হান্স ক্রিশ্চিয়ান গ্রাম

হান্স ক্রিশ্চিয়ান জোবাসিম গ্রাম (১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৫৩ – ১৪ নভেম্বর ১৯৩৮) একজন ডেনিস বীজাণুবিদ, ঔষধবিজ্ঞানী এবং অণুজীববিদ। তিনি গ্রেট গ্রাম স্টেইন-এর উন্নীতকরণে অগ্রণী অবদানের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। গ্রাম স্টেইন একধরনের রঞ্জক; এর সহায়তায় ব্যাকটেরিয়াসমূহ অণুবীক্ষণ যন্ত্রে সহজে দৃশ্যমান হয়। এর সহায়তায় গ্রাম-পজিটিভ এবং গ্রাম-নেগেটিভ হিসাবে ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাজনও করা হয়।

হান্স ক্রিশ্চিয়ান গ্রাম
Hans Christian Gram portrait by Hansen & Weller.jpg
জন্ম(১৮৫৩-০৯-১৩)১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৫৩
কোপেনহেগেন
মৃত্যু১৪ নভেম্বর ১৯৩৮(1938-11-14) (বয়স ৮৫)
কোপেনহেগেন
মাতৃশিক্ষায়তনকোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণগ্রাম স্টেইন আবিষ্কারক
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রজীবাণুবিদ্যা
ডক্টরাল উপদেষ্টাজেপটুস স্টিনত্রুপ
Author abbrev. (botany)ইন্ডিয়া

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে হান্স ক্রিশ্চিয়ান গ্রামের সম্মানার্থে তার ১৬৬তম জন্মদিনে গুগল বিশেষ ডুডুল প্রদর্শন করে।

প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষাসম্পাদনা

১৮৫৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে ডেনমার্ক-এ হান্স ক্রিশ্চিয়ান জোবাসিম গ্রামের জন্ম হয়েছিল। তিনি পিতা ফ্রেডরিক টারকেল জুলিয়াস গ্রাম আইনিবিদ্যার অধ্যাপক এবং মাতা লুসি ক্রিশ্চিয়ান রল্যান্ড।

তিনি কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়ন করেনছিলেন এবং জীববিজ্ঞানী জেপটুস স্টিনত্রুপের উদ্ভিদবিজ্ঞান সহকারী ছিলেন। উদ্ভিদবিদ্যা অধ্যয়ন করতে তিনি ঔষধী উদ্ভিদের মৌলিক তত্ত্ব এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যবহারের বিষয়ে শিখেছিলেন।

তিনি ১৮৭৮ সালে চিকিৎসা বিদ্যালয়ে নামভর্তি করেনন এবং ১৮৮৩ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেনন। তারপর তিনি ১৮৭৮ সাল থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ভ্রমণ করেনন। ১৮৮৪ সালে তিনি জার্মানীর বার্লিন-এ ব্যাকটেরিয়াকে দুটি মুখ্য শ্রেণীতে শ্রেণীবিভাজন করা এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেনন।[১] এই পদ্ধতিকে গ্রাম স্টেইনিং বলা হয় এবং বর্তমানে চিকিৎসা অণুজীববিদ্যাতে এর ব্যবহার করা হয়।

কর্মজীবনসম্পাদনা

১৮৯১ সালে ঔষধ বিজ্ঞান শিক্ষক হিসাবে তিনি কর্মজীবন আরম্ভ করেন। পরে তিনি কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঔষধ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেন। পরে তিনি ১৯০০ সালে ঔষধ বিজ্ঞানের অধ্যাপকের পদ ছেড়ে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন।

গ্রাম স্টেইনসম্পাদনা

হান্স ক্রিশ্চিয়ান গ্রাম উদ্ভাবিত ব্যাকটেরিয়াকে স্টেইন করার পদ্ধতি গ্রাম স্টেইনর জন্য গোটা বিশ্বে পরিচিত। এই পদ্ধতির সহায়তায় ব্যাকটেরিয়া সমূহ অণুবীক্ষণ যন্ত্রে সহজে দৃশ্যমান হয়। এর সহায়তায় গ্রাম-পজিটিভ এবং গ্রাম-নেগেটিভ হিসাবে ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাজনও করা হয়। গ্রাম স্টেইন ক্রিস্টাল ভায়লেট এবং সেফ্রানিন এই দুরকম রঞ্জক তৈরী করা হয়। স্টেইনিঙের পরে গোলাপী-বেগুনী রঙের হলে ব্যাকটেরিয়াটিকে গ্রাম-পজিটিভ এবং রঙা রঙের হলে গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে শ্রেণীবিভাজন করা হয়।

 
ষ্টেফওকক্কাস আউরাস (বেগুনী, গ্রাম পজিটিভ) এবং এসকেরিসিয়া কলাই (রঙা, গ্রাম নেগেটিভ) মিশ্রিত ব্যাকটেরিয়ার গ্রাম স্টেইনিং

অন্যান্য কর্মসম্পাদনা

তিনি প্রথমে মানব লোহিত রক্তকণিকার অধ্যয়ন করেছিলেন। তিনি পারনিসিয়াস এনিমিয়ার বৈশিষ্ট্য হিসাবে ম্যাক্রোসাইটকে চিহ্নিত করেছিলেন।

১৯০০ সালে তিনি কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেছিলেন।[২] অধ্যাপক হিসাবে তিনি চারটি খণ্ডে ক্লিনিক্যাল বক্তব্য প্রকাশিত করেছিলেন। এই গ্রন্থ ডেনমার্কে বহুল ভাবে প্রচলিত হয়েছিল। ১৯২৩ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[২]

মৃত্যুসম্পাদনা

১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর তারিখে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে ৮৫ বছর বয়সে হান্স ক্রিশ্চিয়ান গ্রামের মৃত্যু হয়।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. Gram, H.C. (১৮৮৪)। "Über die isolierte Färbung der Schizomyceten in Schnitt- und Trockenpräparaten"। Fortschritte der Medizin (German ভাষায়)। 2: 185–189। 
    An English translation is in Brock, T.D. (১৯৯৯)। Milestones in Microbiology 1546–1940 (2 সংস্করণ)। ASM Press। পৃষ্ঠা 215–218। আইএসবিএন 1-55581-142-6 
    A translation is also at Brock, T.D.। "Pioneers in Medical Laboratory Science: Christian Gram 1884"। Hoslink। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-২৭ 
  2. Jay Hardy। "Gram's Serendipitous Stain" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৬ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা