২০ জুলাই পরিকল্পনা

১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই, ক্লাউস ফন স্টাউফেনবার্গ ও অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে রাস্টেনবার্গ, পূর্ব প্রুসিয়ার কাছে অবস্থিত উলফস লেয়ার হেডকয়ার্টারে নাৎসি জার্মানির ফিউরার এডলফ হিটলারকে হত্যার চেষ্টা চালায়। 'অপারেশন ভলকায়ার' নামটি মূলত ষড়যন্ত্রের একটি অংশ হলেও পুরো ঘটনাটির সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। হত্যাচেষ্টাটির লক্ষ্য ছিল জার্মানির রাজনীতি এবং সামরিক বাহিনীর ওপর থেকে নাৎসি পার্টির (এস এস সহ) নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে যত দ্রুত সম্ভব পশ্চিমা মিত্রদের সাথে শান্তি অর্জন করা। এর সাথে জড়িত অনেক ভেরমাখট অফিসারদের[১][২] অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ছিল সারা বিশ্বকে দেখানো যে সব জার্মান হিটলার আর নাৎসি পার্টির মত না। তাদের নেয়া শান্তি উদ্যোগের পরিপূর্ণ বিবরণ এখনো অজানা তবে খুব সম্ভবত তাতে ইউরোপীয় অঞ্চলে জার্মানির ব্যাপক অন্তর্ভূক্তির অবাস্তব দাবি নিশ্চিত করার বিষয় ছিল।

পরিকল্পনাটি নাৎসি জার্মান সরকারকে উৎখাতের জন্য বিরোধীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার চূড়ান্ত পরিনতি ছিল। হত্যাচেষ্টা এবং পরিকল্পিত সামরিক অভ্যুত্থানের ব্যর্থতার পরিনতিতে গেস্টাপো কমপক্ষে ৭০০০ জনকে গ্রেফতার করে যাদের মাঝে ৪৯৮০ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

পটভূমি সম্পাদনা

১৯৩৮ সাল থেকেই কিছু গোষ্ঠী জার্মান আর্মি ও জার্মান মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স অরগানাইজেশনের মাঝে এক ধরনের উৎখাতের পরিকল্পনা করে আসছিল। এ গোপন পরিকল্পনার শুরুর দিককার নেতারদের মাঝে অন্যতম মেজর জেনারেল হ্যান্স ওস্টার, কর্ণেল জেনারেল লুডভিগ বেক এবং ফিল্ড মার্শাল আরুইন ফন ভিৎস্লেবেন। ওস্টার ছিলেন মিলিটারি গোয়েন্দা সংস্থার ডেপুটি হেড। বেক ছিলেন জার্মান আর্মি হাই কমান্ডের(ওবেরকমান্ডো ডেস হিরেস, ও কে এইচ) সাবেক চিফ ওফ স্টাফ। ফন ভিৎস্লেবেন ছিলেন জার্মান ফার্স্ট আর্মির সাবেক কমান্ডার এবং জার্মান আর্মির পশ্চিম কমান্ডের (ওবেরবেফেলশআবের ওয়েস্ট বা ও বি ওয়েস্ট) কমান্ডার ইন চিফ। তারা দ্রুতই অনেক বিশিষ্ট বেসামরিক নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন যাদের মাঝে ছিলেন কার্ল গর্ডেলার,লাইপজিগ শহরে সাবের মেয়র এবং হেলমুট জেমস ফন মলটক, যার পরদাদা ছিলেন ফ্রাংকো প্রুসিয়ান যুদ্ধের নায়ক।

সামরিক চক্রান্ত্রকারীরা ক্রাইসর ক্রাইস( যা মিলিত হয়েছিল ক্রাইসর ফন মল্টক স্টেটে) এবং অন্যান্য গোপন সংঘে বেসামরিক, রাজনৈতিক এবং বুদ্ধিজীবী বিরোধী দলগুলোর সাথে তাদের ধারণা বিনিময় করে। মল্টক হিটলারকে হত্যার বিপক্ষে ছিলেন, এর পরিবর্তে তিনি চেয়েছিলেন আদালতের বিচারে তাকে স্থাপন করতে। মল্টক বলেছিলেন, “ আমরা সবাই অপেশাদার এবং কেবলই এটাকে অকার্যকর করে ফেলব” । মল্টক বিশ্বাস করতেন হিটলারকে হত্যা করাটা কপটাচারীতা হবে। হিটলার আর তার জাতীয় সমাজতন্ত্র “অন্যায়াচরণ” কে একটি পদ্ধতির মাঝে ফেলে দিয়েছিল, এমন কিছু যা বিরোধীদের এড়িয়ে চলা উচিত। [৭]

১৯৩৮ এবং ১৯৩৯ সালে হিটলারকে উৎখাত করে নতুন একটি বিশ্বযুদ্ধ শুরু করা থেকে বিরত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর জেনারেল ফ্রান্স হেল্ডার ও ওয়ালথার ফন ব্রাউচিশ্চ এর দ্বিধা এবং.১৯৩৯ সাল পর্যন্ত হিটলারের আক্রমণ বাধা দেয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমা শক্তির ব্যর্থতার জন্য তা পরিত্যাক্ত হয়। ফ্রান্সের যুদ্ধে অপ্রত্যাশিত সাফল্য লাভের ফলে হিটলারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই প্রথম সামরিক প্রতিরোধী দল তাদের পরিকল্পনা বিলম্বিত করে।

১৯৪২ সালে কর্নেল হানিং ফন ট্রেস্কো, যিনি ফিল্ড মার্শাল ফেদোর ফন বক এর স্টাফদের একজন সদস্য এবং অপারেশন বারবারোসায় আর্মি গ্রুপ সেন্টারকে কমান্ড করতেন,  তাকে প্রধান করে একটি নতুন ষড়যন্ত্রকারী দল গঠন করা হয়। ট্রেস্কো নিয়ন্ত্রিতভাবে বিরোধের নিজের দলে নিয়োগ দেন , এর মাধ্যমে তার দলটি সেনা প্রতিরোধের কেন্দ্র হয়ে উঠে। হিটলারের বিরুদ্ধে তেমন কিছুই করা যেত না যেহেতু তিনি খুবই সুরক্ষিত থাকতেন এবং পরিকল্পনাকারীদের কেউই তার কাছাকাছি যেতে পারত না।[৮]

১৯৪২ সালে ওস্টার এবং ট্রেস্কো একটি কার্যকর প্রতিরোধী নেটওয়ার্ক পুনর্গঠনে সফল হয়। তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ ছিল জেনারেল আর্মি অফিস সদরদপ্তরের প্রধান , জেনারেল ফ্রেডরিখ ওলব্রিখট, যিনি সমগ্র জার্মানি জুড়ে ইউনিট সংরক্ষণের জন্য একটি স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদকে ট্রেস্কোর প্রতিরোধী দলের সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে একটি কার্যকর অভ্যুত্থান ঘটানোর মত অবস্থা তৈরী হয়।[৯]

১৯৪২ সালের শেষের দিকে ট্রেস্কো ও ওলব্রাইখট ১৯৪৩ সালের মার্চ মাসে স্মলেন্সক এ আর্মি গ্রুপ সেন্টারের সদর দপ্তরে হিটলারের পরিদর্শনের সময়কে কেন্দ্র করে তার বিমানে  বোমা বিস্ফোরনের মাধ্যমে তাকে হত্যা ও উৎখাতের চেষ্টা করে (অপারেশন স্পার্ক)। কিন্তু বোমাটি অবিস্ফোরিত থাকে। এর এক সপ্তাহ পরে আরেকটি চেষ্টা করা হয় বার্লিনে আটক করা সোভিয়েত অস্ত্র প্রদর্শনীতে যা আবারো ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতা ষড়যন্ত্রকারীদের মনোবলহীন করে দেয়। ১৯৪৩ সালে ট্রেস্কো জ্যেষ্ঠ আর্মি ফিল্ড কমান্ডার ফিল্ড মার্শাল এরিখ ফন মেন্সটেইন এবং ফিল্ড মার্শাল গার্ড ফন রুন্ডস্টেডট কে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ব্যপারে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ট্রেস্কো বিশেষভাবে আর্মি গ্রুপ সেন্টারের কমান্ডার ইন চিফ, ফিল্ড মার্শাল গুন্থার ফন ক্লুগকে হিটলারের বিপক্ষে নেয়ার জন্য প্ররোচিত করেন। এতে এক সময় তার সম্মতি আদায়ে সমর্ত্থ হলেও একদম শেষ মুহূর্তে দ্বিধান্বিত হিসেবে পান।[১০] যদিও তাদের প্রত্যাখ্যানের পরেও কোনো ফিল্ড মার্শালই গেসটাপো বা হিটলারের কাছে তাদের রাষ্ট্রদোহের কথা জানাননি।

পরিকল্পনার প্রেরণা ও লক্ষ্যসমূহ সম্পাদনা

পরিকল্পনাকারীদের  মূল লক্ষ্য ছিল হিটলারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া,  বিভিন্ন কারণে তারা এ কাজ করেছিল। ২0 জুলাই চক্রান্তের পেছনের অধিকাংশ কুশলীরা রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী ছিলেন এবং গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাস করতেন না। [১১] [১২]  মার্টিন বরশ্যাট লিখেছেন যে এই প্লট মূলত রক্ষণশীল অভিজাতদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল যারা প্রথমে নাৎসি সরকারের সাথে একত্রিত হলেও যুদ্ধের সময় তাদের প্রভাব হ্রাস পায় এবং তারা তা পুনরুদ্ধার করতে উদ্বুদ্ধ হয়। [১৩]

অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা সম্পাদনা

মূল নিবন্ধঃ অপারেশন ভলকায়ার

ফন স্টাউফেনবার্গের ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে যোগদান সম্পাদনা

১৯৪৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে যুদ্ধের জোয়াড় জার্মানির বিপক্ষে চলে যাচ্ছিল। সেনাবাহিনীর ভেতরকার পরিকল্পনাকারীরা ও তাদের বেসামরিক সহযোগিরা নিশ্চিত হয় যে হিটলারকে হত্যা করা উচিত যাতে করে পশ্চিমা মিত্রদের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সরকার গঠন করা যায়, এবং সময়মত একটি আলাদা শান্তি আলোচনাকরা যায় জার্মানিতে সোভিয়েত আগ্রাসন প্রতিরোধ করার জন্য। ১৯৪৩ সালের আগস্টে ট্রেস্কো প্রথমবারের মতো তরুণ স্টাফ অফিসার লেফট্যানেন্ট ক্লাউস শ্যাংক গ্রাফ ফন স্টাউফেনবার্গ এর সাথে দেখা করেন। উত্তর আফ্রিকায় বাজেভাবে আহত হওয়া ক্লাউস ফন স্টাউফেনবার্গ  ছিলেন রাজনৈতিকভাবে রক্ষণশীল, ঈর্ষান্বিত জার্মান জাতীয়তাবাদী এবং একজন রোমান ক্যাথলিক। ১৯৪২ সালের শুরুর দিক থেকেই অনেক সেনা অফিসারদের সাথে তার দুটো বিষয়ে মতবিরোধ চলে আসছেঃ যে জার্মানি একটি দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং হিটলারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ জরুরি। 194২ সালের ডিসেম্বর মাসে স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধের পর তিনি ধর্মীয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব সত্ত্বেও, তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে ফিউরারকে হত্যা করা নৈতিকভাবে হিটলারের ক্ষমতায় থাকার চেয়ে কম ক্ষতিকর হবে। [১৪] ট্রেস্কো যখন পূর্ব ফ্রন্টে নিয়োগ পান, তখন স্টাউফেনবার্গকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা ও তা কার্যকর করার দায়িত্ব দেন।

একটি নতুন পরিকল্পনা সম্পাদনা

অলব্রাইখট তখন হিটলারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের নতুন কৌশল প্রণয়ন করেন। রিপ্লেসমেন্ট আর্মির (এরসাচের) অপারেশন ভলকায়ার নামে নতুন কার্যকর পরিকল্পনা ছিল যেটা ব্যবহৃত হতো যখন জার্মান শহরগুলোতে মিত্রবাহিনীর বোমা হামলার ফলে সৃষ্ট বিশৃংখলা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতো অথবা জার্মান ফ্যাক্টোরিতে জোরপূর্বক কাজ করানো পরাজিত দেশ থেকে আনা শ্রমিকদের বিদ্রোহ ঘটানোর মাধ্যমে। অলব্রাইখট সুপারিশ করেন অভ্যুত্থানের জন্য রিসার্ভ আর্মি কার্যকরী করা। ১৯৪৩ সালের আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ট্রেস্কো সংশোধিত ভলকায়ার প্ল্যান এবং সম্পূরক অর্ডারের খসড়া প্রণয়ন করেন।একটি গোপন ঘোষণা এই শব্দগুলির সাথে শুরু হয়েছিল: "ফাহারের অ্যাডলফ হিটলার মারা গেছেন! দলের নেতাদের একটি বিশ্বাসঘাতক দল নিজেদের জন্য ক্ষমতা দখল করার জন্য পিছন থেকে আমাদের নিয়োজিত সৈন্যদের আক্রমণ করে পরিস্থিতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে।” " বার্লিনের সরকারি মন্ত্রীদের কাজের জন্য পূর্ব প্রুশিয়াইয় হেনরিখ হিম্লার এর সদর দপ্তর, রেডিও স্টেশন এবং টেলিফোন অফিসে এবং সামরিক জেলাসমূহের অন্যান্য নাৎসি অ্যাপারেটাস  এবং কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে সরকারি নির্দেশিকা কাজে লাগানোর জন্য বিস্তারিত নির্দেশনা লেখা হয়েছিল।[১৫] আগে ধারণা ছিল স্টাউফেনবার্গ ভলকায়ার প্ল্যানের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল, কিন্তু যুদ্ধের পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক উদ্ধারকৃত দলিলাদি যা ২০০৭ সালে প্রকাশ করা হয় তাতে দেখা যায় যে প্ল্যানটি ১৯৪৩ সালের শরতে ট্রেস্কো কর্তৃক প্রণীত হয়।[১৬] লিখিত সব তথ্য পরিচালনা করে ট্রেস্কোর স্ত্রী এরিকা এবং তার সেক্রেটারি মার্গারেট ফন ওভেন। দুজনই হাতের ছাপ না রাখার জন্য গ্লাভস ব্যবহার করতেন।[১৭] এর আগেও অন্তত দুবার ট্রেস্কো ফিউরারকে হত্যার চেষ্টা করে। প্রথম পরিকল্পনা ছিল আর্মি বেস ক্যাম্পের ডিনার পার্টীতে তাকে গুলি করা যা বাদ দেয়া হয় কারণ অনেকেই বিশ্বাস করতেন হিটলার বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরে থাকেন। ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যার কথাও চিন্তা করেছিল কিন্তু হিটলারের খাবার বিশেষভাবে তৈরী করা হত এবং পরীক্ষা করে দেখা হত। তারা বুঝতে পারেন যে একমাত্র উপায় হচ্ছে টাইম বোমা।[১৮]  রিসার্ভ আর্মির কমান্ডার জেনারেল ফ্রেডরিখ ফ্রমকে ছাড়া অপারেশন ভলকায়ারের সফলতা সম্ভব ছিল না। তাই হয় তাকে দলে ভেড়ানো অথবা কোনোভাবে সড়িয়ে দিতে হতো। ফ্রম, অন্যান্য সিনিয়র অফিসারদের মতই সেনা ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানতেন কিন্তু তাতে সাহায্যও করেননি আবার গেস্টাপোর কাছে রিপোর্টও করননি। [উদ্ধৃতি প্রয়োজন]

পূর্ববর্তী ব্যর্থ প্রচেষ্টাসমূহ সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: অপারেশন স্পার্ক (1940) এবং অ্যাডলফ হিটলারের হত্যাকান্ডের প্রচেষ্টাগুলির তালিকা

১৯৪৩ এবং ১৯৪৪ সালের শুরুর দিকে ফন ট্রেস্কো এবং ফন স্টাউফেনবার্গ কমপক্ষে পাঁচটী প্রচেষ্টা চালায় সেনা ষড়যন্ত্রকারীদের কাউকে হিটলারের যথেষ্ট লম্বা সময়ের জন্য কাছাকাছি নিয়ে আসতে যাতে হ্যান্ড গ্রেনেড , বোমা বা রিভলভারের মাধ্যমে হত্যা করা যায়ঃ

  •    ১৯৪৩ সালের ১৩ মার্চ ফন ট্রেস্কো নিজে
  •    ১৯৪৩ সালের ২১ মার্চ  রুডলফ ক্রিস্টোফের ফ্রেয়ার ফন গার্সডর্ফ
  •    ১৯৪৩ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে এক্সেল ফ্রেয়ারে ফন ডেম বুস-স্ট্রাইথরস্ট
  •    ১৯৪৪ সালের এ ইওয়াল্ড-হেনরিখ কফন ক্লাইস্ট-শ্মেজেন
  •    ১৯৪৪ সালের ১১ মার্চ এবারহার্ড ফ্রেয়ার ফন ব্রাইটেনবুখ

যুদ্ধ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেলে, হিটলার আর জনসমক্ষে হাজির হন নি এবং বার্লিনে খুব কমই ভ্রমণ করেন। তিনি বেশিরভাগ সময় প্রুসিয়ার নিকটে রাস্তেনবার্গে অবস্থিত ভুলফশানসে(ওলফস লেয়ার) তার সদর দফতরে অতিবাহিত করতেন, মাঝে মাঝে ব্যার্শটেসগাডেন এ অবস্থিত ওবারজালসবার্গের বাভারিয়ান পাহাড়ী রিট্রিটে সামইয়িক বিরতি নিয়ে। উভয় স্থানে তিনি অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন এবং ওচেনা বা বিশ্বাস করেন না এমন কারো সাথে খুব কম দেখা করতেন। হিমলার এবং গেস্টাপো হিটলারের বিরুদ্ধে চলা ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সন্দেহপ্রবণ ছিল এবং জেনারেল স্টাফের কর্মকর্তাদের যথাযথভাবে সন্দেহ করেছিল, যা প্রকৃতপক্ষে হিটলারের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্রের উৎস ছিল।

প্রস্তুতি সম্পাদনা

১৯৪৪ সালের গ্রীষ্মে গেস্টাপো ষড়যন্তকারীদের কাছাকাছি চলে আসছিল। সবাই বুঝতে পারছিল যে সময় চলে যাচ্ছে, জার্মানিতে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে যেহেতু ইস্টার্ন ফ্রন্ট ্সেখানে পিছু হঠছিল ও ৬ জুন, ফ্রান্সে মিত্র শক্তি অবতরণ করেছিল ।[ তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

স্টাউফেনবার্গ যখন ট্রেস্কোকে বার্তা পাঠান হিটলারকে হত্যা করার কোনো কারণ আছে কিনা যেহেতু কোনো রাজনৈতিক উদেশ্য সাধন হবে না, ট্রেস্কোর প্রতিক্রিয়া ছিল " হত্যাচেষ্টা করতেই হবে, তাতে যাই লাগুক । এটা যদি ব্যর্থও হয় আমাদের বার্লিনে পদক্ষেপ নিতে হবে। কার্যকর উদ্দেশ্য আর হেতু না, এখন ব্যপার হচ্ছে জার্মান বিদ্রোহিদের পুরো পৃথিবী আর ইতিহাসের চোখের সামনে কিছু করে দেখানো। এটা ছাড়া অন্য কোনো কিছুই আর বিষয় না।" [১৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Kahn, Arthur D. (২০০৩)। Experiment in OccupationPenn State University Press। পৃষ্ঠা 13। ডিওআই:10.1515/9780271022758-005 
  2. Office of United States Chief of Counsel for Prosecution of Axis Criminality (১৯৪৮)। Nazi Conspiracy and Aggression. Supplement B.United States Government Printing Office। পৃষ্ঠা 1688।