সিটি লাইট্‌স

চার্লি চ্যাপলিন পরিচালিত ১৯৩১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন নির্বাক কমেডি চলচ্চিত্র

সিটি লাইটস (ইংরেজি: City Lights) হল ১৯৩১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন নির্বাক রোম্যান্টিক কমেডি চলচ্চিত্র। এটি রচনা, প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন চার্লি চ্যাপলিন। ছবিটি পরিবেশনা করেছে ইউনাইটেড আর্টিস্ট্‌স। এতে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন চার্লি চ্যাপলিন, ভার্জিনিয়া চেরিল এবং হ্যারি মেয়ার্স

সিটি লাইট্‌স
পরিচালকচার্লি চ্যাপলিন
প্রযোজকচার্লি চ্যাপলিন (অনুল্লেখ্য)
রচয়িতাচার্লি চ্যাপলিন
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারচার্লি চ্যাপলিন
হোসে পাদিয়া
আর্থার জনস্টন
চিত্রগ্রাহকরোলি থথেরোহ
গর্ডন পোলক
মার্ক মার্কল্যাট
সম্পাদকচার্লি চ্যাপলিন
পরিবেশকইউনাইটেড আর্টিস্ট্‌স
মুক্তি৩০ জানুয়ারি ১৯৩১
স্থিতিকাল৮৭ মিনিট
দেশযুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি (নির্বাক)
নির্মাণব্যয়$১.৫ মিলিয়ন
আয়$৫,০১৯,১৮১

চ্যাপলিন ১৯২৮ সালে এই ছবির চিত্রনাট্য রচনা করার সময় সবাক চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে শুরু করে, কিন্তু তিনি নির্বাক চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এই ছবির দৃশ্যায়ন শুরু হয় ১৯২৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এবং ১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তা শেষ হয়। সিটি লাইট্‌স চলচ্চিত্রের জন্য চ্যাপলিন প্রথম চলচ্চিত্রের সুর করেন এবং আর্থার জনস্টনের সাথে ছয় সপ্তাহ সময় ধরে তা রচনা করেন। অন্ধ ফুলওয়ালীর জন্য রচিত প্রধান শীর্ষ গান, "লা ভায়োলেতেরা", স্প্যানিশ সুরকার হোসে পাদিয়ার সুর থেকে নেওয়া। চ্যাপলিন পাদিয়াকে ক্রেডিট না দেওয়ার কারণে তার করা একটি মামলায় হেরে যান।[]

সিটি লাইট্‌স ছবিটি ১৯৩১ সালের ৩০ জানুয়ারি মুক্তির পর প্রায় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় এবং ইতিবাচক সমালোচনা লাভ করে। বর্তমান সময়ে অনেক সমালোচক মনে করেন এটি শুধু চ্যাপলিনের অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ অর্জনই নয়, বরং সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রের একটি। ১৯৯১ সালে লাইব্রেরি অব কংগ্রেস "সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক বা নান্দনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ" বিবেচনা করে ছবিটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রিতে সংরক্ষণের জন্য নির্বাচন করে। ২০০৭ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের করার সর্বকালের সেরা মার্কিন চলচ্চিত্রের তালিকায় ছবিটি ১১তম স্থান অধিকার করে। ১৯৪৯ সালে চলচ্চিত্র সমালোচক জেমস অ্যাজি এই ছবির শেষ দৃশ্যকে "সেলুলয়েডে করা সেরা একক অভিনয়" বলে উল্লেখ করেন।[]

কুশীলব

সম্পাদনা
অনুল্লেখ্য কুশীলব
  • রবার্ট প্যারিশ - খবরের কাগজ প্রদানকারী বালক
  • হেনরি বার্গম্যান - মেয়র এবং অন্ধ তরুণীর নিচ তলার প্রতিবেশী
  • আলবার্ট অস্টিন - রাস্তা ঝাড়ুদার
  • জিন হার্লো - নাইট ক্লাব দৃশ্যের নারী

নির্মাণ

সম্পাদনা

প্রাক-নির্মাণ

সম্পাদনা

চ্যাপলিনের পূর্ববর্তী চলচ্চিত্র দ্য সার্কাস ১৯২৮ সালে মুক্তি পায়। এটি ছিল নির্বাক চলচ্চিত্রের ইতিহাসের সর্বশেষ চলচ্চিত্র এবং এর পরপরই সবাক চলচ্চিত্রের যাত্রা পূর্ণ উদ্দ্যমে শুরু হয়। ইউনাইটেড আর্টিস্টসের মালিক হিসেবে তিনি নিজেই প্রযোজক ও পরিবেশক হওয়ায় তিনি সিটি লাইট্‌স ছবিটিকেও নির্বাক চলচ্চিত্র হিসেবে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। প্রযুক্তিগতভাবে চলচ্চিত্রটি কয়েকটি বিষয়ের মিশ্রণ, যেমন এর সঙ্গীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ গান, শব্দের ইফেক্ট এবং সবাক চলচ্চিত্রের মত কিছু স্পষ্ট শব্দও রয়েছে। সংলাপগুলোও পর্দায় উপস্থাপন করা হয়।[] চ্যাপলিন প্রথমে উদ্ভাবক ইউজিন অগাস্টিন লস্টের সাথে ১৯১৮ সালে সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যাপারে আলোচনা করেন।[] চ্যাপলিন "কথ্য" বিষয়টিকে উড়িয়ে দেন এবং একজন প্রতিবেদককে বলেন যে তিনি "কথ্য চলচ্চিত্রকে তিন বছর সময় দিবেন"। তিনি তার লিটল ট্রাম্প চরিত্রকে কীভাবে সবাক চলচ্চিত্রের সাথে খাপ খাওয়াবেন সেই ব্যাপারে সচেতন ছিলেন।[]

১৯২৮ সালের প্রথম দিকে চ্যাপলিন হ্যারি কারের সাথে এই ছবির গল্প রচনা শুরু করেন। দ্য সার্কাস এর সাফল্যের পর চ্যাপলিন এই গল্পের প্রাথমিক ধারণা গ্রহণ করেন, যেখানে সার্কাসের একজন সং অন্ধ হয়ে যান এবং যাকে তার যুবতী মেয়ের কাছ থেকে এই দুর্বলতা লুকানোর জন্য ভান করতে হবে।[] এই চরিত্রটি অন্ধ তরুণী চরিত্রের অনুপ্রেরণা। এই চলচ্চিত্রের প্রথম যে দৃশ্যের কথা চ্যাপলিনের মাথায় আসে তা হল সদ্য আরোগ্য অন্ধ তরুণীটি প্রথমবারের মত লিটল ট্রাম্পকে দেখবে।[] সবগুলো দৃশ্যের অনেক বিস্তারিত বর্ণনা লেখা হয় এবং চ্যাপলিন মনে করেন এটি পুরো চলচ্চিত্রের প্রাণ।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Chaplin as a composer" (ইংরেজি ভাষায়)। CharlieChaplin.com। জুলাই ৫, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. Snider, Eric D. (ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১০)। "What's the Big Deal: City Lights (1931)"সিয়াটল পোস্ট-ইন্টেলিজেন্সার (ইংরেজি ভাষায়)। The Hearst Corporation। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৭ 
  3. Kamin 2008, পৃ. 136।
  4. Robinson 1985, পৃ. 387।
  5. Robinson 1985, পৃ. 389।
  6. Robinson 1985, পৃ. 391।
  7. Robinson 1985, পৃ. 393।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা