সোমসার

পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের একটি গ্রাম

সোমসার বাঁকুড়া জেলার দামোদর ও শালী নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত একটি ছোট গ্রাম। বিষ্ণুপুর মহকুমার ইন্দাস সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত গ্রামটির অবস্থান কোড হল ৩২৭৭১১। [১] শান্ত, সবুজের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের গ্রামটি পলাশ ডাঙ্গা এবং ভগিতপুরের মতো গ্রাম দ্বারা বেষ্টিত। সোমসার থেকে জয়রামবাটী খুব কাছে। গাড়িতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। বর্ধমানের খণ্ডঘোষ হয়েও সহজে আসা যায়। যেহেতু, জয়রামবাটী-কামারপুকুর পাশাপাশি দুটি জায়গা, এর সঙ্গে 'ইন্দাস' (যেখানে রামকৃষ্ণ মিশনের এটি উপকেন্দ্র আছে) ও 'সোমসার' যুক্ত হলে চারটি পুণ্যস্থান একসাথে পরিভ্রমণ করা যায়।[২]

সোমসার
গ্রাম
লুয়া ত্রুটি মডিউল:অবস্থান_মানচিত্ এর 393 নং লাইনে: স্থানাঙ্কের মান বিকৃত। পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক:
দেশ ভারত
রাজ্যWest Bengal
জেলাবাঁকুড়া
সময় অঞ্চলIST (ইউটিসি+5.30)
পিন৭১৩৪১২
ওয়েবসাইটhttps://bankura.gov.in/

নামকরণ

সম্পাদনা

গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা দামোদর নদের একেবারে পাশে রয়েছে প্রাচীন 'সোমেশ্বর শিব' মন্দির। গ্রামের প্রধান উপাস্য দেবতা সোমেশ্বর শিবের নাম অনুসারেই এই গ্রামের নাম হয় সোমসার। [২]

ভৌগলিক উপাত্ত

সম্পাদনা

গ্রামটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হলো ২৩.২১৯৬ উত্তর, ৮৭.৬৪০৩ পূর্ব।

জনসংখ্যার উপাত্ত

সম্পাদনা

ভারতের ২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে, সোমসারের জনসংখ্যা ৪৪২১ জন যার মধ্যে ২১৩৬ জন মহিলা এবং ২২৮৫ জন পুরুষ৷ সোমসার সাক্ষরতার হার হল ৬৩.১২% যা রাজ্য স্তরের সাক্ষরতার হার থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম যা ৭৬.২৬% এবং গ্রামটিতে ৯৫৭টি পরিবার বসবাস করে এবং এদের বেশিরভাগই অনগ্রসর শ্রেণির। গ্রামটির সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক পরিবেশ আকৃষ্ট করে পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্তের মানুষকে। তাই একটি আদর্শ পিকনিক স্থান হিসাবে বিবেচিত হয়।

বিশাল বট অশ্বত্থ গাছের মাঝে শান্ত, স্নিগ্ধ নির্মল জীবনের সহায়ক এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ রামকৃষ্ণ মিশনের দ্বাদশ অধ্যক্ষ স্বামী ভুতেশানন্দজি মহারাজ।

গ্রামের কিছু রামকৃষ্ণদেবের ভক্তমণ্ডলী পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নতি বিধানে জরুরী চিকিৎসা এবং প্রাথমিক শিক্ষাসহ বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা দিতে স্বামী ভুতেশানন্দজি মহারাজের পরিবারের তৎকালীন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য অজিত রায় ও ডা.গৌর দাসের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা করেন ‘সোমসার রামকৃষ্ণ সেবামন্দির’।[৩] ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে স্বামী ভুতেশানন্দের তিরোধান ঘটে। সীমিত সামর্থে দীর্ঘ ছাব্বিশ বৎসর সোমসারের ভক্তবৃন্দ সেবাকার্য চালিয়ে গেছেন যা বেলুড়ের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের গোচরে এসেছে। পরবর্তীতে রায় পরিবারের তিন একর জমিসহ আরো কিছু জমির হস্তান্তর হয়। শেষে বহু বছর পর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর একটি নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় যার দ্বারোঘাটন করেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহাধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ।২০২১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ নভেম্বর সোমসার রামকৃষ্ণ সেবামন্দির অধিগ্রহণ করে রামকৃষ্ণ মিশন এবং বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের সোমসার শাখা কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত হয়। [৪] বর্তমানে মিশনের নানা কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রামের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটে চলেছে। [৫][৬]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Indian Village Directory"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৮ 
  2. "পুণ্যতীর্থ সোমসার"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৮ 
  3. "Somsar Seva Mandir handed over to Ramakrishna Mission"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৯ 
  4. "রামকৃষ্ণ মিশন, সোমসার"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৬-২৯ 
  5. "বাঁকুড়ার সোমসার গ্রামে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৯ 
  6. "Ramakrishna Mission, Somsar"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৯