সহর গুল (জন্ম আনু.১৯৯৮) একজন আফগান কিশোরী, যাকে পুলি ই খুমরি শহরে স্বামীর পরিবার দ্বারা নির্যাতন ও অপব্যবহার করা হয়েছিল, যখন অবৈধভাবে বালিকা বধূ হিসেবে তার বিবাহ হয়েছিল। যখন তাকে ২০১১ সালের শেষের দিকে উদ্ধার করা হয় তখন তার ঘটনাটি আফগানিস্তানে ও আন্তর্জাতিকভাবে উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে।[] দ্য গার্ডিয়ান বলেছে যে গুলের ঘটনাটি "আফগানিস্তানকে আতঙ্কিত করেছে ও দেশের আত্মা-অনুসন্ধানের একটি প্ররোচনা প্রদান করেছে"।[] তার শ্বশুরবাড়ির তিনজন সদস্যকে হত্যার চেষ্টার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের মুক্তি দেয়।[] আমেরিকান অ্যাটর্নি কিম্বারলে মোটলে শ্বশুরবাড়ির মুক্তির কথা শুনে সুপ্রিম কোর্টে গুলের প্রতিনিধিত্ব করেন।[] গুল এমন একটি অপরাধের প্রথম ভুক্তভোগী ছিলেন, যেটি ফৌজদারি কার্যবিধির জন্য একজন অ্যাটর্নি কর্তৃক প্রতিনিধিত্ব করা হয়েছিল। একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্ট ও আপিল আদালত কর্তৃক এই মামলার দুইবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, গুলের শ্বশুর, ভাই ও স্বামী যাদের আগে কখনো বিচার করা হয়নি তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আদালত আরও সম্মত হয় যে গুল সব পক্ষের বিরুদ্ধে নাগরিক ক্ষতিপূরণের জন্য মামলা করতে পারে। গুল মহিলাদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং বলেন যে তার রাজনীতিবিদ হওয়া ও অন্যান্য মহিলাদের ভোগান্তি নির্মূল করার জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে।[]

জীবনের প্রথমার্ধ

সম্পাদনা

গুল উত্তর আফগানিস্তানের একটি পাহাড়ি প্রদেশ বাদাখশানে বেড়ে ওঠে।[] তার বাবার মৃত্যুর পর সে আত্মীয়দের কাছে চলে যায় এবং অবশেষে তার সৎ ভাইয়ের সাথে থাকতে শুরু করে, যখন তার বয়স ৯ বছর ছিল।[] গুল গরু ও ভেড়া পালন করত এবং আখরোট ও এপ্রিকট গাছের বাগানে কাজ করত, এবং জ্বালানির জন্য গোবর ইটও তৈরি করত। সৎ ভাইয়ের বাড়িতে গুলের উপস্থিতিতে স্পষ্টতই সৎ ভাইয়ের স্ত্রী অসন্তুষ্ট ছিল, যিনি গুলকে বিবাহ করিয়ে দিতে স্বামীর চাপ দিয়েছিলেন, যদিও সেই সময়ে গুলের ১৬ বছর বয়সী ছিল, যা তার বৈধ বিবাহের বয়সের থেকে ২ বছর কম ছিল। সৎ ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে ৩০ বছর বয়সী ব্যক্তি গোলাম সখীর যোগাযোগ হয়, যিনি অবৈধভাবে গুলকে বিবাহ করার জন্য কমপক্ষে ৫ হাজার ডলার দিয়েছিলেন। [] গুল তার বিয়ের সময় নিরক্ষর ছিলেন।[]

বিয়ে ও অপব্যবহার

সম্পাদনা

সখী উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বাঘলানে তার পিতা-মাতার বাড়িতে গুলকে নিয়ে যায়। আফগানিস্তানের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দাবি করেন, সখীর পরিবার গুলকে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে যুক্ত করতে চেয়েছিল।[] সন্তান না নেওয়ার জন্য প্রথম স্ত্রীকে সখী ও তার মা মারধর করার পর প্রথম স্ত্রী সখীকে ছেড়ে চলে যায়।[] গুল কয়েক সপ্তাহ ধরে তার বিবাহে বাধা দেয়। []

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Afghan child bride had escaped torturers but was sent back"The Guardian। ২ জানুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৩ 
  2. "Afghan judges free three jailed for torture of child bride Sahar Gul"The Guardian। ১১ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৩ 
  3. "Afghan Court Reverses Convictions in Torture of Girl"The New York Times। ৪ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৩ 
  4. "Sahar Gul: The fears of a tortured Afghan child bride"BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-০৭-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০৮ 
  5. "Wed and Tortured at 13, Afghan Girl Finds Rare Justice"The New York Times। ১১ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৩