সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শান

সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শান (তিব্বতি: སངས་རྒྱས་རྒྱལ་མཚནওয়াইলি: sangs rgyas rgyal mtshan) (?- ১৪৫৭) তিব্বতের ফাগ-মো-গ্রু-পা রাজবংশের একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজপুরুষ ছিলেন এবং এই রাজবংশের পতনের জন্য অন্যতম দায়ী হিসেবে বিবেচিত হন।

পরিবার সম্পাদনা

সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শান ফাগ-মো-গ্রু-পা রাজবংশের ষষ্ঠ রাজা গোং-মা-গ্রাগ্স-পা-র্গ্যাল-ম্ত্শানের ভ্রাতা ছিলেন। তিনি রিং-স্পুংস-পা নামক গ্ত্সাং অঞ্চলের রিং-স্পুংস এলাকার এক আঞ্চলিক জমিদার পরিবারের দুইজন মহিলাকে বিবাহ করেন এবং তাদের গ্রাগ্স-পা-'ব্যুং-গ্নাস এবং কুন-দ্গা'-লেগ্স-পা নামক দুই পুত্রের জন্ম হয়।

গৃহযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

গোং-মা-গ্রাগ্স-পা-র্গ্যাল-ম্ত্শানের মৃত্যুর পর যখন মন্ত্রীরা পরবর্তী উত্তরাধিকারী মনোয়নের জন্য ঐকমত্য্যে পৌঁছতে পারছিলেন না, রিং-স্পুংস-পা পরিবারের প্রধান নোর-বু-ব্জাং-পো এই সুযোগে ফাগ-মো-গ্রু-পা রাজবংশের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে গ্দান-সা-থেল বৌদ্ধবিহারের প্রধানকে সিংহাসনের উত্তরাধিকার নির্বাচনের উপদেশ দেন। প্রধান লামা গ্রাগ্স-পা-'ব্যুং-গ্নাসকে নির্বাচন করেন। যদিও সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শানের সিংহাসনের প্রতি নজর ছিল, কিন্তু তিনি প্রধান লামার নির্বাচন মেনে নেন।[১] কিন্তু দুই বছর পরে ১৪৩৪ খ্রিষ্টাব্দে গ্দান-সা-থেল বৌদ্ধবিহারের প্রধানের মৃত্যু ঘটলে সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শান সিংহাসনের দাবী জানাতে শুরু করেন। এরফলে এক বছর ব্যাপী এক গৃহযুদ্ধের সূচনা হয় তাকে পালিয়ে যেতে হয় এবং নোর-বু-ব্জাং-পো বিজয়ী হিসেবে উঠে আসেন।[১] এবং ১৪৩৫ খ্রিষ্টাব্দে সাম-দ্রুব-ত্সে নামক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অধিকার করেন। এরফলে রিং-স্পুংস-পা গ্ত্সাং অঞ্চলটি নিজেদের অধিকারে নিয়ে এসে মধ্য তিব্বতের নতুন রাজবংশরূপে উঠে আসে।[২]

চীনা বিবৃতি সম্পাদনা

তিব্বতী বর্ণনানুসারে, ১৪৫৭ খ্রিষ্টাব্দে সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শানের মৃত্যু হয়। কিন্তু মিংশি গ্রন্থে সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শানের গৃহযুদ্ধ পরবর্তী জীবন সম্বন্ধে ভিন্ন ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। এই গ্রন্থানুসারে, গ্রাগ্স-পা-'ব্যুং-গ্নাসের মৃত্যুর পর তার পিতা সাঙ্গেরজিয়ে জিয়ানজান বা চাংবু (সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যাল-ম্ত্শান) ১৪৬৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার মৃত্যুর পর মিং সম্রাটের আদেশে সাঙ্গেরজিয়ে জিয়ানজান বা চাংবুর পুত্র গোংগে লিয়েসিবা ঝোংনাই লিংঝান বের চাংবু (কুন-দ্গা'-লেগ্স-পা) সিংহাসনে আরোহণ করেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ariane Macdonald, 'Préambule à la lecture d'un Rgya-Bod yig-chan'. Journal asiatique 1963, pp. 104-5.
  2. Tsepon W.D. Shakabpa, Tibet. A Political History. Yale 1967, pp. 86-7.
  3. Giuseppe Tucci, Tibetan Painted Scrolls. Rome 1949, p. 693.