ভাত্নাইয়োকুত্ল
ভাত্নাইয়োকুত্ল (আইসল্যান্ডীয় ভাষায়: Vatnajökull আ-ধ্ব-ব: ˈvahtnaˌjœːkʏtl ̥) দক্ষিণ-পূর্ব আইসল্যান্ডে অবস্থিত একটি বিস্তীর্ণ বরফক্ষেত্র। এটি আইসল্যান্ড ও ইউরোপের বৃহত্তম হিমবাহ। এর আয়তন প্রায় ৮,৪০০ বর্গ কিলোমিটার, যা আইসল্যান্ডের আয়তনের প্রায় ৮%। এখানকার বরফের গড় পুরুত্ব ৪০০ মিটার এবং সর্বোচ্চ পুরুত্ব ১০০০ মিটার। ক্ষেত্রটির পৃষ্ঠ বেশির ভাগ স্থানেই সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৫০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। দক্ষিণে ওরায়েফাইয়োকুত্ল (Öræfajökull) হিমবাহ এলাকায় এটির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এখানেই ২,১১০ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট আইসল্যান্ডের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ খ্ভান্নাটাল্শনুখুর (Hvannadalshnúkur) অবস্থিত।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/b/bd/Satellite_image_of_Iceland_in_September.jpeg/200px-Satellite_image_of_Iceland_in_September.jpeg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/8/8f/Vatnaj%C3%B6kull.jpeg/200px-Vatnaj%C3%B6kull.jpeg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/6/6e/Iceland_Grimsvoetn_1972-B.jpg/200px-Iceland_Grimsvoetn_1972-B.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/6/6a/VatnajoekullDetailSkaftafell.jpg/200px-VatnajoekullDetailSkaftafell.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/d/db/VatnaJokull.jpg/200px-VatnaJokull.jpg)
গোটা বরফক্ষেত্র জুড়েই বহু সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এই আগ্নেয়গিরির উত্তাপে বরফ গলে যে পানি হয়, সেগুলি থেকে শত শত নদীর সৃষ্টি হয়েছে। এই নদীগুলির মধ্যে থিয়ৌর্সাও (Thjórsá), স্খিয়ালফান্টাফ্লিয়ৌত (Skjálfandafljót), ফিয়োৎলুম (Fjöllum), ইয়োকুলসাও আও দাই (Jökulsá á Dai) এবং লাগারফ্লিয়ৌত (Lagarfljót) উল্লেখযোগ্য। বরফক্ষেত্র ও সাগরের মাঝখানে একচিলতে ভূমি আছে, কিন্তু বরফগলা পানি, বরফের তলে অবস্থিত উষ্ণ প্রস্রবণের কারণে হিমবাহের বিস্ফোরণ, ইত্যাদি কারণে এই ভূমির উপর দিয়ে বহুদিন যাবৎ কোন রাস্তা নির্মাণ করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত ১৯৭০-এর দশকের মাঝে এসে রাস্তাটি নির্মাণ সম্ভব হয় এবং এর ফলে সমগ্র আইসল্যান্ড বেষ্টনকারী মহাসড়ক নির্মাণ সমাপ্ত হয়।
বরফ ক্ষেত্রটির তলদেশে অবস্থিত বৃহত্তম গ্রিম্সভোত্ন আগ্নেয়গিরিতে কিছুদিন পর পরই অগ্ন্যুৎপাত হয়, যার ফলে এর আশেপাশের বরফ গলে গিয়ে হ্রদের সৃষ্টি হয়। এই হ্রদটি মাঝেমাঝে চারপাশের বরফের প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসে এবং ইয়োখুলখ্লাউপ নামের ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালের অগ্ন্যুৎপাতের সময় ইয়োখুলখ্লাউপের নিঃসরণের পরিমাণ প্রতি সেকেন্ডে ৫০,০০০ ঘনমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। বিংশ শতাব্দীতে প্রতি ৫ থেকে ১০ বছর অন্তর একটি করে ইয়োখুলখ্লাউপ ঘটেছে।
জলবায়ুর পরিবর্তন ও আগ্নেয় কর্মকাণ্ডের ফলে ভাত্নাইয়োকুত্লের আয়তন সম্প্রতি হ্রাস পাচ্ছে।