সোনালি মুখোপাধ্যায়

সোনালী মুখোপাধ্যায় ভারতের ধানবাদের একজন মহিলা, যিনি ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ১৮ বছর বয়সে অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন।[১][২][৩] অ্যাসিড আক্রমণের তার মুখাবয়ব পুড়ে বিকৃত হয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য তার পরিবার তাদের সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় করেছিল।

প্রথম জীবন সম্পাদনা

সোনালী মুখোপাধ্যায় ভারতের ধানবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায়। সোনালী ভারতের ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পসের একজন ক্যাডেট ছিলেন। কিন্তু অ্যাসিড আক্রমণের পর তাকে ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস ছেড়ে দিতে হয়েছিল।

অ্যাসিড আক্রমণ সম্পাদনা

২০০৩ খ্রিস্টাব্দে, ঘটনার প্রায় দেড় মাস আগে, তিন অভিযুক্ত হামলাকারী - তাপস মিত্র এবং তার দুই বন্ধু সঞ্জয় পাসোয়ান এবং ব্রহ্মদেব হাজরা তাকে বলেছিল যে সে একজন অহংকারী মানুষ। তাই তারা তাকে একটি উচিত শিক্ষা দেবে। পরে মুখোপাধ্যায়ের বাবা তিনজনের পরিবারের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর ২২ এপ্রিল, যখন সে তার বাড়ির ছাদে শুয়ে ছিল তখন অভিযুক্ত হামলাকারীরা অ্যাসিড দিয়ে তার মুখের একপাশ পুড়িয়ে দেয়। অ্যাসিড আক্রমণের পর সে তার দৃষ্টিশক্তি হারায়। এই অ্যাসিড আক্রমণে তার বোনও আক্রান্ত হয়।[৪] দীর্ঘ চার বছরের সার্জারির পর এখন সোনালী কথা বলতে ও শুনতে পারেন।[১]

ফলাফল সম্পাদনা

অ্যাসিড আক্রমণ মামলায় অভিযুক্ত অপরাধীদের নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু তারা হাইকোর্টে আবেদন করলে তাদের জামিন দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তেরা কোনরকম শাস্তি ছাড়াই জামিন পেয়ে গেল মুখোপাধ্যায়ের পরিবার একাধিক সাংসদসহ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচারের জন্য আবেদন করলে এবং আদালত ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেও তাদের কাছ থেকে শুধুমাত্র "আশ্বাস পেয়েছিলেন... আর কিছুই নয়"[৪]

সোনালীর বাবা চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায় পরে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন: "আমরা হাইকোর্টে আপিল করেছি ... কিছুই হয়নি। তাদের জেলে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন, তারা তাদের জীবন উপভোগ করতে ব্যস্ত। অ্যাসিড আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত আক্রমণকারীদের শাস্তির জন্য আইন আরও কঠোর করা দরকার। অন্যথায়, আমাদের আরও অনেক সোনালীকে দেখতে হবে"[৫]

২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ঝাড়খণ্ড সরকার সোনালী মুখোপাধ্যায়কে বোকারো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কল্যাণ বিভাগে তৃতীয় শ্রেণীর ক্লার্কের পদে নিয়োগ করে।

কৌন বনেগা ক্রোড়পতিতে উপস্থিতি সম্পাদনা

২৭ বছর বয়সে সোনালী মুখোপাধ্যায় বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যখন তিনি ইচ্ছামৃত্যুর জন্য আবেদন করেন। তিনি ২০১২ খ্রিস্টাব্দে অমিতাভ বচ্চনের কৌন বনেগা ক্রোড়পতি, সিজিন ৬-এ উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।[৬] সেখানে লারা দত্তের সঙ্গে তারা ₹২.৫ মিলিয়ন (আমেরিকান ৩৫,০০০ ডলার) জিতেছিল।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Sonali mukherjee [ Acid attack 2003 ] Biography"Matpal (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-১১-২৫। ২০২১-০৯-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৬ 
  2. "I have lost a lot: Sonali Mukherjee"The Times of India। ২০১৩-০৮-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. A beautiful life melted away in an acid attack Punjab News | Breaking News | Latest Online News ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ নভেম্বর ২০১২ তারিখে
  4. "A beautiful life melted away in an acid attack Punjab News | Breaking News | Latest Online News"। Punjabnewsline.com। ২২ এপ্রিল ২০০৩। ৮ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১২ 
  5. RanchiJuly 15, Saiful Haque; July 16, 2012UPDATED:; Ist, 2012 09:25। "Dhanbad acid attack victim gets help from unlikely source"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৬ 
  6. Ajanta Paul (১ নভেম্বর ২০১২)। "Emotional Amitabh Bachchan lauds acid attack victim on KBC"। Emirates 24/7। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১২ 
  7. Sonali Mukherjee – acid attack victim who became a TV millionaire – Hindustan Times ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে