১৯৫১ সালের নেপালি বিপ্লব

১৯৫১ নেপালি বিপ্লব (নেপালি: सात सालको क्रान्ति, বা সাত সালকো ক্রান্তি নেপাল গণতান্ত্রিক আন্দোলন নামেও পরিচিত। নেপালে রাণা শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশে সংক্রান্ত রাণা শাসনের বিরুদ্ধে যে গণবিপ্লব শুরু হয় তা রুখে দেওয়া হয়। নেপাল প্রজা পরিষদ্ এবং নেপালি কংগ্রেস পার্টি এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করে। নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বে দেশব্যাপী সশস্ত্র বিপ্লবের পর রাণা শাসক বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ করেন। সেসব স্থানে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অবশেষে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সমন্বয়ে নয়াদিল্লিতে রাণা, কংগ্রেস ও রাজার মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হওয়ার পর কংগ্রেস আন্দোলন বন্ধ করা হয়।

১৯৫১ সালের নেপালি বিপ্লব
মূল যুদ্ধ: নেপালি গণতন্ত্র আন্দোলন

নেপালি কংগ্রেস এবং রাজা ত্রিভুবনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব
তারিখ৬ নভেম্বর ১৯৫০ —১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৫১
অবস্থান
ফলাফল

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা

  • একক সংক্রান্ত রানা শাসনের পতন
  • নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন
বিবাদমান পক্ষ
রাণা শাসন নেপালি কংগ্রেস
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
মোহন শমশের জঙ্গবাহাদুর রাণা নেপালি কংগ্রেসের নেতা
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
সৈনিক নিহত:
১৬০০
যৈনিক নিহত :
৯০০

রাজা ত্রিভুবন দীর্ঘদিন সপরিবারে ভারতে ছিলেন৷ ২০৫১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি নেপালে আসেন এবং ২০৫১ সালের ফেব্রুয়ারি ১৮ তারিখে গণতন্ত্র ঘোষণা করেন৷

রাজা ত্রিভুবনের নির্বাসন

সম্পাদনা
 
রাজা ত্রিভুবন

রাজা ত্রিভুবনের রাণা বিরোধী মনোভাব নেপালে দীর্ঘদিন ধরেই খোলা রহস্য ছিল। রাজা ত্রিভুবন নিজেই রাণাদের উৎখাত করার জন্য নেপাল প্রজা পরিষদ্কে স্পষ্ট সমর্থন দিয়েছিলেন। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাণারা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল, উদারপন্থী আন্দোলনকে নিষিদ্ধ করেছিল এবং তাদের নেতৃত্ব কার্যকর করেছিল। তখনও রাজা ত্রিভুবন রাণা শাসনের অবসানের প্রয়াসে প্রজা পরিষদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। অবশেষে ১৯৫০ সালের নভেম্বর মাসে রাজা ত্রিভুবন রাণাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দূতাবাসে আশ্রয় নেন এবং এর সঙ্গে ছিলেন পুত্র মহেন্দ্র ও জ্যেষ্ঠ নাতি বীরেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী মোহন শমশের জঙ্গবাহাদুর রাণা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং ১৯৫০ সালের ৭ নভেম্বর সিংহ দরবারে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে ত্রিভুবনের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানান। সেই সভায় তিনি ঘোষণা করেন রাজা ত্রিভুবনের তিন বছরের নাতি জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ নেপালের নতুন রাজা হবেন। একই দিনে, যুবরাজ জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহকে হনুমান ঢোকা দরবারে নিয়ে আসা হয় এবং নেপালের রাজা হিসাবে মুকুট পরানো হয়।[১] ১০ নভেম্বর দুটি ভারতীয় বিমান গৌচর বিমানবন্দরে অবতরণ করে এবং শিশু রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে বাদ দিয়ে রাজপরিবারের সাথে নয়া দিল্লি ফিরে আসে। রাজা ত্রিভুবনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। নতুন রাজার নিয়োগের ফলে সারা দেশে বিশাল বিক্ষোভ হয়েছিল। ১৯৫০ সালের ২২ নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন যে, জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহকে নেপালের বৈধ রাজা হিসেবে ভারত স্বীকৃতি দেবে না৷

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "सात सालको क्रान्तिः केही सम्झना"শিলাপত্র (নেপালি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯