হরিতাল টি এক প্রকার বিষাক্ত খনিজ পদার্থ। সাধারণত আগ্নেয় শিলার সাথে এই পদার্থ পাওয়া যায়। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ৩.৪৯। এর গলানাঙ্ক ৩০০ ডিগ্রি থেকে ৩২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর রঙ সবুজাভ হলুদ, সোনালি বা বাদামি হলুদ হয়ে থাকে।

হরিতাল

প্রাচীন চীনে এই খনিজ পদার্থটি ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হতো। এছাড়া চীনে তীর বা বল্লমের অগ্রভাগে হরিতাল বিষ হিসাবে ব্যবহার করা হতো। একসময় চীন এবং মধ্যপ্রাচ্য রাসায়নিক প্রক্রিয়া স্বর্ণ তৈরি প্রচেষ্টায় রসায়নবিদরা ব্যবহার করতেন। যদিও এই গবেষণায় স্বর্ণ তৈরি সম্ভব হয় নি। কিন্তু এই পদার্থটি যে চমৎকার রঙ প্রদান করতে পারে, এই অভিজ্ঞতা তাঁদের হয়েছিল। সেই সূত্রে পরবর্তীয় এই পদার্থটি রঙিন চিত্রকর্মে চিত্রশিল্পীরা ব্যবহার করতেন। বর্তমানে অবলোহিত লাল আলো সঞ্চালনকারী কাঁচ তৈরিতে এই পদার্থটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া অর্ধ-পরিবাহী পদার্থ এবং আলোক-সংবেদী পদার্থ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া রঙের উপাদান এবং আতশবাজিতে রঙ ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার আছে।

আয়ুর্বেদ মতে- হরিতাল দুই প্রকার। এই প্রকার দুটি হলো- পত্র হরিতাল ও পিণ্ড হরিতাল।

১. পত্র হরিতাল : ভিন্ন নাম পত্রাখ্যা হরিতাল। আয়ুর্বেদে পত্র হরিতলাকে গুণের বিচারে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়। এই হরিতালের রঙ সোনালি এবং ওজনে ভারি। এটি স্নিগ্ধ এবং অভ্রের মতো স্তরে স্তরে বিন্যস্ত থাকে। এর স্বাদ কটু-কষযুক্ত। এর অমায়িক ব্যবহার হয়ে থাকে- বিষনাশক, কুষ্ঠ নিরাময়, রক্তদোষ নিরাময়ের ক্ষেত্রে। এছাড়া ব্রণদূরীকরণ, কফ, পিত্ত দোষ নিবারণেও ব্যবহার করা হয়।

২. পিণ্ড হরিতাল: ভিন্ন নাম পিণ্ডাখ্য হরিতাল। পিণ্ড হরিতাল মূলত পিণ্ডের মতো পাওয়া যায়। কখনো নগন্য মাত্রা এতে স্তর লক্ষ্য করা যায়। আয়ুর্বেদে এই হরিতলাকে পত্র হরিতালের চেয়ে কম গুণবিশিষ্ট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। মেয়েদের রজোনাশক হিসাবে এর ব্যবহার আছে।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা