সম্প্রদান কারক
সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী, যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে। একে নিমিত্ত কারক-ও বলা হয়। এখানে লক্ষণীয় যে, বস্তু নয়, ব্যক্তিই সম্প্রদান কারক।[১] পূর্বে আলাদা হলেও বর্তমানে বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অংশ হিসাবে ধরা হয়।[২] সম্প্রদান কারকের ব্যবহার কর্ম কারকের অনুরূপ
অনেক ব্যাকরণবিদ বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারক স্বীকার করেন না। কারণ, কর্ম কারক দ্বারাই সম্প্রদান কারকের কাজ সুন্দরভাবে সম্পাদন করা যায়। সম্প্রদান কারক ও কর্ম কারকের বিভক্তি চিহ্ন এক। কেবল স্বত্বত্যাগ করে দানের ক্ষেত্রে সম্প্রদান কারক হয়।[১] তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হয় না। এই বিভ্রান্তি এড়াতে বর্তমানে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[৩][২]
সম্প্রদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার
প্রথমা বা ০ বিভক্তি
গুরু দক্ষিণা দাও। দিব তোমা শ্রদ্ধা ভক্তি। ভিক্ষা দাও দেখিলে ভিক্ষুক।
চতুর্থী বা কে বিভক্তি
দরিদ্রকে দান করো। ভিখারিকে ভিক্ষা দাও। দরিদ্রকে ধন দাও। (স্বত্বত্যাগ করে না দিলে কর্ম কারক হবে। যেমন- ধোপাকে কাপড় দাও)।
ষষ্ঠী বা র বিভক্তি
ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দাও। দেশের জন্য প্রাণ দাও। ক্ষুধার্তদের খাদ্য দাও।
সপ্তমী বা এ বিভক্তি
সৎপাত্রে কন্যা দাও। সমিতিতে চাঁদা দাও। 'অন্ধজনে দেহ আলো।' দীনে দয়া করো। অন্নহীনে অন্ন দাও। সর্বভূতে দান করো। গৃহহীনে গৃহ দাও। জীবে দয়া করে সাধুজন। বস্ত্রহীনে বস্ত্র দাও।
জ্ঞাতব্য
নিমিত্তার্থে 'কে' বিভক্তি যুক্ত হলে সেখানে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- 'বেলা যে পড়ে এল, জলকে চল।' (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।
তিনি হজে গেছেন। (নিমিত্তার্থে সপ্তমী বিভক্তি)
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি, শিক্ষাবর্ষ ২০১৬, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ↑ ক খ বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি, ২০২১ শিক্ষাবর্ষ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ
- ↑ বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি, সপ্তম শ্রেণি, শিক্ষাবর্ষ ২০১৬, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ।