সামুরাই
সামুরাই (ইংরেজি: Samurai) (侍) জাপানের প্রাক-শিল্পাঞ্চল যুগের সামরিক বাহিনীর সদস্য বা জাপানী যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। এর অন্য নাম বুশি। জাপানী ক্রিয়াবাচক শব্দ সাবুরাই থেকে সামুরাই শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে। এর অর্থ হচ্ছে কাউকে সেবা করা। ইদো শাসনামলে সামুরাই শব্দটির সর্বশেষ প্রয়োগ হয়েছিল। বিখ্যাত অনুবাদক উইলিয়াম স্কট উইলসনের মতে, ১০ম শতকে জাপানী কবিতার প্রাথমিক সংকলন গ্রন্থ কোকিন ওয়াকাশু (৯০৫-৯১৪)-তে প্রাচীন ও আধুনিককালের সংমিশ্রণের গড়া জাপানী কবিতায় এর প্রথম উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।[১]

অস্ত্রশস্ত্রসম্পাদনা
একজন সামুরাই অনেক ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করার অধিকারী ছিলেন। তন্মধ্যে তাদের কাছে জনপ্রিয় অস্ত্র হিসেবে রয়েছে কাতানা নামীয় লম্বাটে ধরনের তলোয়ার। ডান হাতেই তারা অস্ত্র ধারণ করে থাকে। সামুরাই দু'টি তলোয়ার নিজের কাছে রাখেন। শান্তিকালীন সময়ে কাতানা এবং ওয়াকিজাশি নামীয় ছোট ধরনের তলোয়ার বহন করেন। কিন্তু যুদ্ধের সময়ে তারা লম্বা তলোয়ার তাচি এবং ছোট তলোয়ার টান্তো রাখেন। প্রাচীন ইউরোপের নাইটদের তুলনায় তারা কম অস্ত্র বহন করেন।
বিশ্বাসবোধসম্পাদনা
সামুরাইগণ বিশ্বাস করেন যে, তলোয়ারই তার আত্মাকে ধারণ করে আছে। তাই, তলোয়ারকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হিসেবে মনে করে তারা। তাদেরকে যথোপযুক্ত সম্মান না করলে তাদেরকে যে-কারোর সাথেই যুদ্ধ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি তলোয়ারই পরীক্ষা করার জন্য তৈরী করা হয়েছে। সেজন্যে তলোয়ার ধারক যে-কোন অপরাধীকে হত্যা করার মাধ্যমে তলোয়ারের ধারালো অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। যোদ্ধার করণীয় বা বুশিদোর নীতি অনুসরণ করে সামুরাই নিজ জীবন সচল রাখেন। প্রভুর প্রতি আনুগত্যবোধ, আত্মনির্ভরশীল, নিয়মানুবর্তিতা, নৈতিক আচরণ ইত্যাদির কারণে যুদ্ধক্ষেত্রেও সম্মানিত হয়ে থাকেন। যখন সামুরাই তার প্রভু বা শিক্ষককে হারান তখন তা দাইমিও নামে আখ্যায়িত করা হয় এবং তিনি রোনিন নামে পরিচিত হন। পরাজয় বা বুশিদো নীতি মেনে না চলার কারণে সামুরাই অসম্মানিত হলে তাকে অবশ্যই সেপ্পুকু নামের আনুষ্ঠানিক আত্মহত্যা করতে হয়। তাদের কাছে অসম্মানের চেয়ে মৃত্যুই অধিকতর শ্রেয়। যুদ্ধক্ষেত্রে সেপ্পুকু নামের আনুষ্ঠানিক আত্মহত্যায় শত্রুর হাতে ধৃত হবার পূর্বে তারা তাদের পেট কেটে ফেলেন।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Wilson, p. 17