সাইকি
সাইকি রোমান পুরাণের কাম দেবতা কিউপিডের পত্নী। বিখ্যাত রোমান সাহিত্যিক ও দার্শনিক আপুলিয়াস তাঁর মেটামরফিস বা গোল্ডেন অ্যাস গ্রন্থে কিউপিড ও সাইকির প্রণয় ও পরিণয় নিয়ে এক উজ্জ্বল উপাখ্যান সৃষ্টি করেছেন।
রাজকুমারী সাইকি ছিলেন তিন বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠা। সাইকির বড় দুই বোনের যথাসময়ে বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু কনিষ্ঠা সাইকির রুপ সৌন্দর্য দিনে দিনে এমন অপূর্ব ও মোহময় হয়ে ওঠে যে সবাই তাকে মর্ত্যের সাধারণ মানবী হিসাবে ভাবতে সাহস হারিয়ে ফেলে। বিমুগ্ধ প্রেম নিবেদন না করে যুবকদল সন্মানিত ব্যবধান রেখে সাইকিকে শ্রর্দ্ধা করতে শুরু করে। চারিদিকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, প্রণয়দেবী ভেনাস সাইকির ছদ্মবেশে মর্ত্যলোকে আগমন করেছেন। যার ফলে অল্পদিনেই ভেনাসের মন্দির জনশূন্য হয়ে যায়। সবার নজর তখন সাইকি দিকে।
কথাটা স্বর্গলোকে পৌছালে দেবী ভেনাস প্রথমে আমল না দিলেও তাঁর গম্ভীর হতে বেশি সময় লাগেনি। সরজমিনে সাইকিকে দেখতে তিনি মর্ত্যে নেমে আসেন। কিন্তু সাইকিকে দেখে তারঁও মাথা ঘুরে গেল। প্রচন্ড ঈর্ষা ও ক্রোধ নিয়ে তিনি স্বর্গে ফিরে আসেন। সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি পুত্র কিউপিডকে আহবান করেন। কিউপিডকে তিনি নির্দেশ দেন যে সাইকির উপর এমন কামশর নিক্ষেপ করতে, যেন সাইকি পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিত ও হতদরিদ্র ব্যক্তির উপর আসক্ত হয়। আর সেই প্রেমাসক্তি যেন সাইকির জীবনে নিয়ে আসে সীমাহীন দারিদ্র ও প্রচন্ড অপমান। কথাগুলো কিউপিডের সামনে বলে সাইকি স্বর্গের সবচেয়ে নির্জন স্থানে তিনি আশ্রয় নেন।
কিন্তু ঘটনা ঘটল অন্যরকম। সাইকিকে দেখে দেখামাত্রই কিউপিড স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। মর্ত্যমানবীর রূপের ছটায় নিস্পন্দ কামদেবতা নিজের উপরই কামশর নিক্ষেপ করে বসলেন। মায়ের শত্রুর উপর অসহনীয় প্রেমের কারণে তিনি খুব বিব্রত হয়ে পড়লেন। বহু চিন্তা করে কিউপিড অ্যাপোলোর শরণাপন্ন হলেন। অ্যাপোলোও কম লাঞ্ছিত হননি কিঊপিডের শরে। তবু তিনি কিউপিডকে অভয় দিলেন।
অ্যাপোলো দৈববাণীরও দেবতা। তাই তিনি দৈববাণীর আশ্রয় নিলেন। সাইকির পিতাকে নির্দেশ দিলেন, সাইকিকে বধূবেশে সজ্জিত করে নিশিথের অন্ধকারে রেখে আসতে হবে নির্জন পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায়। সেখানে সাইকি অপেক্ষা করবে এমন এক বরের জন্য যার ভয়ে মানুষতো তুচ্ছ, দেবতারা পর্যন্ত ভীত, বিচলিত।
দৈববাণী উপেক্ষা করার সাহস হলনা সাইকি বাবার। দেবতারা যাকে ভয় করেন সেই পুরুষকে জামাতা হিসাবে ভাবতে তিনিও আতঙ্কিত বোধ করলেন। কিন্তু সাইকিকে রেখে আসতেই হলো। আসার পথে সাইকির পিতা কন্যাকে চিরকালের মত বিসর্জন দেয়ার বেদনা অনুভব করতে লাগলেন।
কিউপিড প্রস্তুত ছিলেন। পৃথিবীর নির্জনতম স্থানে দৈববলে তিনি বধূবরণের জন্য অট্টালিকা তৈরি করে রেখেছিলেন। বায়ুদেবতা জেফাইরাস নির্জন পর্বতচূড়া থেকে আতঙ্কিত সাইকিকে নিমেষে অচেতন করে তুলে নিলেন বায়ুরথে। বায়ুদেবতার বায়ুরথ গিয়ে থামলো কিউপিডের নবনির্মিত প্রাসাদের সামনে। কিউপিড সাইকিকে তুলে নিয়ে প্রাসাদের অভ্যন্তরে কুসুমরচিত বাসর শয্যায় শুইয়ে দিলেন। অল্পক্ষণ পর চেতনা ফিরে এলো সাইকির। সাইকি অনুভব করলো, প্রবল পুরুষের বন্ধনে সে আবদ্ধ। কিন্তু দৈববাণীর ভয়ংকর বন্ধনের মতো নয়। অত্যন্ত তীব্র কিন্তু বড় মধুর বন্ধন। আবেশে চোখ বন্ধ করলো সাইকি।
ঊষাদেবীর রথ যখন পৃথিবীতে নেমে এসেছে তখন ঘুম ভাঙলো সাইকির। তাকিয়ে দেখলো পাশে কেউ নেই। চোখ বন্ধ করে অনেক্ষণ অপেক্ষার পর শয্যা থেকে উঠে আসলো সাইকি। ঘরের দিকে লক্ষ্য করেই সাইকি দেখলো রাজবাড়ির ঘর নয় এটা। কারণ পুরো প্রাসাদ সোনার তৈরি। পৃথিবীর কোন রাজার পক্ষে এমন ঘর তৈরি করা সম্ভব নয়। হতভম্ভ সাইকি বোঝার চেষ্টা করলো সে নিজেই বেঁচে আছে কিনা। সঙ্গে সঙ্গে শুনতে পেলো কাদের যেন কন্ঠস্বর। একজন বললো, "এই সুরম্য প্রাসাদ, এই অট্টালিকা, ধনরত্ন সবই তোমার সাইকি। আমরা তোমার দাসদাসী। তুমি শুধুই আদেশ করবে।" কিন্তু কাউকে দেখতে পেলোনা সাইকি। কিন্তু বুঝতে পারলো তার পাশে অদৃশ্য পদচারণা। সাহসে ভর করে আদেশ করলো সে। সঙ্গে সঙ্গে সব তৈরি। সোনার টবে স্ফটিকস্বচ্ছ জল। রুপার টেবিলের উপর সোনার পাত্রে উপাদেয় আহার্য। সঙ্গে সুমধুর গীতবাদ্য।
আবার রাত্রি এলো। মধ্যযাম ঘনিয়ে আস্তেই আলোকির সুবর্ণ প্রাসাদ অকস্মাৎ অন্ধকারে ডুবে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভীতির সঞ্চার হলো সাইকির মনে। কিন্তু পরক্ষণের অনুভব করলো প্রবল পুরুষের বন্ধনে আবদ্ধ সে। এ তার গতরাতের চেনা আলিঙ্গন। অদৃশ্য পুরুষটি তাকে কানে কানে বললো " হে আমার প্রিয়তমা, তুমি আমার নাম জানতে চেয়ো না। আমাকে দেখার চেষ্টা করোনা। তাহলেই সুখে কাটবে আমাদের জীবন। আমি এই ভাবেই অন্ধকারে আসবো তোমার কাছে।" বিহবল সাইকি সায় দিলো তাতে। এভাবেই চলতে থাকলো প্রতি রাতে তার স্বামীর সমাগম।
এক রাতে স্বামীর কাছে অনুযোগ জানালো সাইকি, দিনের পর দিন একা থাকতে তার আর ভালো লাগছেনা, তার দুইবোনকে যদি কিছুদিনের জন্য আনা যেতো তাহ্লে খুব ভালো হতো। সঙ্গে সঙ্গে বাধা দিলেন কিউপিড। বললেন "এতে তোমারই ক্ষতি হবে সাইকি। তোমার বোনরা ঈর্ষাকাতর হয়ে আমাদের বিচ্ছিন্ন করে দিবে"। তবু বাধা মানলো না সাইকি। বাধ্য হয়ে কিউপিড জেফাইরাসকে সাইকির বোনদের নিয়ে আসতে বললেন। কিন্তু সাইকিকে বারবার তাদের দাম্পত্য জীবনের কথা বোনদের না জানানোর অনুরোধ করলেন।
পরদিন জেফাইরাসের রথে চড়ে সাইকির দুইবোন এলো প্রাসাদে। প্রাসাদের অমিত সৌন্দর্য দেখে তাদের বাকশক্তি যেনো হারিয়ে গেলো।
অদম্য ঈর্ষা ও কৌতূহল নিয়ে তারা জিজ্ঞেস করলো তার স্বামী কে, কি তার নাম, তার স্বামী একাই এই প্রাসাদের মালিক কিনা ইত্যাদি হাজারো প্রশ্ন। কিন্তু কৌশলে সব প্রশ্ন এড়িয়ে গেলো সাইকি। দিন শেষে প্রচুর ধনরত্ন দিয়ে সে তার বোনদের বিদায় করলো।
পরদিন আবার এলো তার বোনরা। এসেই বললো সাইকির স্বামীকে না দেখে তারা যাবেনা। বোনদের প্রচন্ড চাপে সাইকি এক পর্যায়ে বলে ফেললো, সে আজ পর্যন্ত তার স্বামীকে দেখেনি। প্রতি রাতেই অন্ধকারে তাদের মিলন হয়। বোনরা পেইয়ে বসলো সাইকিকে। দৈববাণীর কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলল যাকে "দেবতারা পর্যন্ত ভয় পায় সে কদাকার হিংস্র দানব না হয়েই যায় না। আর এই জন্যই তুমি যদি তাকে ঘৃণা করো তাই সে ভয়ে তোমার কাছে নিজের মুখ লুকিয়ে রাখে।" সাইকি বোনদের কথায় খুব দুর্বল হয়ে পড়লো। বোনরা তখন তাকে বললো " তুমি গোপনে একটা ছুরি রাখবে তোমার কাছে। একটা নেভানো প্রদীপও থাকবে তোমার ঘরে। তোমার স্বামী যখন ঘুমিয়ে পড়বে তখন প্রদীপ জ্বালিয়ে তার মুখটা দেখে নেবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ছুরিটি বসিয়ে দেবে তার বুকে। আর সেটাই হবে তোমার ভয়ংকর স্বামীর যোগ্য পুরস্কার।" বোনদের কথায় সায় দিলো সাইকি। প্রচন্ড ঘৃণায় ভরে গেলো তার সারা দেহমন।
রাত্রি আসার পরেই সাইকি প্রস্তুত হলো। কোনমতে কাটিয়ে দিলো স্বামীর সোহাগের তীব্র মুহূর্ত গুলো। তারপর কিউপিড ঘুমিয়ে পড়তেই সাইকি উঠে পড়লো। বাতি জ্বালিয়ে ছুরি হাতে সে ঝুঁকে পড়লো স্বামীর উপর। মুহূর্তেই হতচকিত হয়ে গেলো সাইকি। আপন সৌভাগ্যে বিহবল সাইকি খুশীতে চিৎকার করে উঠলো। স্বামী যে তার কামদেবতা কিউপিড! তীব্র আনন্দে স্বামীকে চুম্বনে ভরিয়ে দিতে ইচ্ছা করলো তার। কিন্তু চুম্বন করার জন্য নিচু হতেই হাতের জলন্ত প্রদীপ থেকে কয়েক ফোঁটা তেল গড়িয়ে পড়লো নগ্ন কিউপিডের পায়ে। সঙ্গে সঙ্গে অস্ফুট চিৎকার করে ঘুম থেকে জেগে উঠে পড়লেন কিউপিড। সাইকিকে ঐ অবস্থায় দেখে সব কিছু বুঝতে পারলেন তিনি। বেদনার্ত কন্ঠে সাইকিকে বললেন "হায় মর্ত্যনারী, প্যান্ডোরার বংশধর তুমি। তুমি আমার নিষেধ সত্ত্বেও সাধারণ ঔৎসুক্য দমন করতে পারলেনা। আমাদের প্রেমের যে এখানেই সমাধি হয়ে গেলো।" আর্তনাদ করে সাইকি কিউপিডের পায়ের উপর পড়লো। সাইকিকে শেষ বিদায় জানিয়ে ধনুঃশর নিয়ে কিউপিড আকাশে উড়ে চলে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে সুবর্ণ প্রাসাদ অদৃশ্য হয়ে গেলো। বুকভরা নিঃসীম রিক্ততা নিয়ে সাইকি একা দাঁড়িয়ে রইলো। তার কাছে স্মৃতি ছাড়া আর কোন আশ্বাস থাকলোনা। সাইকি প্রতিজ্ঞা করলো কিউপিডকে সে খুঁজে বের করবেই। কিন্তু নিয়তিও তার পিছু নিলো।
এতোদিন ভেনাস কিছুই জানতেন না। ভেবেছিলেন কিউপিড সাইকিকে যথার্থ শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু একাকিনী সাইকিকে ঘুরতে দেখে তার মনে পুরানো ঈর্ষা আবার জাগ্রত হলো। ভাবলেন সাইকি তার রুপের অহংকারের উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখা দরকার। সবকিছুর খোঁজ নিয়ে তিনি যা জানতে পারলেন তাতে তাঁর মাথা খারাপ হয়ে গেল। সাইকিকে তিনি বন্দী করার আদেশ দিলেন।
সাইকিকে হাতের মুঠায় পেয়ে কি করা যায় তা ভাবতে লাগলেন ভেনাস। পুত্রবধূ হবার কারণে সাইকিকে নিজ হাতে হত্যা করার কথা তিনি ভাবতে পারলেননা। তাই কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সাইকিকে দুরূহ কিছু কাজের ভার দেন। তাকে বলেন যে কাজগুলো শেষ করতে পারলে সাইকি কিউপিডকে ফিরে পাবে।
বিভিন্ন দেবতাদের সহায়তায় সাইকি একের পর এক কাজ সম্পন্ন করেতে দেখে ভেনাস তার উপর আরও রেগে গেলেন। সবশেষে তার উপর এক দুঃসাধ্য কাজের ভার দিলেন। পাতালরানী পার্সিফোন তাঁর রূপের খানিকটা অংশ বাক্সে ভরে রাখতেন এবং প্রসাধনীর মতো তা মাঝে মাঝে ব্যবহার করতেন। ভেনাস সাইকিকে সেই বাক্স চুরি করে নিয়ে আসতে বললেন।
সাইকিকে পাতালপুরীর পথে রওনা হতে দেখে কিউপিড তার পিছু নিলেন। কিউপিড জানতেন এবার সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখোমুখি হতে চলছে সাইকি। পাতালপুরীর মুখে সাইকি ঢুকার পর কিউপিড বলে দিলেন কীভাবে বাক্সটি উদ্ধার করা যায়। বাক্স উদ্ধার করে সাইকি ভাবলো ভেনাস যদি তাঁর কথা রাখে তাহলে সে তার স্বামীকে পেতে যাচ্ছে। তাই রূপ বাড়ানোর সে প্রসাধনের বাক্স খুলে ফেলল। কিন্তু বাক্স খোলার সাথে সাথেই কালো ধোঁয়া এসে ঢেকে দিলো সাইকিকে। সে অচেতন হয়ে গেলো।
ঘটনাটা বুঝতে পারলেন কিউপিড। তিনি সাইকিকে তুলে নিয়ে সরাসরি উপস্থিত হলেন দেবতা জুপিটারের কাছে। জুপিটারের কাছে তিনি মর্ত্যের এই নারীকে বিবাহ করার আবেদন জানালেন। জুপিটার তাঁকে বললেন " তুমি আমাদের যতটা লাঞ্ছনা দিয়েছো তার চেয়ে বেশি তুমি এবার লাঞ্ছিত হয়েছ। তোমার প্রার্থনা নিশ্চই মঞ্জুর করা হবে।" দেবরাজ জুপিটার এবার দেবসভা আহবান করলেন। তিনি সকলের সন্মুখে ভেনাসকে অনুরোধ করলেন সাইকিকে ক্ষমা করে দেবার জন্য। ভেনাস সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারলেননা। সাইকিকে দেকে তিনি আশীর্বাদ করলেন। দেবরাজ জুপিটারের নির্দেশে সাইকিকে অমৃত পান করানো হলো। ভেনাস সেই সভার মধ্যেই কিউপিড ও সাইকির বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। অবশেষে বহু দুঃখ কষ্টের পর সাইকি প্রেম ও কামদেবতা কিউপিডের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Tales Similar to Beauty and the Beastlie (Texts of Cupid and Psyche and similar monster or beast as bridegroom tales, mostly of AT-425C form, with hyperlinked commentary).
- Mary Tighe, Psyche or, the Legend of Love (1820) HTML or PDF
- Voluptas
- Ode to Voluptas (Information about Voluptas, Daughter of Cupid & Psyche)
- Walter Pater, Marius the Epicurean, chapter 5 (1885)
- Josephine Preston Peabody, Old Greek Folk Stories Told Anew (1897)
- The Baldwin Project: The Enchanted Palace and The Trial of Psyche
- Rick Walton's Online Library: Cupid and Psyche
- Blackmask: Cupid and Psyche
- Thomas Bulfinch, The Age of Fable (1913)
- D. L Ashliman: Folktexts: Cupid and Psyche
- Hermetic Philosophy: Cupid and Psyche (Illustrated with painting and sculpture.)
- Andrew Staniland
- Art
- Art Renewal Center: "Cupid & Psyche" by Sharrell E. Gibson (Examples and discussion of Cupid and Psyche in painting.)
- Material on the Musical by Sean Hartley and Jihwan Kim (2000)
- Holly Woodward, Archipelago: Volume 4, Number 4
- Eros & Psyche (A short story based on the myth.)