সামিরি (ইসলামি ব্যক্তিত্ব)

সামিরি, যাকে সমরীয় (আরবি: الْسَّامِريّ) নামেও ডাকা হয়, কুরআন শরীফে ব্যবহৃত একটি নাম। এটি মূসা (আঃ)-এর একজন বিদ্রোহী অনুসারীকে বোঝায়, যে সোনার বাছুর তৈরি করেছিল এবং ইহুদিদেরকে মূর্তিপূজার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কুরআনের বিংশ অধ্যায় অনুসারে, মূসা (আঃ) যখন সিনাই পর্বতে আল্লাহর কাছ থেকে দশ আদেশ গ্রহণ করতে চল্লিশ দিনের জন্য অনুপস্থিত ছিলেন, তখন সামিরি এই বাছুরটি তৈরি করে।[১]  হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত ঘটনার বিপরীতে, কুরআন এই বাছুর তৈরির জন্য হারুন (আঃ)-কে দোষারোপ করে না।

ইসলামী ঐতিহ্যে সম্পাদনা

কুরআনে সামিরির বাছুর "হাম্বা" শব্দ করার বর্ণনাকে কেন্দ্র করে অনেক জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। বেশ কয়েকটি ইসলামী ঐতিহ্য বলে যে বাছুরটি তৈরি হয়েছিল ফেরেশতা জিব্রিলের ঘোড়ার পায়ের নিচে পড়া ধুলা দিয়ে; যার রহস্যময় বৈশিষ্ট্য ছিল। কিছু রেওয়ায়েতে বলা হয় যে, বাছুরটি নড়াচড়াও করতে পারতো, "জীবনের ঘোড়ার" ধুলোর কারণে তাকে এই গুণ দেওয়া হয়েছিল। অন্য কিছু ঐতিহ্যে বলা হয়েছে যে সামিরি নিজেই এই শব্দটি করেছিল, অথবা এটি কেবল বাতাসের কারণে হয়েছিল। আবার অন্য মতে, ইহুদীদের পরীক্ষা করার জন্য স্বয়ং আল্লাহ বাছুরটি তৈরি করেছিলেন।[২]

পরবর্তী ঐতিহ্যগুলো বাছুরটির উপাসনা করতো এমন লোকদের পরিণতি নিয়ে আলোচনা করে। আল-তাবারি রচিত গ্রন্থে  একটি কাহিনী রয়েছে যেখানে মূসা (আঃ) তার লোকদের সেই পানি পান করতে আদেশ করেন যেখানে বাছুরটিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল; উপাসনার দায়ে অপরাধীরা সোনালী বর্ণ ধারণ করে চিহ্নিত হয়ে যায়।[৩]

সামিরির শাস্তিকে বেশিরভাগ পণ্ডিত সম্পূর্ণ সামাজিক বিচ্ছিন্নতা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. The Qur'an, Surah Ta Ha, Ayah 85
  2. Albayrak, I. (2002). Isra’iliyyat and Classical Exegetes’ Comments on the Calf with a Hollow Sound Q.20: 83-98/ 7: 147-155 with Special Reference to Ibn ’Atiyya. Journal of Semitic Studies, 47(1), 39–65. doi:10.1093/jss/47.1.39
  3. al-Tabari, Abu Jafar (১৯৯১)। The History of al-Tabari, Volume III: The Children of Israel। Brinner, William M. কর্তৃক অনূদিত। পৃষ্ঠা 74। 
  4. Albayrak, I. (2002). Isra’iliyyat and Classical Exegetes’ Comments on the Calf with a Hollow Sound Q.20: 83-98/ 7: 147-155 with Special Reference to Ibn ’Atiyya. Journal of Semitic Studies, 47(1), 39–65. doi:10.1093/jss/47.1.39