হাত্রা
হাত্রা (আরবি ভাষায়: الحضر al-Ḥaḍr) ইরাকের নিনাওয়া প্রদেশের এবং আল কারেন অঞ্চলের একটি প্রাচীন শহর। এটা আল হাদর নামেও পরিচিত। নামটি প্রাচীন পুঁথিতে পাওয়া যায় এবং এটা পারস্যের খাভারানের প্রদেশ ছিলো। শহরটি বাগদাদের ২৯০ কিমি (১৮০ মা) উত্তর-পশ্চিমে এবং মশুলের ১১০ কিমি (৬৮ মা) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।
الحضر | |
অবস্থান | হাত্রা জেলা, নিনাওয়া প্রদেশ, ইরাক |
---|---|
অঞ্চল | মেসোপটেমিয়া |
স্থানাঙ্ক | ৩৫°৩৫′১৭″ উত্তর ৪২°৪৩′৬″ পূর্ব / ৩৫.৫৮৮০৬° উত্তর ৪২.৭১৮৩৩° পূর্ব |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | ৩য় বা ২য় খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ |
পরিত্যক্ত | ২৪১ খ্রিস্টাব্দ |
স্থান নোটসমূহ | |
অবস্থা | "Leveled" (status undetermined) |
জনসাধারণের প্রবেশাধিকার | প্রবেশ অযোগ্য (যুদ্ধক্ষেত্র) |
প্রাতিষ্ঠানিক নাম | হাত্রা |
ধরন | সাংস্কৃতিক |
মানদণ্ড | ii, iii, iv, vi |
মনোনীত | ১৯৮৫ (9th session) |
সূত্র নং | 277 |
Region | আরব অঞ্চল |
২০১৫ সালের ৭ মার্চ ইরাকি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায় ইসলামি জংগী গ্রুপ গ্রুপ ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এবং লেভান্ত (ISIL) হাত্রার ধ্বংসাবশেষ নষ্ট করে ফেলতে শুরু করে।[১][২] পরের মাসে আইএসআইএল মিনার ধ্বংসের ভিডিও প্রকাশ করে।[৩]
ইতিহাস
সম্পাদনাহাত্রা সম্ভবত ৩য় বা ২য় খ্রিস্টপূর্বাব্দে সেলেকি সাম্রাজ্য কর্তৃক নির্মিত হয়। পরবর্তীতে পার্থিয়ান সাম্রাজ্য এটা দখল করে নেয়। ১ম ও ২য় শতাব্দীতে এটা ধর্ম ও ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়।[৪] পরবর্তীতে শহরটি সম্ভবত ১ম আরব সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়ে ওঠে। হাত্রা থেকে শাসিত অঞ্চল আরব রাজ্য নামে পরিচিত পায় যা আরব রাজপুত্র কর্তৃক পরিচালিত হতো।
হাত্রা অচিরেই একটি সুরক্ষিত দুর্গ শহরে পরিণত এবং রোমান সামাজ্যের বারবার করা আক্রমণ রুখে দিতে থাকে। দ্বিতীয় পার্থিয়ান যুদ্ধে শহরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো। এটা ট্রোজান (১১৬/১১৭) এবং সেপ্টিমাস সেভেরাসের(১৯৮/১৯৯) আক্রমণ প্রতিহত । ২৩৮ সালে হাত্রা শাহরাযুর যুদ্ধে ইরানীদের পরাজিত করে কিন্তু ২৪১ সালে ইরানি সাসানিয় সম্রাট ১ম শাপুরের কাছে পরাজিত হয় এবং ধ্বংস হয়। ঐতিহ্যময়ী গল্পগুলোতে হাত্রার পতন সম্পর্কে বলা হয় আরব রাজার কন্য আন-নাদিরা বিশ্বাসঘাতকতা করে শহরটি শাপুরের হাতে তুলে দেয়। গল্পটিতে বলা হয় শাপুর কীভাবে রাজাকে হত্যা করে আন নাদিরা কে বিবাহ করে কিন্তু পরবর্তীতে তাকেও হত্যা করে।
আধুনিক হাত্রা
সম্পাদনা১৯৭৩ সালের চলচ্চিত্র দ্যা এক্সোসিস্ট এর শুরুর দৃশ্যের চিত্রায়ন হাত্রাতে করা হয়[৫]। ১৯৮৫ সাল থেকে স্থানটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে [৬]।
সাদ্দাম হোসেন সাইটটিকে মেসোপটেমীয় ইতিহাসের প্রতিফলন হিসেবে দেখতেন এবং হাত্রাসহ নিনেভেহ, নিমরদ, আশুর এবং ব্যবিলন সংস্কারের উদ্যোগ নেন আরব কৃতিত্বের প্রতীক হিসেবে[৭]। ব্যাবিলনের ১ম পর্যায়ের সংস্কার কার্যে $৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়। সাদ্দাম।দাবী করেন সংস্কার কার্যে ব্যবহৃত ইটে তার নাম ব্যবহার করতে হবে এবং হাত্রার সংস্কারকৃত মন্দিরের অংশের নাম তার নামে হতে হবে।[৮]
১৯৮৭ সাল থেকে তুরিনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আর. রিক্কিয়ারডি ভেনকো পরিচালিত ইতালীয় প্রত্নতত্ত্বীয় খনন হাত্রায় কাজ করছে। খননে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনকে নির্দিষ্ট করা হয় যা তেমেনোসের কাছে অবস্থিত। সাইট সংরক্ষণ এবং প্রত্নস্থলের উন্নয়নে এখন বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে খনন কাজ চলছে।
২০০৪ সালে দ্যা টেলিগ্রাফ প্রতিবেদন করে যে, হাত্রার সুন্দর সুরক্ষিত কলাম এবং মূর্তি হাত্রাকে ইরাকে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক স্থানে পরিণত করেছেন[৯] ।
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
২০০৪ সালে টিকে থাকা মন্দির ও প্রাচীন দেয়ালের চিত্র
-
২০০৭ সালের হাত্রা
-
মে ২০০৬
-
মে ২০০৬
-
মে ২০০৬
-
নভেম্বর ২০০৮
-
নভেম্বর ২০০৮
-
সেপ্টেম্বর ২০১০
-
সেপ্টেম্বর ২০১০
-
সেপ্টেম্বর ২০১৪
-
হাত্রার নান্দনিক সৌন্দর্য
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ABC news
- ↑ UN News Centre
- ↑ Vivian Salama (৪ এপ্রিল ২০১৫)। "Video: Islamic State group shot, hammered away Iraq's Hatra"। Associated Press। ১১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ "Hatra"। Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ Freeman, Colin s (২৫ জুন ২০১৪)। "Iraq's 'Exorcist' temple falls into Isis jihadist hand"। The Telegraph। London। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Hatra"। whc.unesco.org। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Lawrence Rothfield (১ আগস্ট ২০০৯)। The Rape of Mesopotamia: Behind the Looting of the Iraq Museum। University of Chicago Press।
- ↑ "Ancient Hatra Ruins"। Defense Video & Imagery Distribution System। ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬।
- ↑ Freeman, Colin (৪ জানুয়ারি ২০০৪)। "American troops launch 'Exorcist' tour at ancient temple"। The Telegraph।