায় (অধ্যায় ১। ২১-২৪।) বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ সম্পর্কে বলা হয়েছে বৈদ্যনাথং চিতাভূমৌ। এই শ্লোকাংশের মাধ্যমে বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের অবস্থান নির্ণয় করা হয়। এই শ্লোকাংশ অনুসারে, বৈদ্যনাথ মন্দির 'চিদভূমি'তে ববস্থিত। চিদভূমি বৈদ্যনাথের প্রাচীন নাম। অন্যদিকে উক্ত গ্রন্থের একই অংশে বলা হয়েছে পারল্যং বৈদ্যনাথম্। অর্থাৎ, বৈদ্যনাথ পারলিতে (অধুনা মহারাষ্ট্র রাজ্যে) অবস্থিত।

তিনটি মন্দির প্রকৃত বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ বলে দাবি জানায়। এগুলি হল:

আদি শঙ্কর রচিত দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ স্তোত্রম্-এ বৈদ্যনাথ মন্দিরের নিম্নোক্ত স্তুতি রয়েছে:[৯]

পূর্বোত্তরে প্রজ্বালিকা নিধানে
সদাবসন্তং গিরিজাসমেতং
সুরাসুরাধিতপাদপদম্
শ্রীবৈদ্যনাথং স্থানং নমামি

এই স্তোত্র অনুসারে, বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক প্রজ্জালিকা নিধান অর্থাৎ, 'চিতাভূমি' বা শ্মশানে অবস্থিত। দেওঘর পূর্বভারতে অবস্থিত। অন্যদিকে পারলির অবস্থান পশ্চিম মধ্যভারতে। এছাড়া, 'চিতাভূমি' শব্দটির উল্লেখ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রাচীনকালে এই মন্দিরের কাছে একটি শ্মশান ছিল। কাপালিক বা ভৈরব সাধনায় শিবকে শ্মশানভূমিতেই পূজা করা হয়।[১০]

হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, শিব অরিদ্রা নক্ষত্রের রাত্রিতে প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। শিবপুরাণের শতরুদ্র সংহিতায় (অধ্যায় ৪২। ২-৪) দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের নাম ও অবস্থানের উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়েছে:

সৌরাষ্ট্রে সোমনাথাঞ্চ শ্রীশৈলে মল্লিকার্জুন।
উজ্জয়ীন্য মহাকালং ওঙ্কারামামলেশ্বরম।।
পারল্যম বৈদ্যনাথাঞ্চ ডাকিন্যাং ভীমাশঙ্করম্।।
সেতুবন্ধেতু রামেশ্বরং নাগেশং দ্বারুকাবনে।
বারাণস্যান্তু বিশ্বনাথং ত্র্যম্বকং গৌতমীতটে।।
হিমালয়েতু কেদারং ঘৃষ্ণেশ্বরাঞ্চ শিবালয়ে।
এতানি জ্যোতির্লিঙ্গানি সায়ংপ্রাতপঠেন্নরঃ।
সপ্তজন্মকৃতং পাপং স্মরণেনা বিনাশয়াতি।।[১১]

ভবিষ্যপুরাণেও বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের উল্লেখ আছে। এই উপাখ্যানে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম অঞ্চলকে 'নারিখণ্ড'বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে:

নারিখণ্ড এক বনাঞ্চল-সমৃদ্ধ অঞ্চল। দ্বারকেশ্বরী নদীর পশ্চিমে অবস্থিত এই অঞ্চল পশ্চিমে পঞ্চকূট পর্বত থেকে ইয়ৃরে কিকট পর্যন্ত প্রসারিত। এখানে বনাঞ্চল অত্যন্ত ঘন। মূলত সাখোট, অর্জুন ও শাল গাছের বন এটি। এই অঞ্চলেই বৈদ্যনাথের প্রসিদ্ধ মন্দিরটি অবস্থিত। বিভিন্ন স্তরের মানুষ বৈদ্যনাথের পূজা করেন। বৈদ্যনাথের পূজার ফল অত্যন্ত মঙ্গলদায়ক।

বৈদ্যনাথ মন্দিরটি ৫১টি শক্তিপীঠেরও অন্যতম। এখানে সতীর হৃদয় পড়েছিল। সেই জন্য এটিকে হৃদয়পীঠও বলা হয়। সতী এখানে জয়দুর্গা নামে পূজিত এবং বৈদ্যনাথ তার ভৈরব।[১২][১৩] দেবীভাগবত পুরাণ, কুব্জিকা তন্ত্র, কালিকারহস্য, মুণ্ডমালা তন্ত্র ও রুদ্রযামলে বৈদ্যনাথের শক্তিপীঠের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই সকল গ্রন্থে বৈদ্যনাথকে একটি জনপ্রিয় তন্ত্রসাধনাক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তান্ত্রিক গোপীনাথ কবিরাজও বৈদ্যনাথ ধামকে একটি তন্ত্রসাধনপীঠ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[১৪]

কিংবদন্তি সম্পাদনা

 
বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ, জলরং, ১৮৭০

শিবপুরাণের কাহিনি অনুসারে, ত্রেতাযুগে লঙ্কার রাজা রাবণ চেয়েছিলেন যে তার রাজধানী হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সকল শত্রুর থেকে মুক্ত। তার মনে হয়েছিল, যদি শিব সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু না করেন, তবে তা হওয়া সম্ভব নয়। তিনি শিবের তপস্যা শুরু করেন। শিব সন্তুষ্ট হয়ে তাকে একটি শিবলিঙ্গ লঙ্কায় প্রতিষ্ঠার জন্য দান করেন। শিব বলেছিলেন, লিঙ্গটি অন্য কোথাও যেন স্থাপন না করা হয় এবং অন্য কারোর হাতে না দেওয়া হয়। এমনকি লঙ্কায় যাত্রাপথেও কোথাও যেন না থামা নয়। রাবণ যদি অন্য কোথাও পৃথিবীতে এই লিঙ্গটি স্থাপন করেন, তবে সেটি সেখানেই চিরতরে থেকে যাবে। রাবণ খুশি হয়ে লিঙ্গটি নিয়ে লঙ্কার পথে যাত্রা করেন।

অন্যান্য দেবতারা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করলেন। শিব যদি রাবণের সঙ্গে লঙ্কায় যান, তবে রাবণ অজেয় হবেন। তখন তিনি পৃথিবীর উপর অকথ্য অত্যাচার চালাবেন। তাই তারা রাবণকে ছলনা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। দেবতারা জলদেবতা বরুণকে রাবণের উদরে প্রবেশ করতে অনুরোধ করলেন। তখন কৈলাস পর্বত থেকে ফেরার পথে রাবণের মুত্রের বেগ পেল। তখন তিনি এমন কাউকে খুঁজতে লাগলেন, যাকে খানিকক্ষণের জন্য লিঙ্গটি ধরতে দেওয়া যায়। বিষ্ণু তখন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে রাবণের কাছে এলেন। রাবণ তার হাতেই লিঙ্গটি দিয়ে মূত্র ত্যাগ করতে বসলেন। কিন্তু মূত্র ত্যাগ করতে রাবণের অনেক সময় লাগল।

এদিকে ব্রাহ্মণবেশী বিষ্ণু লিঙ্গটি মাটিতে স্থাপন করলেন। এই স্থানেই এখন বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ অবস্থিত।

রাবণ লিঙ্গটি মাটি থেকে তোলার অনেক চেষ্টা করলেন। কিন্তু তিনি একচুলও সেটি নড়াতে অসমর্থ হলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তিনি জোরে লিঙ্গটি নড়ানোর চেষ্টা শুরু করলেন। কিন্তু বুড়ো আঙুলের আঘাতে লিঙ্গের একটুকরো অংশ ভেঙে ফেলা ছাড়া আর কিছু করতে তিনি অসমর্থ হলেন। পরে অনুতপ্ত হয়ে তিনি কৃতকর্মের জন্য শিবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। এদিকে রাবণ যে শিবলিঙ্গটি লঙ্কায় নিয়ে যেতে পারলেন না, তা দেখে দেবতারা আনন্দিত হলেন।

রাবণ লঙ্কায় ফিরে গেলেন। কিন্তু তিনি রোজ এসে সেই লিঙ্গটি পূজা করে যেতেন। এমনভাবেই তিনি সারাজীবন বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের পূজা করেছিলেন। যেখানে রাবণ পৃথিবীতে নেমে এসেছিলেন সেটি বৈদ্যনাথ থেকে চার মাইল দূরে হরিলাজোরি নামে একটি জায়গা বলে লোকে বিশ্বাস করে। লিঙ্গটি মাটিতে রাখা হয়েছিল অধুনা দেওঘর শহরে। লিঙ্গটির নাম বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ।[১৫][১৬]

অন্য একটি কাহিনি অনুসারে, রাবণের মৃত্যুর পর বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গটি অযত্নে পড়েছিল। বৈজু নামে এক উদ্ধত ব্যাধ এটিকে দেখতে পান এবং তার দেবতা বলে গ্রহণ করে রোজ পূজা শুরু করেন। তিনি এটিকে বৈজুনাথ বা বৈদ্যনাথ নাম দেন।

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. "Baba Baidyanath Temple Complex"। ২৭ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৫ 
  2. R. 2003, pp. 92-95
  3. Eck 1999, p. 107
  4. See: Gwynne 2008, Section on Char Dham
  5. Lochtefeld 2002, pp. 324-325
  6. Harding 1998, pp. 158-158
  7. Vivekananda Vol. 4
  8. Chaturvedi 2006, pp. 58-72
  9. "Dwadash Jyotirlinga Stotram"। ৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৫ 
  10. Om Prakash Ralhan। Encyclopaedia Of Political Parties, Volumes 33-50 [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  11. http://www.shreehindutemple.net/hinduism/12-jyotirlingas-of-lord-shiv
  12. 51 Shaktipeethas http://www.taramaa.net/shaktipeethas.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে
  13. 51 Shaktipeethas-History http://kumbhujjain.in/blog/temple/shakti-peeths/ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে
  14. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৫ 
  15. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫ 
  16. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫ 

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা