সূর্য নারায়ণ শাস্ত্রী রামশেষ

ভারতীয় কোয়ান্টাম রসায়নবিদ (জন্ম ১৯৫০)

সূর্য নারায়ণ শাস্ত্রী রামশেষ (জন্ম ১৯৫০) একজন ভারতীয় কোয়ান্টাম রসায়নবিদ এবং ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থার বিজ্ঞান অনুষদের প্রাক্তন ডিন। তিনি আইআইএসসি-তে কঠিন বস্তু রসায়ন এবং কাঠামোগত রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন চেয়ার অধ্যাপক এবং রাসায়নিক বিজ্ঞানের অমৃত মোদী চেয়ার অধ্যাপক।[১] তিনি সংশ্লেষিত জৈব প্রণালী এবং স্বল্প-মাত্রিক কঠিন পদার্থ নিয়ে গবেষণার জন্য পরিচিত। [২] তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী, ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমী[৩] এবং দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সেস এর নির্বাচিত ফেলো।[৪] বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য ভারত সরকারের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ ১৯৯২ সালে তাঁকে শান্তি স্বরূপ ভটনাগর পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এটি একটি সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কার। রাসায়নিক বিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৫]

সূর্য নারায়ণ শাস্ত্রী রামশেষ
জন্ম (1950-01-16) ১৬ জানুয়ারি ১৯৫০ (বয়স ৭৪)
কর্ণাটক, ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তন
পরিচিতির কারণসংহত জৈব প্রণালী এবং স্বল্প-মাত্রিক কঠিন বস্তুগুলির উপর গবেষণা
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ

জীবনী সম্পাদনা

 
আইআইটি কানপুর

সূর্য নারায়ণ শাস্ত্রী রামশেষ, ১৯৫০ সালের ১৬ই জানুয়ারি দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৬৮ সালে ব্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক সহ বিএসসি এবং ১৯৭০ সালে রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। এরপর, ১৯৭৭ সালে, কানপুরের ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি পিএইচডি করেছিলেন।[১] নিজের জন্মস্থান বেঙ্গালুরুতে ফিরে এসে, তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা থেকে ডক্টরাল পরবর্তী পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি ক্রমান্বয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, লুইসিয়ানা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডক্টরাল পরবর্তী পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালে ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থায় অনুষদের সদস্য হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর পুরো শিক্ষাগত কর্মজীবন কাটিয়েছিলেন। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত কঠিন বস্তু রসায়ন এবং কাঠামোগত রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ার অধ্যাপক হিসাবে,[৬] ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত রসায়ন বিভাগে অমৃত মোদী চেয়ার অধ্যাপক হিসাবে এবং ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সালে পরিষেবা থেকে অবসর গ্রহণ করা পর্যন্ত, বিজ্ঞান অনুষদে ডিন হিসাবে তিনি কাজ করে গেছেন। এর মধ্যে, তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়, আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়, বোর্দো বিশ্ববিদ্যালয়, ইকোল নরমলে সুপারিয়ার প্যারিস-স্যাকলে, এবং মনস-হাইনট বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পরিদর্শনকারী অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেছেন।[১]

অবদান সম্পাদনা

রামেশষ যোজ্যতা বন্ধনী পদ্ধতি ব্যবহার করে সংযুক্ত জৈব প্রণালী এবং স্বল্প-মাত্রিক কঠিন বস্তুর ইলেকট্রনের কাঠামো এবং অরৈখিক বৈশিষ্ট্যগুলির বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছিলেন। [৭] তাঁর গবেষণাগুলি বহু-বস্তু মডেলের বিকাশের জন্য নতুন ব্যবস্থার উদ্ভাবন করতে সহায়তা করেছে, যেগুলি বড় অণু, স্বল্প-মাত্রিক উপাদান এবং প্রকৃত সময় (রিয়েল টাইম) গতিবিদ্যার অনুসন্ধানে সহায়তা করেছে। [৮] জওহরলাল নেহরু উন্নত বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে যখন প্রথম কম্পিউটার ল্যাবরেটরি স্থাপিত হয়েছিল, রামেশষ তার প্রতিষ্ঠাতা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবং ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থার জাতীয় বিজ্ঞান তথ্য কেন্দ্রের আহ্বায়ক হিসাবে কাজ করেছিলেন। তিনি ২৩০ টিরও বেশি সহকর্মী-পর্যালোচিত নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন[৯] এবং ২২ জন ডক্টরাল ছাত্রকে তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছেন।[১]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

১৯৭৮ সালে ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি রামশেষকে তরুণ বিজ্ঞানী পদক প্রদান করেছিল।[১০] ১৯৯০ সালে তিনি বি. এম. বিড়লা বিজ্ঞান পুরস্কার পেয়েছিলেন।[১১] ১৯৯২ সালে বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ তাঁকে শান্তি স্বরূপ ভটনাগর পুরস্কারে ভূষিত করেছিল, এটি সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কার।[১২] তিনি একজন এ. জে. সি. বোস জাতীয় ফেলো। তিনি কেমিক্যাল রিসার্চ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া থেকে রজত পদক এবং ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা থেকে গবেষণায় দক্ষতার জন্য প্রাক্তন ছাত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।[১] তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী, ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমী[৩] এবং দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সেস এর নির্বাচিত ফেলো[৪]। ২০১৮ সালে কর্ণাটক সরকার তাঁকে স্যার এম বিশ্বেশ্বরায় আজীবন কৃতিত্বের পুরস্কার দিয়েছিল।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Indian fellow"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০ 
  2. "Brief Profile of the Awardee"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. "Fellow profile"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. "TWAS fellow"। The World Academy of Sciences। ২০১৬। ২৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০ 
  5. "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  6. "SERB profile" (পিডিএফ)। Science and Engineering Research Board। ২০১৬। 
  7. "Handbook of Shanti Swarup Bhatnagar Prize Winners" (পিডিএফ)। Council of Scientific and Industrial Research। ১৯৯৯। পৃষ্ঠা 34। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  8. "Prof. S. Ramasesha - Scientist profile"। Solid State and Structural Chemistry Unit - IISc। ২০১৬। ২৮ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "Browse by Fellow"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। 
  10. "INSA Young Scientists' Medal"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ১১ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০ 
  11. "B. M. Birla Science Prize"। B. M. Birla Science Centre। ২০১৬। ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০ 
  12. "Chemical Sciences"। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৬। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা