স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস

স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস ছিল একটি পাল্প ম্যাগাজিন, ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত যার তেরটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। এটি সম্পাদনা করেছিলেন মরট বেসিঙ্গার, যার নাম উল্লেখিত হত না। লেখকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রবার্ট ব্লচ, এরিক ফ্রাঙ্ক রাসেল, সি.এল. মুর, অগাস্ট ডারলেথ এবং হেনরি কারটনার। স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস রোমাঞ্চ কথাসাহিত্যের প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা উইয়ারড টেলস এর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল।১৯৩৯ সালে প্রকাশিত আরেকটি পত্রিকা আননোন এর সাথে স্ট্রেঞ্জ স্টোরিসপ্রতিযোগিতা করতে পারছিল না। ১৯৪১ সালে বেসিঙ্গার সুপারম্যান কমিক বুক সম্পাদনা শুরু করলে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।

স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস আগস্ট, ১৯৩৯-এর প্রচ্ছদ, প্রচ্ছদশিল্পী ছিলেন আর্ল কে. বারগ

প্রকাশনার ইতিহাস ও বিষয়বস্তু সম্পাদনা

ফ্যান্টাসি এবং অতিপ্রাকৃত কথাসাহিত্য বিংশ শতাব্দীর পূর্ব থেকেই বিভিন্ন জনপ্রিয় পত্রিকায় পাওয়া যেত, কিন্তু ১৯২৩ সালে উইয়ারড টেলস প্রকাশ হবার সময় এটিই ছিল এই ঘরানার প্রথম পত্রিকা, যা ১৯৩০ সালের মধ্যেই এই ঘরানার মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে।[১] ১৯0 সালে আরো দুটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়, এর একটি হচ্ছে স্ট্রিট এন্ড স্মিথ এর আননোন , অপরটি হল স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস, যা প্রকাশ করত স্ট্যান্ডার্ড ম্যাগাজিন। এবং সম্পাদনা করতেন মরট বেসিঙ্গার, যিনি ইতোপূর্বেই স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত থ্রিলিং ওয়ান্ডার স্টোরিস এবং স্টার্টলিং স্টোরিস সম্পাদনা করেছিলেন। [২] বেসিঙ্গার উইয়ারড টেলস এর বিভিন্ন লেখকদের কাছ থেকে লেখা সংগ্রহ করতেন। তাদের মধ্যে ছিলেন অগাস্ট ডারলেথ, হেনরি কারটনার এবং রবার্ট ব্লচ। যারা পত্রিকার তেরটি সংখ্যায় প্রকাশিত ১৪৮টি কাহিনীর মধ্যে ৪০টি লিখেছিলেন।[৩] সমালোচকরা অল্প কিছু কাহিনীকে স্মরণীয় হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তারমধ্যে কারটনারের দুটি গল্প হল: "কার্স বি দ্য সিটি" এবং "দ্য সিটাডেল অব ডার্কনেস" যা এপ্রিল ও আগস্ট ১৯৩৯ সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল;[২] তাছাড়া ডারলেথ এর "লোগোদা'স হেড", যেটি  কল্পবিজ্ঞান গবেষক রবার্ট অয়েনবারগ এর মতে "সম্ভবত যে কোন পত্রিকার জন্য ডারলেথের সেরা রোমাঞ্চ ফান্টাসি";[৪] এবং প্রথম দিকের কিছু সংখ্যায় ম্যানলি অয়েড ওয়েলম্যান এর লেখা কিছু কাহিনী থাকত।[৪] অন্যান্য লেখকদের মধ্যে ছিলেন এরিক ফ্রাঙ্ক রাসেল, সি.এল. মুর এবং সীবারি কুইন। [২][৪] সে সময় কোন ধারাবাহিক কাহিনী ছাপা হত না, স্ট্যান্ডার্ড এর পলিসিতে তা নিষিদ্ধ ছিল। ওয়াইনবার্গের মতে, স্ট্যান্ডার্ড-এর নিজস্ব শিল্পী রুডলফ বেলরাক্সি ও আর্ল কে.বারগের করা প্রচ্ছদ গুলো ছিল "পাল্প পত্রিকার মধ্যে দেখা সবচেয়ে বাজে"।[৪] পত্রিকাটি উইয়ারড টেলসকে অনুকরণ করার প্রয়াস লক্ষ্য করা যেত এবং বেসিঙ্গার এতে স্বাতন্ত্র্য কিছু যোগ করতে পারেন নি। [২] এটা  স্ট্যান্ডার্ড এর প্রতিষ্ঠিত অন্য কোন পত্রিকা থেকে সামান্যই সহায়তা পেয়েছিল। সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড এর প্রতিটি পত্রিকা তাদের অন্যান্য প্রকাশনার জন্য বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করত, কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত স্টার্টলিং ষ্টোরিস এবং থ্রিলিং ওয়ান্ডার ষ্টোরিস এ ব্যাপারে স্ট্রেঞ্জ ষ্টোরিস কে সামান্যই সহায়তা করেছিল।[৫]

বেসিঙ্গার সুপারম্যান কমিকস সম্পাদনার জন্য ১৯৪১ সালে স্ট্যান্ডার্ড ম্যাগাজিন ছেড়ে দেন, সম্পাদনা পরিচালক লিও মারগুলিস পত্রিকাটি চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক ছিলেন না। শেষ সংখ্যাটির তারিখ ছিল ফেব্রুয়ারি, ১৯৪১।[২][৬] কিছু গল্প স্ট্রেঞ্জ ম্যাগাজিন থেকে কেনা হলেও শেষে সেগুলো অপ্রকাশিত থাকে। পরবর্তীতে স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত অন্য পত্রিকাগুলোতে এগুলো ছাপা হয়, এর মধ্যে ছিল কারটনারের "দ্য রোড টু ইয়েস্টার ডে", যা থ্রিলিং এডভেঞ্চার-এর আগস্ট ১৯৪১ সংখ্যায় এবং সীবারি কুইন-এর "আই ম্যারিড আ গোষ্ট", যা থ্রিলিং মিস্ট্রি তে জুলাই ১৯৪১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।[৭]

গ্রন্থপঞ্জির বিবরন সম্পাদনা

'স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস' এর সংখ্যা গুলো
জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টেম্বর অক্টোবর নভেম্বর ডিসেম্বর
১৯৩৯ ১/১ ১/২ ১/৩ ২/১ ২/২ ২/৩
১৯৪০ ৩/১ ৩/২ ৩/৩ ৪/১ ৪/২ ৪/৩
১৯৪১ ৫/১
স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস এর সংখ্যাসমূহ', ভলিউম/ইস্যু সংখ্যা। মরট বেসিঙ্গার
সম্পাদক থাকাকালীন[৪][৫]

স্ট্রেঞ্জ স্টোরিস এর তেরটি সংখ্যাই ছিল পাল্প ধরনের। এগুলো ছিল ১২৮ পৃষ্ঠার এবং জুন ১৯৪০ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ১৫ সেন্ট করে বিক্রি হত, তার পর পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে ৯৬ করা হয় এবং দাম কমিয়ে ১০ সেন্ট করা হয়। এটি সম্পাদনা করেছিলেন মরট বেসিঙ্গার, যার নাম উল্লেখিত হত না।[৪] প্রকাশক ছিল বেটার পাবলিকেশন, যা নিউ ইয়র্ক এর স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।[৮] স্ট্রেঞ্জ ষ্টোরিস শুরু থেকেই দ্বি-মাসিক হিসেবে প্রকাশিত হত। প্রতিটি ভলিউমে তিনটি করে ইস্যু থাকত, শুধু মাত্র শেষ ভলিউমে কেবল একটি সংখ্যা ছিল।[৪]

পাদটিকা সম্পাদনা

  1. Weinberg (1985b), pp. 626–628.
  2. Ashley (2000), pp. 139–140.
  3. Ashley (1997), p. 902.
  4. Robert Weinberg (1985a), pp. 623–625.
  5. Edwards, Malcolm (৮ জানুয়ারি ২০১২)। "Strange Stories"SF Encyclopedia। Gollancz। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  6. Moskowitz (1974), p. 109.
  7. Weinberg (2011), pp. 8–10.
  8. Ashley (2000), p. 250.

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •