হাইকু

জাপানি কবিতার ধরন

হাইকু (একবচনে "হাইকি") একধরনের সংক্ষিপ্ত জাপানি কবিতা। তিনটি পংক্তিতে যথাক্রমে ৫, ৭ এবং ৫ জাপানি শ্বাসাঘাত মোরাস মিলে মোট ১৭ মোরাসের সংক্ষিপ্ত পরিসরে একটি মুহূর্তে ঘটিত মনের ভাব প্রকাশ করা হয়। জাপানি হাইকু একটি লাইনে লিখিত হয়। সেই বাক্যটিতে ১৭টি মোরাস থাকে। সাধারণত একটি ছবি বর্ণনা করার জন্য হাইকু লিখিত হয়। মোরাস ও মাত্রা একই ব্যাপার নয়। ইউরোপিয়গণ ১৭ মোরাসকে ১৭ দল মনে করে হাইকু লেখার সূত্রপাত করে। তাদের দেখাদেখি বাংলা ভাষায় ১৭ মাত্রার হাইকু লেখার প্রচলন হয়। মোরাস, দল ও মাত্রা এক-একটি ভাষার নিজস্ব শ্বাস অনুসারী। সেই অনুজায়ী ১২ মোরাসে ১৭ সিলেবল হয়। ইউরোপে ইমেজিস্ট আন্দোলনের পর ১৭ সিলেবলের পরিবর্তে আরো বেশি সিলেবলের হাইকু লেখা শুরু হয়েছে। জ্যাক কেরুয়াক প্রমুখ মার্কিন কবিগণ স্বীকার করেছেন যে মার্কিন উচ্চারণ জাপানি উচ্চারণ হইতে সম্পূর্ণ পৃথক। তারা ১৭ দল ও তিন বাক্য্ বন্ধন অস্বীকার করে হাইকু লিখেছেন। বাংলা ভাষায় প্রথম আন্তর্জাতিক হাইকু কবি সম্মেলন হয়েছে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, কলকাতায় কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবনে, 'যুথিকা সাহিত্য পত্রিকা'র আয়োজনে।[১]

  • কোবায়িশি ইশার হাইকু: জোনাকি উড়ে যায়/এত দ্রুত এত নিঃশব্দে/আলোটুকু ফেলে যায়
  • মাৎসু বাসো'র হাইকু: প্রজাপতি আতর মাখছে/নিজের ডানায়/অর্কিডের সুবাস
  • য়োসা বুসন-এর হাইকু: কুঠারের এক ঘা/পাইনগাছের গন্ধ/শীতের বনানীতে

হাইকুর ইতিহাস সম্পাদনা

  • ব্যাশোপূর্ব কাল (১৫-১৬ শতক)
  • মাৎসু বাসো (১৬৪৪-১৬৯৪)
  • বুসন ইয়োসা (১৭১৬-১৭৮৩)
  • শিকি মাসাওকা (১৮৬৭-১৯০২)
  • কিওশি তাকাহামা (১৮৭৪-১৯৫৯)
  • ইপাকিরো নাকাৎসুকা (১৮৮৭-১৯৪৬)
  • সেকিতেয়ি হারা (১৮৮৯-১৯৫১)
  • হিসাজো সুগিতা (১৮৯০-১৯৪৬)
  • সুজু তাকানো (১৮৯৩-১৯৭৬)
  • কাকিয়ো তোমিজাওয়া (১৯০২-১৯৬২)
  • কোয়ি নাগাতা (১৯০০-১৯৯৭)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "প্রথম আন্তর্জাতিক হাইকু কবি সম্মেলন এবং 'অনুভূতির কথায়' কৃষ্টিগত সাময়িকীর আত্মপ্রকাশ"। সাপ্তাহিক নতুন গতি। ৭–১৩ অক্টোবর ২০১৯। পৃষ্ঠা ১৩।