সোল্ড (ম্যাকরমিকের উপন্যাস)

সোল্ড (ইংরেজি: Sold, অনুবাদ'বিক্রীত') হল প্যাট্রিশিয়া ম্যাকরমিক রচিত ২০০৬ সালের উপন্যাস। এতে লক্ষ্মী নামে একটি মেয়ের গল্প বলা হয়েছে, যাকে ভারতে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়। উপন্যাসটি এর কেন্দ্রীয় চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে ছোট, অলঙ্কারমূলক নকশা-শৈলীর পরিচ্ছেদ সহযোগে লেখা হয়। ২০১৪ সালে এই উপন্যাস অবলম্বনে পরিচালক জেফ্রি ডি. ব্রাউন একই নামের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

সোল্ড
লেখকপ্যাট্রিশিয়া ম্যাকরমিক
মূল শিরোনামনেপাল
প্রচ্ছদ শিল্পীব্রায়ান বার্নার্ড
ধরনবাস্তবধর্মী কল্পকাহিনী
প্রকাশকহাইপেরিয়ন
প্রকাশনার তারিখ
২০০৬
মিডিয়া ধরনমুদ্রিত (শক্তমলাটপেপারব্যাক)
পৃষ্ঠাসংখ্যা২৬৩
আইএসবিএন০-৭৮৬৮-৫১৭১-৬
ওসিএলসি৭০৭১০২৭৮
এলসি শ্রেণীPZ7.5.M43 Sol 2006

গল্প সংক্ষেপ সম্পাদনা

১৩ বছর বয়সী লক্ষ্মী নেপালের পর্বতে একটি ছোট কুটিরে তার পরিবারের সাথে বসবাস করে। তার পরিবার খুবই দরিদ্র, কিন্তু সে খুবই আনন্দে দিনাতিপাত করছিল। তার আনন্দের মধ্যে রয়েছে তার সাদাকালো ছাগল লালনপালন করা এবং তার মায়ের হাতে তার চুল আচড়ে দেওয়া। কিন্তু নিষ্ঠুর হিমালয়ের মৌসুমী বর্ষায় তার পরিবারের ফসলি জমি ধ্বংস হয়ে যায়। লক্ষ্মীর সৎবাবা চায় সে পরিবারের ভরণপোষণের জন্য কাজ করুক।

লক্ষ্মীর সৎবাবা তাকে একজন সুদর্শন পুরুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় যে তাকে শহরে একজন ধনী মহিলার বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ পাইয়ে দিবে বলে আশ্বাস দেয়। পরিবারের কাজে আসতে পারবে এই ভেবে লক্ষ্মী ভারতে পৌঁছায় এবং অনেক আশা নিয়ে "হ্যাপিনেস হাউজ"-এ আসে। কিন্তু অচিরেই সে ভয়ানক সত্য জানতে পারে যে তাকে গণিকাবৃত্তির কাজের জন্য বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

মুমতাজ নামের একজন বৃদ্ধ মহিলা নিষ্ঠুরতা ও চতুরতার সাথে গণিকালয় পরিচালনা করে। সে লক্ষ্মীকে জানায় যে তার পরিবারের ঋণ পরিশোধ না করা অবধি তাকে সেখানে থাকতে হবে এবং লক্ষ্মীর অপ্রতুল আয়ও সে জব্দ করে যাতে সে পালাতে না পারে।

লক্ষ্মীর জীবন এক দুঃস্বপ্নে রূপ নেয়, যেখান থেকে সে পালাতে পারে না। তবুও সে তার মায়ের কথা মনে করে - "ধৈর্য ধরলে বিজয় আসবে" এবং নতুন জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ধীরে ধীরে সে অন্যান্য মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে। সে তার চারপাশের লোকজনের কাছ থেকে শুনে এবং বই থেকে নিজে নিজে ইংরেজি পড়তে ও বলতে শিখে।

ইতোমধ্যে, লক্ষ্মী একজন মার্কিনীর সাথে পরিচিত হয়, যে মুমতাজ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড়ের উদ্দেশ্যে খদ্দেরের ছদ্মবেশে সেখানে উপস্থিত হয়। মুমতাজকে অবশেষে গ্রেফতার করা হয় এবং লক্ষ্মীসহ অন্যান্য মেয়েরা সেই গণিকালয় থেকে মুক্তি পায়।

চরিত্রাবলি সম্পাদনা

  • লক্ষ্মী, ১৩ বছর বয়সী কৃষক পরিবারের কন্যা, উপন্যাসের বর্ণনাকারী ও কেন্দ্রীয় চরিত্র।
  • আমা, লক্ষ্মীর মা।
  • সৎবাবা, অলস জুয়াড়ী ও আমার দ্বিতীয় স্বামী।
  • গীতা, লক্ষ্মীর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। সে শহরে এক ধনী পরিবারে কাজ করতে যায় এবং বাড়িতে টাকা পাঠায়।
  • তালি, লক্ষ্মীর ছাগল।
  • বাজাই সীতা, লক্ষ্মীকে ক্রয় করা প্রথম ব্যক্তি।
  • বিমলা মাসী, লক্ষ্মীর বর্ণনা অনুযায়ী একজন আধুনিক মহিলা, যার কাছে সে গৃহপরিচারিকার কাজ করবে বলে বলা হয়েছিল।
  • আঙ্কল হাজবেন্ড, লক্ষ্মীকে সীমান্তে যেখানে কাজ করবে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন।
  • মুমতাজ, হ্যাপিনেস হাউজের মালিক। তাকে নিষ্ঠুর ও স্বার্থপর মহিলা হিসেবে চিত্রিত করা হয়।
  • শাহানা, হ্যাপিনেস হাউজে লক্ষ্মীর প্রথম বান্ধবী। তার বাড়িও লক্ষ্মীর দেশে এবং সে তাকে নতুন জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে।
  • পুষ্প, লক্ষ্মীর রুমমেট। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর সে মুমতাজের কাছে কাজ করতে আসে। তার একটি শিশু কন্যা ও একটি ৮ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে।
  • শিল্পা, মুমতাজের গুপ্তচর। সে নিজের ইচ্ছাতেই হ্যাপিনেস হাউজে আসে।
  • অনিতা, লক্ষ্মীর অপর রুমমেট। সেও লক্ষ্মী ও শাহানার দেশ থেকে আগত।
  • হরিশ, ডেভিড ব্যাকহাম ও পুষ্পর ৮ বছর বয়সী ছেলে।
  • চা ওয়ালা, হ্যাপিনেস হাউজে মেয়েদের প্রতিদিন চা দিতে আসে।
  • মনিকা, হ্যাপিনেস হাউজের সর্বোচ্চ আয়কারী চরিত্র, সে তার ঋণ পায় শোধ করে ফেলেছিল।
  • মার্কিন খদ্দের #১, সে লক্ষ্মীর জন্য টাকা প্রদান করে কিন্তু তার সাথে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় না।
  • মার্কিন খদ্দের #২, সে ভালো লোক নয় এবং লক্ষ্মীকে হ্যাপিনেস হাউজ থেকে বাঁচাতেও আগ্রহী নয়। বরং সে মদ্যপ অবস্থায় আসে এবং লক্ষ্মীর সাথে রাত কাটায়।
  • মার্কিন খদ্দের #৩, সে লক্ষ্মীর কাছে আসে এবং তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। সে লক্ষ্মীর ছবি তোলে।
  • হাবিব, লক্ষ্মীর প্রথম খদ্দের।

মূল্যায়ন সম্পাদনা

সোল্ড এক অপরিচিত পৃথিবী পাঠকদের সামনে তুলে ধরার জন্য ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে। কার্কাস রিভিউস মন্তব্য করে, "ম্যাকরমিক যেসব নিরাপদে বসবাস করেন ও আইনের বলে সুরক্ষিত থাকেন তাদের সামনে রুঢ় ও নিষ্ঠুর পৃথিবীর চিত্র তুলে ধরেছেন।"[১] বুকলিস্টও একমত হয় যে "সোল্ড" বর্তমানে বিদ্যমান যৌন দাসত্বের অবিস্মরণীয় রচনা।[২]

পুরস্কার সম্পাদনা

  • এএলএ তরুণদের জন্য শীর্ষ ১০ সেরা বই - ২০০৭[৩][৪]
  • ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড - ২০০৭ (ফাইনালিস্ট)
  • ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও - বর্ষসেরা শীর্ষ ১০০ বই ২০০৭
  • বুক সেন্স পিক ২০০৭
  • ক্যালিফোর্নিয়া ইয়াং রিডার মেডেল ২০০৭
  • কুইল পুরস্কার ২০০৭
  • গুস্তাভ-হাইনেমান-শান্তি পুরস্কার ২০০৮
  • ইলিয়ট রোজওয়াটার পুরস্কার ২০০৯-২০১০

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "McCormick, Patricia, Sold. (young adult review) (brief article) (Book review)"কার্কাস রিভিউস। কার্কাস মিডিয়া। ৭৪ (১৭): ৯০৮। সেপ্টেম্বর ১, ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২১ 
  2. রোচম্যান, হ্যাজেল (১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৬)। "Daughters For Sale. (Story behind the Story: Patricia McCormick's Sold)"বুকলিস্ট। আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন। ১০৩ (২)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২১ 
  3. "2007 Best Books for Young Adults"আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন। ২০০৭। ২০১১-০২-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২১ 
  4. "Patricia McCormick's Biography"হার্পার টিন। ১ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা